কোন মাল আমদানি করার পর শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা তা পরীক্ষা সেই মালের দাম নির্ধারণ করেন। সেই দামটা সাধারণত আমদানিকারকের ঘোষিত দামের কাছাকাছি হয়। যদি বেশি ফারাক হয়, তবে আমদানিকারক যে দেশ থেকে মালটা আমদানি করেছেন, সেই দেশের বাজার যাচাই করে মূল্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করতে পারেন। আমদানিকারকের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুল্ক কর্মকর্তা সেই দেশের বাজার যাচাই শেষে চূড়ান্তভাবে মূল্য নির্ধারণ করেন। সেই ক্ষেত্রে আমদানিকারকের দামের সাথে শুল্ক কর্মকর্তার দাম প্রায় ক্ষেত্রেই মিলে যায়।
কিন্তু শুল্ক কর্মকর্তা অসৎ হলে আমদানিকৃত মালামালের দাম অনেক বেশি ধরেন এবং আমদানিকারকের বিরুদ্ধে আন্ডার ইনভোয়েজিং এর অভিযোগ আনেন। ফলে আমদানিকারককে দুটি পথে সেটা সমাধান করতে হয়।
প্রথমত আমদানিকারক ঘুষের টাকা নিয়ে বেশ কষেকটি টেবিল ঘুরে এলেই তার মাল খালাস হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত তার মালের দাম বেশি নির্ধারণ করলেও তা কমাতে পারে না এবং বাধ্য হয়েই চড়া হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হয়।
সেই সিএন্ডএফ এজেন্টের ভাষায়, এই দ্বিতীয় অবস্থাটি এখন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে।
ফলে আমদানিকারকরা অধিক শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য হওয়ায় আমদানিকৃত মালামাল খালাসের পরই তার দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হন আমদানিকারকরা। আর এই বাড়তি খরচের টাকাটা ব্যয় করতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের। এই কারণটি বর্তমানে দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
কিন্তু কেন শুল্ক কর্মকর্তারা এরকম অধিক মূল্য নির্ধারণ করছেন, তা জানতে চাইলে সিএন্ড এফ এজেন্ট জানান, বর্তমান সরকার ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শুল্ক কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে যেন সরকার তদন্ত করতে না চায়, সে জন্যই সরকারী কোষাগার ভরে সরকারকে খুশি করতে চায় শুল্ক কর্মকর্তারা। সরকারকে খুশি করতে গিয়ে অধিক শুল্ক আদায়ের জন্য আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বেশি দেখাচ্ছে। তাতে করে সরকারী কোষাগার ভরলেও সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে।