কি নাম আপনার?
-খালেদা বেগম।
এই পেশায় কতদিন ধরে?
-যেদিন বুঝতে পারলাম পুরুষ জাত মানেই হারামীর জাত সেদিন থেকে।
কেন এ পেশায় এলেন?
-বললামতো পুরুষ হারামীর জাতের কারণেই এই পেশায় আসা।বাইরে ..াগীর সাথে শুয়ে আসার সময় মাতাল হয়ে ঘরে এসে বউকে পিটানোতেই পুরুষের মরদত্ব (পুরুষত্ব)।তাই সংসারের কপালে উষ্টা মেরে এখন বেশ্যা হয়েছি।এবং বেশ্যা হয়েই থাকুম।
সাধরণ পাবলিকের চোখে বেশ্যা আর এলিট শ্রেনীর পাবলিকদের চোখে যৌনকর্মী/পতিতা নিয়ে যেসব সংগঠন কাজ করে তারা যখন কোন যৌনকর্মীর সাক্ষাতকার নিতে যায় তাদের কিছু কমন প্রশ্ন থাকে।এক বন্ধুর কল্যানে মার্চের ফ্রেবুয়ারীর শেষের দিকে আমারও সুযোগ হয়েছিল বন্ধুর সাথে যৌন কর্মীদের সাথে কথোপকথনের।কথোপকথনের সময় একটুও অনুতাপ দেখিনি খালেদা বেগমকে।বরং চোখে-মুখে ছিল তীব্র ঘৃনা।
২..
কিরে আজ অনলাইনে আসতে এত দেরী ?
-বাসায় ঝামেলা চলতাছে?
কি হয়েছে?
-রিমা নাকি আর পড়ালেখা করবেনা।
এত ভাল রেজাল্ট আর পড়ালেখা করবেনা বলিস কি?সমস্যা কি?
-কলেজে যেতে যাওয়া-আসার সময় মহল্লার পোলাপাইন খারাপ কথা কয় অশ্লীল ইংগিত করে আসছিল বেশ কয়েকমাস থেকে।বাবা সমাধান হিসেবে বোরকা কিনে দিলেন।বোরকা পড়ে কলেজে গেলে পোলাপাইন নাকি বোরকাওয়ালী,জঙ্গী বলে টিজ করে।ইদানিং নাকি এক ছাত্রনেতা বলেছে ওর সাথে প্রেম না করলে ছাত্রী সংস্থা অথবা হিজবুতী ট্যাগ লাগিয়ে ওর কলেজ যাওয়া হারাম করে দিবে।কি করব বুঝতাছিনা।তুই কি ওর সাথে কথা বলে ওরে একটু বুঝাবি?মা বলতাছে বিয়ে দিয়ে দিবে।
হুম বলে চুপ করে রইলাম।অহেতুক সান্তনা দেওয়ার কোন মানে হয়না।
৩..
উপরের ছবিটি নববূধু আসমার।না আসমা ফতোয়ার স্বীকার নয়।একজন পুরুষের স্বীকার ।যে পুরুষটি আসমার স্বামী।মেহেদীর রঙ পুরো মুছে যাওয়ার আগেই যৌতুকের স্বীকার হয় মেয়েটি।পাবনার সাথিঁয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত দরিদ্র বাবার সন্তান আসমা আক্তারের যৌতুকের দাবিতে চাপ দিতে থাকে।কিন্তু আসমার মায়ের পক্ষে সম্ভব ছিলনা এই যৌতুকের দাবী মেটানো তাই আসমাকে লাঠি দিয়ে পাষন্ড স্বামী নুর আলম বেদম প্রহার করতে থাকে।এক পর্যায়ে আসমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।গুরতর অবস্থায় আসমার জায়গা হয় হাসপাতালে।
প্রিয় পাঠক,চলুন দেখে আসি ২০১০ সালের নারী নির্যাতনের চিত্র।না বিএনপি কিংবা জামায়াত পন্থী কোন পত্রিকার তথ্য নয় সুপ্রিম কোট ২০১০ সালে বিচারাধী নারী নির্যাতনের যে মামলা প্রকাশ করেছে তাতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৬৬হাজার ৮১৭টি ।২০১১ সালে জানুয়ারী মাসে এই সংখ্যা এসে দাড়াঁয় ৭৩হাজার ৮৫১টি।এবার চলুন দেখে নেয় সংসদে দাড়িঁয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিগত অন্য যেকোনো সময়ের চাইতে দেশের আইন শৃঙ্খলা ভাল বলে সংসদকে তথ্য দিয়েছিলেন। ২০১০ সালে একজন সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্টমন্ত্রী সংসদকে জানান -২০১০ সালের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত দেশে সংগটিত পৃথক ১১টি বিষয়ে সারাদেশে ১৭ হাজার ৫৭৭টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে নারী নির্যাতন, যা ৭ হাজার ২৮৫টি। খুন হয়েছে ১ হাজার ৯৫১টি আর ১ হাজার ৫৮৬টি হয়েছে ধর্ষণের ঘটনা!৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকহানাদারও তাদের এদেশী দোসররা খুন ২লক্ষের মত নারী নির্যাতন করেছিল।কিন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের ৪০বছরে স্বাধীনদেশের প্রায় ২৫লক্ষের বেশী নারী নির্যাতিত হয়েছে।৭১এর পাক হানাদাররা যদি রাজাকার হয় তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশের নারী নির্যাতনকারীরা কি?তাদের কি জন্য কি রাজাকার উপাধী যথেষ্ট এই প্রশ্ন আমি করবো না পাঠকের বিবেকের উপরই ছেড়ে দিলাম।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের স্কুল কলেজ ভাসির্টিগুলোতে বোরকা পরিহিতা কিংবা পর্দানশীল নারীরা নানাভাবে মানসিক,ছাত্রলীগ এর নেতাকর্মী থেকে শুরু করে আইনি ঝামেলার ঘটনায় মানসিক,সামাজিক ভাবে নির্যাতন হওয়ার খবর প্রায় পত্রিকায় আসে।রাজশাহী,বরগুনা,কক্সবাজার সহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্টানে শুধু বোরকা পরা নামাজ পরার অপরাধে অনেক ছাত্রী নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।ইডেনের ছাত্রী হোস্টেলগুলোতে ছাত্রলীগের মহিলা কর্মীদের দাপটে সাধরণ ছাত্রীরা যেখানে বড় করে নিঃশ্বাস ফেলতেও কষ্ট হয় সেই ইডেনই নামাজ বোরকা পড়ার অপরাধে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতে ৬ছাত্রীকে প্রথমে আটক করা হয় জঙ্গী সংলিষ্টতার অভিযোগ এনে এরপর অভিযোগ প্রমাণ না করতে পেরে শেষে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ৬ছাত্রীকে হেনস্থা করা হয়।পরদিন দৈনিক জনকন্ট শিরোনাম করে ইডেনে নাকি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল জামায়াতের ছাত্রী ক্যাডাররা!! না শুধু ইডেন নয় এর আগেও বোরকা পড়ার অপরাধে জঙ্গি সংলিষ্টতা এনে রাজশাহীতে দুইছাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।পরে অভিযোগ প্রমাণ করতে না পেরে ছাত্রী সংস্থার সিল লাগিয়ে দেওয়া হয়।ইডেন,রাজশাহী,বরগুনা,কক্সবাজারের পর এবার ঢাবিতে ৯ছাত্রীকে স্বীকার হতে হয় ছাত্রলীগের প্রতিহিংসার।প্রশাসন-ছাত্রলীগ যোগসাজশে রোববার রাত পৌনে দশটায় ৯ ছাত্রীকে আটক করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রশাসনের হাতে তুলে দেয় জঙ্গি সংলষ্টিতার অভিযোগ এনে ।রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমি শুনেছি আটককৃতদের কাছে হরকাতুল জিহাদের কাগজপত্র পাওয়া গেছে। কিন্তু গতকাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ বিফ্রিংয়ে এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।ব্যাপক তল্লাশি করেও জঙ্গি সংলিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে এরপর তাদের ছাত্রী সংস্থার সিল লাগিয়ে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কয়েকমাস আগে ঢাবি,রাবি,জাবি তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০দিন ঘোরার অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি শিবিরের নাম উচ্ছারণ করাতো দূরে থাক সাধরণ অনেক ছাত্রই প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে ভয় পায়।ছাত্রলীগের মহিলা সদস্যদের আতংকে অস্থির থাকে সাধরণ ছাত্রীরা সেখানে গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট দেয় ইডেনে নাকি ছাত্রী সংস্থার মেয়েরা হামলা চালাবে! ভিওিহীন সব অভিযোগ এনে ঢাবি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান থেকে বহিষ্কার করা হয়েয়ে সাধরণ ছাত্রীদের।
অতীতের যেকোন সময়ের চাইতে নারীর প্রতি আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।কেন ?কারণ,রাষ্ট্রই আজ নির্যাতন করছে কখনো তাদের পেটোয়া বাহিনী কখনো তাদের বাকশালী জারজদের দিয়ে নানাভাবে নারী নির্যাতন করছে।রাষ্ট্র যখন প্রশ্রয়কারী সেখানে নারী নির্যাতন বাড়বে ,কোমলমতি কিশোরীরা ইভটিজিংয়ের স্বীকার হয়ে আত্মহত্যা করবে;এসিড়দগ্ধ নারীর সংখ্যা বাড়বে,যৌতুকের কারণে নির্যাতিত আসমাদের চিৎকারে স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা আরো লাল হবে এটাই স্বাভাবিক নয় কি?
কি দরকার এত নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার?যেখানে ভালো ভাবে মান সম্মান নিয়ে বেচেঁ থাকার চেষ্টা রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা ধর্ষিত সেখানে নারীদের বোরকা পরার কোন দরকার নেই।দরকার নেই মাতাল স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার,দরকার নেই যৌতুকের জন্য আগুনে পুড়ে মরার এর চাইতে ভাল সব নারী বেশ্যা হয়ে যাক।খদ্দের পছন্দ না হলে পাছায় লাত্তি মেরে বলতে পারবে যা হারামীর বাচ্ছা তোর মত খদ্দেরের দরকার নাই...
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ দুপুর ১:১০