ছবিতে যে তিমি মাছটা দেখতে পাচ্ছেন সেটা এই গ্রহের সবচেয়ে একাকী প্রাণী। বিজ্ঞানীরা ১৯৯২ সাল থেকে তাকে নজরে রেখে চলেছে আর তার সমস্যাটা কি সেটা বুঝতে পেরেছে।
এই মেয়ে বালিন তিমিটা নিজ প্রজাতির অন্য তিমিদের তুলনায় আলাদা। অন্য বালিন তিমিদের মত তার কোন বন্ধু কিংবা বান্ধবী নেই! তার এমনকি কোন পরিবারও নেই। কোন দল, গোত্র কিছুই নেই। নেই তার কোন প্রেমিকও, কোন দিনও ছিল না। মিলনের আকাঙ্ক্ষায় গাওয়া তার গানগুলো দুই থেকে ছয় গ্রুপে বের হয়, প্রত্যেকবার ৫ থেকে ৬ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। কিন্তু তার কণ্ঠস্বর অন্য সব বালিন তিমিদের চেয়ে একেবারে আলাদা। একদম ইউনিক কণ্ঠ তার, যেখানে অন্য তিমিরা যোগাযোগের জন্য ১২ থেকে ২৫ হার্জ কম্পাঙ্কের শব্দ ব্যবহার করে, সেখানে এই মেয়ে তিমিটা ৫২ হার্জ কম্পাংক উৎপন্ন করে।
এটাই হল মেয়েটার একমাত্র সমস্যা। কোন তিমিই তাকে শুনতে পায়না। তার প্রত্যেকটা আকাঙ্ক্ষার ডাকের কোন উত্তর সে পায়না। তার কান্নার ধ্বনি কেউ শুনতে পায়না। প্রত্যেক গান শেষে সে দুঃখী থেকে আরও দুঃখী হয়ে যাচ্ছে, হতাশ হয়ে যাচ্ছে। এরকম একাকীত্বের বেদনা সহ্য করে বেঁচে থাকা যে কতটা কষ্টের তা ভাবতেও শিউরে উঠতে হয়।
আমার জন্ম ১৯৯১ সালের মাঝামাঝি। ১৯৯২ সালে তিমিটা প্রথম বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। আমি চোখ বন্ধ করে ভাবার চেষ্টা করি, জন্মের পর থেকে আমি চিৎকার করেই যাচ্ছি কিন্তু আম্মু আমাকে শুনতে পারছে না, বুঝতে পারছে না আমার ক্ষুধা পেয়েছে। আব্বু বুঝতে পারছে না আমি তার কোলে উঠতে চাচ্ছি। ভাইয়া বুঝতে পারছে না তার সাথে একটু খেলতে ইচ্ছা হচ্ছে আমার। দ্রুত চোখ খুলে ফেলি আমি। সম্ভব না আর ভাবা..................
যদিও সে অন্য প্রজাতির তারপরও মেয়ে তিমিটার জন্য কেন যেন বুকের ভিতর অবোধ্য কষ্ট হয়..................
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২