somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে এলাম সবুজ স্নিগ্ধ শ্রীমঙ্গল

২০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে জন্মদিন আসলে খুব ভালো লাগত। এক মাস আগে থেকে অপেক্ষায় থাকতাম জন্মদিনের জন্য। কারন আমার জন্মদিনের সময়ই আমার প্রিয় ফল লিচু পাওয়া যেত, যা আব্বু জন্মদিনের দিন আনবেই আমার জন্য। লিস্ট বানাতাম এক মাস আগে থেকে কি কি চাওয়া যায় আব্বু আম্মুর কাছ থেকে। আব্বু আম্মু তাদের সাধ্যমত আমার স্বাধ পূর্ণ করতেন। এখন ভাবলে হাসি পায়। একবার অপেক্ষায় ছিলাম সানগ্লাস চাইবো বলে, আরেকবার স্কিন কালারের মোজা :P

এখন জন্মদিন আসলে মন খারাপ হয়। মনে হয় জীবন থেকে আরও একটি বছর চলে গেল। আর তার চেয়ে বেশী খারাপ লাগে আম্মু আব্বুর সাথে দেখা করতে যেতে পারিনা বলে। গতবছর পেরেছিলাম, হাফ অফিস করে বের হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের মত করে সারাদিন কাটিয়েছি, এক ফাঁকে আম্মুর সাথেও দেখা করে এসেছিলাম। এবার বাসার সমস্যার কারনে ছুটি নিতে হল বাধ্য হয়ে। এবারের জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবারে, ছুটি নিলাম রবিবারের ও। ব্যস টানা ৪ দিন ছুটি পাওয়া আমাদের মত চাকরিজীবীদের কাছে ঈদের ছুটির মত। রান্না বান্নার ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে, জন্মদিন আর ঈদের ছুটি উপভোগ করতে চলে গেলাম আমার খুব প্রিয় জায়গা শ্রীমঙ্গল। প্রিয় দুটি কারনে। প্রথম কারন হল এত সবুজ আর সবুজ চারিদিকে যে এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়। আরেকটি কারন হল আমি প্রথম শ্রীমঙ্গল যাই আমার বিয়ের কিছুদিন পর আমার জামাইয়ের সাথে। কিছুটা হানিমুন হানিমুন ভাব ছিল তাই ;)

বুধবার অফিস থেকে বাসায় গিয়ে ডিসিশন নেই বেড়াতে যাবো। সন্ধ্যায় নেট ঘেঁটে ফোন দিলাম নিসর্গ নীরব ইকো রিসোর্ট এর নাম্বারে। ওরা জানালো রুম খালি আছে। তৎক্ষণাৎ কনফার্ম করলাম আমরা পরদিন আসছি। দুদিনের জন্য রুম লাগবে। পরদিন বাক্স পেটরা গুছিয়ে ছোটজনকে খাইয়ে নিজেরা খেয়ে বের হতে হতে সকাল ১০ টা বেজে গেলো। শ্রীমঙ্গল পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেজে যায় সাড়ে ৩টা। পেটে খুদা আর ভ্রমণের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে গেলো যখন নিসর্গ নিরবের নিজস্ব গন্ডীতে পৌঁছালাম।



রুমে ঢুকে রুম দেখেও মন ভরে গেলো। আমাদের ৪ জনের জন্য যথেষ্ট। একটু ফ্রেশ হয়ে খেতে চলে গেলাম। একদম ঘরোয়া পরিবেশে নিজের বাসার ডাইনিং এর মত আমেজ নিয়ে খাওয়া সেরে নিলাম। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বের হয়ে গেলাম আমাদের পুরনো স্মৃতিকে ঝালাই করতে। ২০০৯ এ বেড়াতে গিয়ে যে যে জায়গায় গিয়েছিলাম যে যে রাস্তায় গিয়ে সবুজের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম সেই একই পথ ধরে যাওয়া শুরু করলাম। পুরনো ভাললাগাকে আবার অনুভব করলাম। যদিও অনেক অনেক পার্থক্য ছিল। ২০০৯ এ ছিলাম শুধু দুজনে আর এবার ৪ জন, সাথে ড্রাইভার ও। সেবার ছিলাম সব দায়িত্ব মুক্ত নির্ভার আমরা। এবার দুই সন্তানের দায়িত্ব মাথায়। প্রচণ্ড গরমে নিজেদের অবস্থা কাহিল হবার জোগাড় তার মধ্যে বাচ্চাদের কথাও ভাবা লাগছিল। তবুও ভালো লাগছিলো।

২০০৯ এ বেড়াতে গিয়ে পেছনের এই রিসোর্টটিতে ছিলাম। এখনো একই রকম আছে।



৮ বছর আগে যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমি, ৮ বছর পর সেই একই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমার কন্যারা




অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিলো।

সেদিন আরো কিছুক্ষণ ঘুরে রুমে চলে গিয়েছিলাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাড়াতাড়িই। পরদিন বড় কন্যা সকাল ৬টায় জেগে বসে আছে, আর জেগে উঠার পর সে কিছুতেই আর রুমে থাকবেনা। মা মেয়েতে বের হয়ে পড়লাম পুরো রিসোর্ট টি ঘুরে দেখার জন্য ও ফটো সেশন করার জন্য। কিছু ছবি শেয়ার করছি।

প্রবেশ পথেই অভিবাদন জানায় এই গন্ধরাজের গাছটি।



ইকো কটেজ। গরমের ভয়ে এখানে থাকা হয়নি। কিন্তু ভালো লেগেছে খুব। শীতকালে কখনো গেলে অবশ্যই থাকবো এখানে



হ্যামক বিলাশ




মূল ভবন



সবুজ অঙ্গন ও আরেকটি কটেজ



নাম না জানা দুটি ফুল




ছিল প্রিয় বেলী ফুলও



আর্টিফিশিয়াল কিছুর পরিবর্তে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যই আমার বেশী ভালো লাগে।



আবারও সেই লজ্জাবতি যা দেখে কন্যা আমার বড়ই আনন্দিত হয়।




মুগ্ধতা....



নিজের ভালোলাগাটুকু শেয়ার করতেই এই পোস্টে রিসোর্টের কিছু ছবি দিলাম, কোন রকম প্রচার বা প্রচারণার উদ্দেশ্যে এখানে ছবিগুলো শেয়ার করা হয়নি। মডুরা রাগ করবেন না যেন। আর সবাই তো আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবেনই তাই অগ্রিম ধন্যবাদ দিয়ে যাচ্ছি। আমার জন্মদিন ছিলো ৪ঠা মে :)
ভালো থাকুন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈশ্বরের ভুল ছায়া – পর্ব ৩ | ভূমিকা-ব্রীজ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৮



"তুমি যদি বাতাসকে ভালোবাসো, তাকে বশ করো না—তার সুর বোঝো। কারণ বাতাস একবার থেমে গেলে, তার কণ্ঠ আর কখনো শোনা যায় না।"

“ঈশ্বরের ভুল ছায়া” সিরিজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট জোনে পরিণত করলো ড. ইউনুসের অবৈধ দখলদাররা ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:২১



শেষ পর্যন্ত ড.ইউন তার আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখালেন! উনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কখনোই কোন কাজ করেননি ।আমাদের কোনো দুর্যোগে কখনো পাশে দাঁড়িয়েছেন তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই । যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×