একটি ট্যাবলয়েডে লেখালেখি দিয়ে আমার লেখালেখির শুরু।আমাকে লেখা জমা দিতেও বিভাগীয় সম্পাদক তাড়া দেয় আবার জমা দেওয়ার পর বেশ বিরক্তও হয় আমার বানান ভুলের কারণে।তখন বিএনপি ক্ষমতায়।একদিন বানান ভুলের জন্য আমাকে একহাত নেওয়া শেষে বললেন,হরতাল নিয়ে একটা কলাম টাইপের লেখা দিতে।তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামীলীগের হরতালের নামে দেশে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল সে বিষয়গুলোকে হাইলাইট করে একটি লেখা লিখি।ছাপা হওয়ার পর পাঠকদের কাছ থেকে বেশ ফিডব্যাক পায়।এর আগে লিখে কখনোই এত ফিডব্যাক পায়নি যতটা হরতাল নিয়ে লেখাটির কারণে পেয়েছিলাম।পাঠকদের ফিডব্যাকে স্পষ্ট অনুভব করেছিলাম দেশের সাধরণ আমজনতা কখনোই হরতাল সমর্থন করেনা।কিন্তু এরপরও দেশে হরতাল হয়।তৎকালীন জোট সরকার বিরোধী দল হরতাল দিলেই সাংবাদিক সম্মেলন করে বিরোধী দলের ১৪গুষ্টি উদ্ধার করে চুপ করে যেত।জোট সরকারের কাছে অন্যতম যে প্রত্যাশাটি ছিল সেটি হচ্ছে আইন করে হরতাল বন্ধ করবে।কিন্তু সেটা তারা করেনি।
ক্ষমতায় থাকার সময় খালেদা জিয়া হরতালের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বেশ সোচ্ছার থাকলেও এখন হরতাল দিয়ে যাচ্ছে।কেন এই হরতাল?কিসের দাবীতে এই হরতাল?দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়াকে নিয়ন্ত্রন করতে সরকার ব্যর্থ সেইজন্য হরতাল?নির্বাচনী ইশতেহারে বিদুৎ সমস্যার সমাধানে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামীলীগ তা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কি হরতাল?দেশের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সরকার ব্যর্থ সেজন্য কি হরতাল?রাষ্ট্রপতির প্রিয় সীমান্ত শকুনদের সীমান্তে নারকীয় কায়দায় বাংলাদেশী হত্যার বিপরীতে সরকারে ভারতের পা চাঠা নীতির প্রতিবাদে কি হরতাল?তেল-গ্যাস বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে কি হরতাল?টিফাইমুখ কিংবা ফারাক্কা সহ ভারতের নানারকম পানি সন্ত্রাসের জন্য কি এই হরতাল?এককথায় জনস্বার্থ সম্বলিত কোন ইসুৎ নিয়ে কি প্রধান বিরোধী দলের এই হরতাল?উওর না।তাহলে কেন এই হরতাল?উওর একটায়,হরতাল বিএনপির স্বার্থে।আর এই হরতাল দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে জেনেও বিপুল ভোটে বিজয়ী আওয়ামীলীগ এই হরতালের বিরুদ্ধে কোন রকম আইন পাস করছেনা।
আদালত কৃতক রং হেডেড ঘোষিত চশমাওয়ালী বুবুজান এরশাদ কে কোলে বসিয়ে আগামী দিনে প্রধান বিরোধী দল বানানোর মূলা ঝুলিয়ে বাবার আদর্শে বাকশালী শাসন ব্যবস্থাকে গনতান্ত্রিক বাকশালে রুপ দিয়ে ক্ষমতার স্বাদ আহরণেই ব্যস্ত।আগেরবার ক্ষমতায় থাকার সময় বিরোধী দলে গেলে হরতাল না করার ঘোষনা দিয়ে ৮৬ এর বেঈমানের মত আরেকবার জাতির সাথে চুড়ান্ত বেঈমানী করেছিলো হাসিনা।আগেরবারে মত হাসিনা এবার এখন পর্যন্ত আগামীবার বিরোধী দলে গেলে হরতাল না দেওয়ার কথা না বললেও বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে জগন্য স্বরাষ্টমন্ত্রী সাহারা খাতুন সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী বিরোধী দলে গেলে হরতাল না করার কথা বলেছেন কিন্ত হাসিনার পা চাঠা গোলামগুলো একবারও হাসিনার পা চাঠতে চাঠতে হাসিনাকে বলেনি হরতাল বন্ধে আইনের বিকল্প কিছু সামনে আনতে।হরতাল থেকে কি জাতি কোনদিন মুক্তি পাবেনা?
২..
বাংলাদেশের রাজনীতিতে কঠিন এক হারামজাদা আমিনী।কখনো হাসিনার কোলে বসে কখনো খালেদার কোলে বসে এই হারামজাদা দিনের পর দিন ধর্ম বেচেঁ রাজনীতি করে আসছে।মাস কয়েক আগে সরকার ঘোষিত নারী নীতি নিয়ে এই হারামজাদা হরতাল এবং ছেলে অপহরণের নাটকসহ বেশ কিছু নাটক করেছিল।যখনি আওয়ামীলীগ সরকার কোন কিছু নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় থাকে তখনি এই হারামজাদা নতুন নতুন নাটক নিয়ে হাজির হয়।ইউনুস,শেয়ার বাজার,ছাত্রলীগ সহ বেশ কিছু ইসুৎতে আওয়ামীলীগ যখন বেকায়দায় তখন এই হারামজাদা প্রস্তাবিত নারী নীতি নিয়ে হুলস্থুল কান্ড বাধিঁয়ে দেয়।ধামা চাপা পড়ে যায় সবকিছু।কেয়ারটেকার সরকার,দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি,দখল,টেন্ডার বানিজ্য সহ বেশ কিছু ইসুৎতে সরকার যখন আবার বেকায়দায় তখন এই হারামজাদা আবার মাঠে নেমেছে।৬ এবং ৭ তারিখে হরতাল ঘোষনা করেছে।
একটু ফ্ল্যাশব্যাক করে কয়েকমাস গেলেই দেখা যায় প্রস্তাবিত নারী নীতিমালা নিয়ে হারামজাদা আমিনীর ১মাসের মধ্যে এই করব সেই করব করে অনেক কিছু করেছে।কিন্তু এই হারামজাদা আমিনীরা দেশের নির্যাতিত নারীদের জন্য কিছু কি করেছে?হারামজাদা আমিনী কি জানে এই দেশে প্রতিনিয়ত কত নারী নির্যাতিত হচ্ছে?হারামজাদাটা কি জানে এই দেশে যত অপরাধ সংঘটিত হয় তার বেশীর ভাগই নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়।হারামজাদা আমিনীরা কি কখনো এসিড সন্ত্রাসের স্বীকার কিংবা যৌতুকের কারণে হাজার হাজার নির্যাতিত নারীদের জন্য হরতালতো দূরে থাক একদিন রাজপথে মিছিল করেছে?
আজকের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সূত্রমতে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন এর দাবীতে আগামী ৬ এবং ৭ তারিখ এই হারামজাদা হরতাল ঢেকেছে।আল্লাহর উপর বিশ্বাস সংবিধানে রাখলেই দেশ দূনির্তী মুক্ত হয়ে যাবে?দেশের বেকার সংকট দুর হয়ে যাবে?দেশের তরুন সমাজ আজ মাদকদ্রব্যের কালো থাবায় পথভ্রষ্ট,পশ্চিমা সংস্কৃতির কারণে যুব সমাজের নৈতিক চরিত্র রীতিমত ধ্বংসের সীমানা অতিক্রম করতে চলেছে। দেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর বিশ্বাস লিখে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে?
দেশের যুব সমাজকে মাদকমুক্ত করতে,যৌতুক,ইভটিজিং,এসিড সন্ত্রাসসহ সামাজিত ,নৈতিক অবক্ষয় রোধে এই হারামজাদার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে একদল ধর্মান্ধ হায় হায় করে উঠে।অথচ এই হারামজাদা যে কখনো খালেদার প্রিয় হারামজাদা কখনো হাসিনার প্রিয় হারামজাদা এটা বোঝার জন্য এই হারামজাদার গত ১০বছরের রাজনৈতিক দ্বিমুখিতার দিকে লক্ষ্য করলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।
৩..
এতদিন পত্রিকা কিংবা বিভিন্ন ম্যাগাজিনে আধুনিক নারীদের পেট বুকে কিংবা অর্ধনগ্ন পিঠের ছবি দেখে এসেছি।কিন্তু গতকাল দেখলাম সম্পূর্ন খোলা একটি পিঠের ছবি।যে ছবিটি দেখে স্তব্দ হয়ে গিয়েছি।উপরের ছবিতে দুজন নারী।যে দুইজন নারী এসিড় সন্ত্রাসের স্বীকার।প্রতি দুইদিনে একজন নারী এসিড় সন্ত্রাসের স্বীকার হচ্ছে।যৌতুক,প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হওয়া এইসব কারণে নারীরা এসিড় সন্ত্রাসের স্বীকার।অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে আশংকাজনক হারে বাড়ছে নারী নির্যাতনের সংখ্যা।দেশে নারী নির্যাতনের চিত্র।নৈতিক অবক্ষয়,ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দুরে এসে শুধু ধর্মকেই সাইনবোর্ড করে পরিচিত হওয়া,বিবেক থেকে ভালবাসা,মানবিকতা এসব হারিয়ে যাওয়া আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্চে?আর কত নিচে নামতে হবে আমাদের?জানি প্রশ্নগুলোর কোন উওর দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
কারণ,আমিওতো কখনো হাসিনার আচঁলে কখনো খালেদার আচঁলে আমরা আমার দেশপ্রেম বেধেঁ দিচ্ছি।আর হাসিনা-খালেদারা নিজামী-এরশাদ-আমিনীর মত ধর্ম ব্যবসায়ীদের নিয়ে আমাদের শাসন করে যাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:১২