somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ঈশিত্বর বাবাইয়ার জন্মদিন

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ দারুন কোন কবিতা লিখতে ইচ্ছে করছে বা ভালোবাসায় পরিপূর্ণ কিছু কথামালা। কিন্তু কিছুই মাথায় আসছেনা, কারন আমিতো কোন বিখ্যাত কবি নই, নই কোন নামি দামী লেখক। কিন্তু আজ যে আমার অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে তাকে নিয়ে আমাকে নিয়ে আমাদেরকে নিয়ে। কারন আজ যে বিশেষ একটি দিন আমাদের জীবনের, আজ যে তার জন্মদিন। কি করে আমি এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করবো তাও বুঝতে পারছিনা। কি উপহার দেব তাও খুঁজে পাচ্ছিনা। কি যে করি আমি?

তবে আজকের দিনে আবারো শুকরিয়া জানাই বিধাতার দরবারে। তিনি তাকে আমার জন্য ঠিক করে রেখেছিলেন বলে। তিনি আমাকে চরম দুঃখের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন বলে। একটা সময়ে আমিতো ভেবেছিলাম তাকে হারিয়েই ফেললাম বুঝি। মার্চ মাসের হাসপাতালে কাটানো ১০টি দিনের এক একটা দিন কি ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে আমাদের তা ভাবলেও এখন শিউরে উঠি। সকাল থেকে সারা দিন ওর সাথে থাকা, এক একদিন ওর ৪ ঘণ্টার ডায়ালাইসিসের কষ্ট চোখের সামনে দেখা, উফ কি কষ্টকর অভিজ্ঞতা ছিল সেসব। ওর যেদিন ক্যাথেডার অপারেশন করলো আমি ওর কষ্টের কথা চিন্তা করে বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম, অজ্ঞান না করে গলার পাশ দিয়ে একটা রাবারের নল ঢুকানোতে কতটা কষ্ট হচ্ছিলো তা ভাবতেই কষ্টে আমার বুক ভেঙ্গে যাচ্ছিল। আর সে আমাকে প্রবোধ দিয়েছিল এই বলে যে তার নাকি তেমন কষ্টই হয়নি। আজ অবাক হয়ে ভাবি তার অসাধারণ মনোবলের কথা। হাসপাতালের বিছানায় অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর চিন্তা মাথায় নিয়েও সে সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেছে, সবার খোঁজ খবর নিয়েছে। তার সে মনোবলই হয়তো আমাকে সাহায্য করেছে পুরোপুরি ভেঙ্গে না পড়তে, প্রয়োজনীয় সব কাজ ঠাণ্ডা মাথায় শেষ করতে।

সেদিন আরজুপনি আপুর পোস্টের সূত্র ধরে ঋতুপর্ণ ঘোষের একটা ছবি দেখছিলাম - উনিশে এপ্রিল। ঋতুপর্ণের অন্যান্য ছবির মতো এটাও দারুন একটা ছবি। ছবিটা দেখার পর থেকে একটা অজানা ভয় আমাকে স্তব্দ করে রেখেছিল ৩/৪ দিন। ৮ বছর বয়সে বাবা হারানো একটি মেয়ের চরিত্রে দেবশ্রী রায়ের অভিনয় দেখে আমিও ওর সাথে কাঁদতে বাধ্য হয়েছি। ঐ ছবিটা দেখার পর থেকেই আমার ঈশিত্বর কথা ভেবে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো। বার বার মনে হচ্ছিলো আমার যে মেয়ে সকালে ওর বাবা ওর পাশ থেকে সরে গেলেই টের পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে আর বাবার খোঁজ করতে থাকে, যে মেয়ের রাত শেষ হয় তার বাবার বুকে ঘুমিয়ে, বা বাবার হাত না ধরে যে মেয়ে ঘুমাতে পারেনা, সেই মেয়ের কপালে যদি এমন দুঃখ থাকে তবে ওকে আমি কিভাবে বড় করবো। আমিও বা কিভাবে বেঁচে থাকবো কারন আমার সমস্ত জগতটাই তো তাকে ঘিরে। ও যখন আইসিইউতে ছিল ৩/৪ দিন ওর সাথে কোন যোগাযোগের উপায় ছিলোনা আমার। তখন নিজেকে এতো এতিম মনে হচ্ছিলো আমার। একজন ভালো বন্ধু হওয়াতে আমার জীবনের সব হাসি কান্না শেয়ার করি তার সাথেই। তাই এখন সব সময় বিধাতার কাছে আমার একমাত্র প্রার্থনা থাকে আমার জন্য যে আয়ু তিনি বরাদ্দ রেখেছেন তা ওর আয়ুতে যোগ করে দিয়ে হলেও তিনি যেন ওকে আমাদের জন্য সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখেন। কারন ওর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সাথে অনেকের মুখের হাসি জড়িত।

*সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর সবাই ভালো থাকুক এই কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিদ্যা যদি অন্তরে ধারণ করা না যায় তবে সেটা কোনো কাজে আসে না।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:২৮


ঘটনাটি যেন দুঃস্বপ্নের চেয়েও নির্মম। ধর্মের পথপ্রদর্শক একজন ইমাম, যার কাজ মানুষকে সহনশীলতা, দয়া ও ন্যায়বিচারের শিক্ষা দেওয়া — তিনি নিজেই স্ত্রীর সামান্য বাকবিতণ্ডায় মত্ত হয়ে উঠলেন হত্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কবি দাউদ হায়দার আর নেই

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪৫






‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’- পংক্তিমালার কবি দাউদ হায়দার চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ৭৩ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শনিবার রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অপার্থিব ইচ্ছেরা (তসলিমার “কারো কারো জন্য” থেকে অনুপ্রাণিত)

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৪৬


কেন যে, কেন যে হঠাৎ
কোন নাম না জানা ভোরে
কারো মুখ খুব মনে পড়ে,
মনে পরে অকারণ স্পর্শের,
কাছে বসার এক তিব্র বাসনার।

কতটা পথ, কতটা জীবন বাকি,
তারপরও,
অচেনা হাসি মনে হয় বড্ড চেনা,
অচেনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

---প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৪৫---(কন্যার প্রথম বই এর প্রচ্ছেদ আঁকা)

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৭







আব্বু আমার নতুন রং লাগবে ?


কেন ?

রং শেষ।

আর কিনে দিব না, তুমি শুধু শুধু নষ্ট করো।

আমি শুধু নষ্ট করি ..............। তাহলে এই দেখেন ? অফিস... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামে নারীর মর্যাদা (পর্ব :৪)

লিখেছেন আরোগ্য, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩

বিবাহ



বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারীকে কখনো পশুর পালের সাথে তুলনা করা হত আবার কখনো পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট মনে করা হত। যুগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×