কিউ স্যাং একজন কোরিয়ান কবি। কিউ স্যাংয়ের কবিতা জীবনে কথা বলে, সাবলীল সত্যের কথা বলে। তার পোয়েটিক জগৎটা সহজ জলের নম্রতা নিয়ে প্রবাহিত হয়। তাঁর জন্ম দক্ষিণ কোরিয়ায়, ১৯১৯ সালে, মৃত্যু ২০০৪ সালে। ফরাসি, ইংলিশ, জার্মান ও জাপানিজ ভাষায় তার কবিতা অনুদিত হয়েছে এর আগে।
সেইন্ট ক্রিস্টোফার নদী: প্রথম অংশ
কিউ স্যাং
কুয়াশা
গম্ভীরভাবে বসে আছে
ভোর ফুটে থাকা নদীর পাড়ে।
ধ্বংসের মধ্যে দাঁড় টানছে
খেয়া বয়ে চলছে
কুয়াশার স্তন থেকে উৎকীর্ণ হাওয়ার বুক চিরে।
তীরে, একটা নীলকণ্ঠ পাখি
ডাকতে ডাকতে উড়ে যায়
পপলারের শাখা থেকে।
জলের তলে, বালি
যুবতীর ত্বকের মত
উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
ছোট মাছের ঝাঁক
সহজ আনন্দে অলসভাবে
সাঁতার কাটে।
সূর্যের সোনালী ত্বক ভেঙে ভেঙে
স্বপ্নের মধ্যে ফুলগাছ লাগায়।
এখানে, এই জায়গায়
আমি ভাত মুখে দিয়ে চড়ে বেড়ান
কোন পশু নই।
.
.
.
.
.
আজ
কিউ স্যাং
আজ আবারো মুখোমুখি হলাম একটা দিনের
যার গর্ভ থেকে জন্ম সমস্ত রহস্যের।
যার কাছে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ অভিন্ন হয়ে যায়।
যেভাবে নদীর স্তন থেকে চুইয়ে পড়া একবিন্দু জল
কোন পর্বতের কোলে, বসন্তের সাথে মিশে যায়
মিশে যায় দূররেখায়, সমুদ্রের নীল পৃষ্ঠায়।
ঠিক সে’ভাবে আজ আমি মিশে যাই চিরকালের সাথে
যেন এ’মুহূর্তে আমি বেঁচে আছি চিরকাল জুড়ে।
এমন নয় যে আমার মৃত্যুর পরেও আমি বেঁচে থাকব
আমাকে বেঁচে থাকতে হবে আজ থেকে চিরকাল পর্যন্ত
উপভোগ করতে হবে চিরকাল দৈর্ঘ্যের একটা জীবন।
আমাকে বেঁচে থাকতে হবে মনের দারিদ্রতায়।
আমাকে বেঁচে থাকতে হবে মনের শূন্যতা নিয়ে।
বাঙলায়ন: শুভ্র সরকার
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০৩