জানালার অন্যপাশে তুমি ছিলে
আমি এতো বিস্ময় নিয়ে কখনো দেখি নি।
সাধারণ একটা আকাশ। ভাঙাপাল্লার সেই পুরনো জানালা। অনাদরে চেয়ে আছে। আকাশ জানালার দিকে। জানালা আমার দিকে। চতুষ্কোণ জানালায় যেন আকাশ আটকে আছে।
কালোরঙা সেই শতাব্দী চুরির ষড়যন্ত্র যে চোখে সারল্য পায় সে চোখেই হাজারবছুরে দগ্ধতা। আমার চৌকাঠ পেরোনো হয়নি তার। উঠোনের কোণে অযত্নে বেড়েছে কলমিলতার মতো। কখনো যে চোখ পড়ে নি তা নয়। কিন্তু তাতে প্রেম ছিল না। ছিল অন্যকিছু। ছিপছিপে শরীরটা যখন ধনুকের মতো টানটান হতো। আমার রাজ্যের বিস্ময় জড়ো হতো ওর চারপাশে। শরীরের মধ্যে দলাপাকিয়ে উঠতো মাংসপিণ্ড। আমার মধ্যে অন্য আমি।
আবার কোন মেঘমেদুর সন্ধ্যেয় শুনেছিলাম জ্যোৎস্নার শোরগোল। ঘরছুট আমি অন্ধকারের সিঁড়িভেঙে এগিয়ে যাই। উন্মত্তের মতো হাঁটতে থাকি ঝিঁঝিঁপোকার সাথে পাল্লা দিয়ে। সেইরাতের অন্ধকারে আমি উপড়ে ফেলেছিলাম উঠোনকোণে সন্তপর্ণে বেড়ে ওঠা কলমিলতাটা।
তবু আমি কখনোই দেখি নি।
ঐ জানালার অন্যপাশে তুমি ছিলে। আকাশরঙা শাড়ীতে। সলাজ। চোখেমুখে একঝাঁক ভালোবাসা মেখে। একস্পর্শের অপেক্ষায়।
কতগুলো দিন রাত হয়েছে। মাস বছর হয়েছে হিসেব নেই। সেইরাত্রির শব্দ আজ আর নতুন করে ভাবায় না। আমার যাপিত জীবনের ঘামে নোনা হয়েছে সেই অন্ধকারের গল্প।
হয়তো আমি কখনো জানালার বাইরে আকাশটাই দেখি নি।
বিস্ময়। অদ্ভুত বিস্ময়।
শুভ্র
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৯