আমার গত কোরবানির ঈদ কেটেছে বরিশালে। আমার স্বামীর নানাবাড়িতে। অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে রওয়ানা দিলাম লঞ্চে করে। আমার প্রথমবার লঞ্চ ভ্রমণ ছিল বলে রোমাঞ্চের চোটে দিশা পাচ্ছিলাম্না মোটে । তাই ভাবছিলাম যে সারা রাত ডেকে বসে কাটিয়ে দিবো। সাথে ওকেও ধরে রেখেছিলাম আমার সাথে বসে থাকার জন্য। সে ভালমানুষের মতো বসেও ছিল। হঠাৎ আমাকে এমন একটা সারপ্রাইজ দিল যে আমি অনেকক্ষণ কিছু বলতে পারছিলামনা। ঐ মাসের ২২ তারিখ ছিল আমাদের সম্পর্কের ১ যুগ পূর্তি হওয়ার দিন। সেই উপলক্ষে ও আমাকে জানায় আমাকে মালয়েশিয়া বেড়াতে নিয়ে যাবে নভেম্বর মাসের ২১ তারিখে। ২০১৩ সালের শুরু থেকেই নানারকম ঝামেলা যাচ্ছিলো আমাদের উপর। এজন্য আমরা দুজনই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম এই ট্যুরটার জন্য। সারপ্রাইজ পাওয়ার পর থেকে শুরু হয় আমার দিন গোনার পালা।
অবশেষে এল সেই আকাঙ্ক্ষিত দিন। ২১ তারিখ রাতে ছিল আমাদের ফ্লাইট। স্থানীয় সময়ানুযায়ী ভোরের দিকে পৌঁছলাম মালয়েশিয়া বিমান বন্দরে। ওদের বিশাল বিমান বন্দর দেখেই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ওখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে পৌঁছে গেলাম আমাদের গন্তব্যে। ২২ তারিখ সকালটা বিশ্রাম নিলাম আমরা। বিকেলে গেলাম সানওয়ে পিরামিড শপিং মলে। পরের দিনের প্ল্যান ছিল লংকাভি আইল্যান্ডে যাওয়া। আমরা কুয়ালালাম্পুরে ছিলাম এক স্যারের বাসায়, উনার আন্ডারেই সেলিমের পিএইচডি করার কথা ছিল। স্যার আগে থেকেই লংকাভি যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। তিনিও তার পরিবারসহ আমাদের সাথে গিয়েছিলেন বলে আমাদের ভ্রমণ আরও উপভোগ্য হয়েছিলো।
আমাদের লংকাভি যাওয়ার ফ্লাইট ছিল সকালে। তাই প্লেন টেক অফ করার পর মেঘের অপরূপ দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো। সেই অপরূপ দৃশ্য দেখে আমি বারবার আল্লাহকে ও আমার জামাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলাম। আমার জামাই আমার পাগলামি দেখে মিটিমিটি হাসছিল শুধু।
মেঘের ছবি
লংকাভি দু’দিন ছিলাম। অনেক জায়গা ঘুরলাম। ঈগল স্কয়ার, চেনাং বিচ, আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড । প্যানোরমা ক্যাবল কারের জন্য গিয়েছিলাম, কিন্তু উঠতে পারিনি অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে। আমরা যে হোটেলে ছিলাম তার পাশেই সাগর ছিল, কিন্তু নামতে পারছিলামনা বলে খুব আফসোস হচ্ছিল।
হোটেলের বারান্দা থেকে
পরে চেনাং বিচে গিয়ে সেই আফসোস দূর করেছি।
চেনাং বিচ
আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড গিয়েছিলাম। ওখানকার কিছু ছবি শেয়ার করলাম। আমার কাছে দারুন লেগেছে ওদের এই আয়োজন।
১।
মাছটা অনেক বড় ছিলো, দূর্বল ক্যামেরায় ভালোভাবে তুলতে পারিনি
২।
৩।
৪।
৫।
৬।
৭।
৮।
৯।
১০।
১১।
১২।
এই মাছটা পাখীর মতো উড়ে বেড়ায়
১৩।
১৪।
১৫।
১৬।
জেলি ফিস (আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে এটা)
১৭।
১৮।
স্টার ফিস
১৯।
সি হর্স নাম মনে হয় এটার।
২০।
ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা
২৮ তারিখ রাতে চলে এসেছি। কুয়ালালামপুরে আরেকটি দারুন জায়গায় গিয়েছিলাম, গেন্টিং আইল্যান্ড নাম। এই গল্প আরেকদিন করবো। আজ এ পর্যন্তই।
সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন এই দোয়া করি।