২০০৬ সালের কথা।দিনরাত সুযোগ পেলেই এফ রেডিও শুনতেই বসে যেতাম।ফোনে তো খুব বেশি এফ এম সুবিধা ছিল না।হোস্টেলে ফোন রাখাও নিষেধ। রেডিও ছিল ভরসা।অবাক করত ২টা বিষয়।সব ধরনের গান একযোগে শুনতে পাওয়া আর আরজেদের সুন্দর করে কথা বলা।বেতার আমি শুনেছি এর আগে কিন্তু তখন আরজে নামটাই জানতাম না।
এরপর ছুটিতে গেলে বাসায় তার নেড়েনুড়ে দেখতাম যদি এফ এম রেডিও শুনা যায়।শনশন শব্দ ছাড়া কিছুই শুনতে পেতাম না।ততদিনে মোবাইলে রেডিও সুবিধা আছে কিনা তা দেখেও ফোন কেনা শুরু হয়ে গেছে।শীতকালে কিছু চ্যানেল ধরা দিত।কিন্তু স্পষ্ট না।হুট করে চলে যেত এমন ব্যাপার সাপার।
তেমনি একদিন রাত ৩টা বাজে এসএমএস করলাম।রেডিও ফুর্তির রাতের শো,আরজে শুভ।তখন তো ফেসবুক জেকে বসেনি এতটা।যাই হোক,আমি অপেক্ষা করছি কখন আমার এসএমএস পরা হবে।মনে মনে এটাও ভাবছি,আরে ঢাকার মানুষের এসএমএস ফেলে আমারটা কেন পড়বে!!কিন্তু উত্তেজনা নিয়ে শুনছি।এদিকে নেটওয়ার্ক বাবাজি তো আসে আর যায়।হুট করে গান শেষে আরজে বলছে "নোয়াখালি থেকে সিফাত এসএমএস পাঠিয়েছে..............." আমি অতি উত্তেজনায় আরো ভাল শুনার আশায় তার নাড়তে নাড়তে শনশন শব্দে তাও মিস করলাম।কি যে মন খারাপ হলো সেদিন।আমার এসএমএস আমি শুনতে পেলাম না।আর এ কথা কাকে বলিনি তখন।রীতিমত a+ পাওয়ার মত নিউজ।
আরজে শুভ আমার ফেবারিট ছিল।মেয়েরা এসএমএস করত "ভাইয়া আপনার ভয়েস অনেক সুন্দ,আচ্ছা আপনি দেখতে নিশ্চই অনেক সুন্দর[নারীদের যা হয়]।উনি বলত আমার মাথায় ইয়া বড় টাক।আগেই বলেছি ওই সময় ফেসবুক নিয়ে মানুষ মাথা ঘামাতো না।তো একবার এক কনসার্টে গেলাম যেখানে হোস্ট ছিল আরজে শুভ।পরিচয় দিতেই তাকিয়ে দেখি আরজে শুভ হচ্ছে এখনকার অভিনেতা নায়ক শুভ!! যে কিনা তখন খুব কম কাজ করত।কারন ও তখন ওভাবে পরিচিতি পায়নি।২/১টা মডেলিং করত।আরজে-দের তখন দেখতে পাওয়া এতটাই কষ্টের আর আনন্দের ব্যাপার ছিল।
(একটা নতুন রেডিও স্টেশনের পেইজ চোখে পড়ল।গিয়ে দেখি আরজেদের সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে পোস্ট ছাড়া আর কিছুই নেই।যে যখন হটসীটে বসেন,নিজের ছবি পোস্ট করে শো শুরু করেন,এমন একটা ব্যাপার।অনেকের আবার পারসোনাল ফ্যান পেইজও আছে দেখলাম।সত্যি সময় পাল্টেছে,হাতের কাছে আরজেরা চলে এসেছে।মুগ্ধতা ছুটি নিয়েছে জীবন থেকে)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:১৬