somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওরা ‘হিজড়া’ তবে কি মানুষ না?

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের সমাজ এক চলমান জীবনচিত্র। বিচিত্র এর দিক গঠন সমস্যা ও তার ব্যবহারবিধি। মানুষ প্রকৃতির সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। কিন্তু এই সম্পদ সবই এক রকম নয়। অনেক সময় সাধারণ সমাজ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে এক বিচিত্র জীবন ধারাকে বহন করে চলতে হয়। এই বিচিত্র প্রবাহিত সমাজে অনেকটা অন্ত:সলিলা প্রবাহ যা প্রাগঐতিহাসিক যুগ থেকে চলে আসছে সমাজের উত্থান পতন ও বিবর্তনের মধ্য দিয়ে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার অভাবনীয় সাফল্যে আমরা আজ উদ্বেলিত। জীবনে গতি এসেছে যা পরিবর্তনের দ্যোতক। কিন্তু এরই পাশে সমাজের এক কোনে শিকড় গেড়ে স্তপীকৃত সমস্যার জঞ্জালে পড়ে আছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সহানুভূতিসম্পন্ন বিচারের আশায় এর একাংশ, এক শ্রেণীর অবাঞ্চিত আপাংক্তেয় মানব গোষ্ঠী কেন্দ্রীক, ওরা ঢোল বাজিয়ের দল। নবজাতকের সন্ধানে বাড়ি বাড়ি ঘোরা ওদের কাজ। মান মর্যাদাহীন অবমাননার জীবন ওদের। ওরা ঠাট্টা তামাশার বস্তু আমরা ডাকি ‘হিজড়া’ বলে। ওরা মূলত যৌন বিকলাঙ্গ ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষ। ওদের জীবন আমাদের অজানা বলেই সামাজিক স্বীকৃতির বাহিরে ওরা।
সাধারণভাবে লোকালয়ে আমরা যে সব ‘হিজড়া’ দেখি তারা পাড়ায় পাড়ায় নবজাতকের উদ্দেশ্যে ঘুম ভাঙানি গান গেয়ে যায়। তাদের সম্বন্ধে আমরা সমূহ অজ্ঞ। আমাদের এই অজানা সমাজের অজানা মানুষগুলি সম্বন্ধে অনেক তথ্য বহু পরিশ্রম করে “বাংলাদেশের হিজড়াদের আর্থ সামাজিক চিত্র” (এম. এ. এম. হুসাইন) এবং ”ভারতের হিজড়া সমাজ” (নিলয়বসু ও অজয় মজুমদার) দুটি গবেষণা ভিত্তিক বই লিখেছেন। এই বই দুটি থেকে আমি প্রথম বুঝতে পারি বৃহৎ সমাজ সম্বন্ধে আমার জ্ঞান কতটা পরিমিত। ‘হিজড়া’দের উৎপত্তি তাদের বিচিত্র জীবনযাত্রা, ভাষা, তাদের গোষ্ঠিবদ্বতা, সমাজের ও সমাজের একাংশে আলাদা অচ্ছৎ হয়ে পড়ে থাকা যে কোন মানুষের মনকে নাড়া দেবে। তাই এই অজানাকে কিছুটা জানানোর সমান্য প্রয়াস আমার।


আমরা কাদেরকে হিজড়া বলি?
‘হিজড়া’ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Hermaphrodite’ যার আভিধানিক অর্থ উভয়লিঙ্গ। শব্দটির আবিধানিক অর্থ নিহিত আছে একটি পৌরানিক কাহিনীতে। ‘Hermaphrodite’ শব্দটি এসেছে হেলেনিষ্ট যুগের গ্রীক পুরান থেকে। দুটো নাম ‘হার্মেস’ (Hermes) এবং ‘আফ্রোদিত’ (Aprodite) গ্রীক উপকথার চরিত্র। এই দম্পত্তির সুদর্শন পুত্র হার্মাফ্রোদিতাসকে দেখে প্রেমে পড়ে বর্ণার উপদেবী। প্রেম কাতর এই উপদেবী দেবতার কাছে প্রার্থনা করে যেন সে চিরতরে হার্মাফ্রোদিতাসের সঙ্গে একীভূত হতে পারে। তার এই আবেদনের ফলে ঐ উপদেবী এবং হার্মাফ্রোদিতাসের সংমিশ্রনে তৈরি হল অর্ধনারী এবং অর্ধপুরুষ বৈশিষ্ট্যের এক মানব। সে সময়ে একেই ‘হিজড়া’ বলে অভিহিত করা হয়।
‘হিজড়া’র প্রতিশব্দ হিসেবে ইংরেজিতে Eunuch শব্দটি বেশি প্রচলিত। বাংলায় ‘হিজড়া’র প্রতিশব্দগুলোর মধ্যে ক্লীব, নপুংশব্দ, খোজা, বৃহল¬না, চিন্নমষ্ক উল্লেখযোগ্য। ‘হিজড়া’ কারা এ নিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানীর কথা থেকে যা জানা যায় তার একটি সাধারণ সংজ্ঞা হলো ক্রোমোজোমের ত্রুটির কারনে জন্মগত যৌন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যাদের জন্মের পর লিঙ্গ নির্ধারনে জটিলতা দেখা যায় তারাই ‘হিজড়া’। ‘হিজড়া’ শিশু জন্মের কারন নিয়ে আমাদের সমাজে উনিশ শতকের পূর্ব পর্যন্ত অনেক কুসংস্কার ও কল্পকাহিনী প্রচলিত ছিল। বিজ্ঞানীরা উনিশ শতকের শেষ দিকে ক্রোমোজোম সম্পর্কিত গবেষণার অবিশ্বাস্য সাফল্য অর্জন করেন। এই সাফল্যই নবজাতকের লিঙ্গ নির্ধারনের পথকে বৈজ্ঞানিক ভাবে হোয়াইটিং(whitting), মন্টোগোমারি (montogomery), ব্রিজেস (Bridges), স্টিভেন্স (Stevens) প্রমুখ বিজ্ঞানী ক্রোমোজোমের ওপর বিশেষ গবেষণা করে লিঙ্গ নির্ধারণে গুরুত্বর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
মানুষের শরীরে মোট তেইশ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে এক জোড়া ক্রোমোজোড় লিঙ্গ নির্ধারন করে একে বলে স্ত্রী সেক্স ক্রোমোজোম। দেহ কোষের লিঙ্গ নির্ধারন ক্রোমোজোমের মধ্যে দুইটি X ক্রোমোজোম অপরদিকে পুরুষের একটি X ও অপরটি Y। যদি বাবা ও মা উভয়ের কাছ থেকে একটি করে X অর্থাৎ X X যৌন ক্রোমোজোম পায় তাহলে শিশুটি মেয়ে হবে এবং মায়ের কাছ থেকে X এবং বাবার কাছ থেকে Y অর্থাৎ X Y ক্রোমোজোম পেলে ছেলে হবে।

ছেলে বা মেয়ে শিশু জন্মের এই রহস্য আমাদের অনেকেরই জানা কিন্তু আমরা জানি না কেন হিজড়া শিশু জন্মে। অনেক সময় ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিক মিলনের ফলে লিঙ্গ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। লিঙ্গ অনির্ধারিত এই শিশুটিই তথাকথিত ‘হিজড়া’ সন্তান।
বিজ্ঞানী “মুরী এলবার” মানবদেহ কোষে সেক্স ক্রোমাটিন (Sex chromatin) আবিষ্কার করেন। তার সম্মানে সেক্স ক্রোমাটিনের নাম রাখা হয় বারবডি (Barrbody)। মহিলাদের শরীরে পজেটি বারবডি এবং পুরুষের শরীরে নেগেটিভ বারবডি থাকে। কোষে বারবডির সংখ্যা নির্ণয় করে সহজে বলা যায় যৌন লিঙ্গ অস্বাভাবিক আছে কিনা। ক্রোমোজোমের ত্রুটি ও বারবডির সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা ছয় ধরনের ‘হিজড়া’ চিহ্নিত করতে পেরেছেন।

ক) Kindefelter Syndrome:
মানুষের শরীরে ছয়চল্লিশটি ক্রোমোজোম থাকা স্বাভাবিক। এই ধরনের রোগীর শরীরে অতিরিক্ত একটি স্ত্রী যৌন ক্রোমোজোম বেশি থাকায় মোট ক্রোমোজোমের সংখ্যা দাঁড়ায় সাতচল্লিশ। এ ধরনের শারীরিক ত্রুটি শুধু পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়। এসব পুরুষ রোগীর শরীরে স্ফীত স্তন, অত্যন্ত ক্ষুদ্র পুরুষাঙ্গ যা যৌন আকার্যকর। ছোট চুল, দাড়ি কম এবং বারবডি পজেটিভ দেখা যায়। এদের শারীরিক গড়ন লম্বা এবং মানসিক জড়তা থাকে কখনো কখনো। এদের শরীরে এ পর্যন্ত আটচল্লিশ বা ঊনপঞ্চাশটি ক্রোমোজোম পাওয়া গেছে।
খ) XXY পুরুষ (XXY Male) :
এ সব রোগী পুরুষের মত দেখালেও তারা পুরোপুরি পুরুষ নয়। এরা বেশি লম্বা ও কম বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। বয়:সন্ধিকালে এদের যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। পুরুষের মত যৌনাঙ্গা হলেও মূত্রছিদ্র স্বাভাবিক স্থানে থাকে না। অন্ডোকোষ শরীরের ভেতরে থাকে। আচরণ হিংসাত্মক ও সমাজবিরোধী হয়। এসব রোগীদের শরীরে সাতচল্লিশটি ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে চুয়াল্লিশটি ক্রোমোজোম এবং তিনটি যৌন ক্রোমোজোম থাকে।
গ) XXY পুরুষ (XXY Male Syndrome):
এসব রোগীর শরীরে আটচল্লিশটি ক্রোমোজোমের মধ্যে ছয়চল্লিশটি অটোজোম এবং ২টি X যৌন ক্রোমোজোম থাকে। XX যৌন ক্রোমোজোম থাকলেও ওরা পরিপূর্ণ নারী হয়ে ওঠে না। নানা রকম পুরুষালী বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এদের কারো কারো স্ফীত স্তন থাকে। অনেকের বুকের এক পাশেও স্তন থাকে। পুরুষাঙ্গের আকৃতি স্বাভাবিক অথবা একটু ছোট হতে পারে। এ ধরনের রোগীরা বেটে আকৃতির হতে পারে।


ঘ) টার্নার সিনড্রোম (Turner Syndrome) :
এসব রোগীদের নারীর মত দেখালেও এরা স্বাভাবিক নারী নয়। কারণ এদের গোপনাঙ্গ ও অন্যান্য যৌনাঙ্গ ত্রুটিযুক্ত। এদের যৌনাঙ্গের সাথে নারী যৌনাঙ্গের আপাত সাদৃশ থাকে। যৌনকেশ (public) খুব কম দেখা যায়। ডিম্বাশয় (Ovary) থাকে না, অপূর্ণ জরায়ু হতে মাসিক হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। এদের মধ্যে আনেকের বৃক্কে ও হৃদপিন্ডে সমস্যা থাকে। বধির হবার সম্ভাবনা ও প্রবল।
ঙ) মিশ্র যৌন গ্রন্থির বিকৃতি (Mixed gonadal dysgenesis):
আপাত দৃষ্টিতে এদের ছেলে বলে মনে হয়। এদের গোফ দাড়ি হয়। শরীরের অভ্যন্তরে শুক্রাশয় থাকে। এদের পুরুষাঙ্গ থাকে। পুরুষাঙ্গের স্বাভাবিক স্থানেই মুত্রছিদ্র থাকে। একই সাথ এদের শরীরে জরায়ু, যৌনাঙ্গ ও অন্তত একটি পেলেটিপিয়ান থাকে। কৈশরে এদের শুক্রাশয় থেকে এন্ড্রোজেন নি:সৃত হয়। সে কারনে শরীরে পুরুষলীভাব ফুটে ওঠে। ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতা, অ্যাড্রিনাল গ্রন্মির নানা সূক্ষ জটিলতার কারনে এ ধরনের যৌনলিঙ্গ শিশুর জন্ম হয়।

চ) প্রকৃত ‘হিজড়া’ (True Hermahroditism) :
প্রকৃত ‘হিজড়া’ মূলত তিন প্রকারঃ
১। শরীরের একদিকে একটি ডিম্বাশয় থাকবে।
২। একদিকে ডিম্বাশয় শুক্রাশয় এবং অপরদিকে ডিম্বাশয় থাকবে।
৩। একদিকে একটি ডিম্বাশয় এবং অন্যদিকে একটি শুক্রাশয় থাকবে। এই প্রকার অধিকাংশ হিজড়াই পুরষালী। পেশী বহুল শরীরে পুরুষাঙ্গ থাকে। মূত্রছিদ্র স্বাভাবিক স্থানে থাকে না। অনেকের পুরুষাঙ্গ না থেকে যোনি থাকে। তবে নারীদের মত স্বাভাবিক যোনি থাকে না। মূত্রনালী ও যোনিপথ এক সঙ্গে থাকে। কৈশরে এদের মধ্যে স্তন গ্রন্থিরও প্রকাশ ঘটে এবং ঋতু চক্র দেখা যায়।
এ ছয় রকম ‘হিজড়া’ ছাড়াও এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা মূলত ছদ্মবেশধারী ‘হিজড়া’। ছদ্ম বেশি হিজড়াদের আবার চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন,
ক) আকুয়াঃ যে সব পুরুষ নারী সাজতে ভালোবাসে এবং নিজেকে নারী মনে করে মানসিক তৃপ্তি পায় তাদের আকুড়া ‘হিজড়া’ বলে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের অনেক আকুয়া হিজড়াকে লিঙ্গ রূপান্তর কামিতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরা শুধু বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরেই আনন্দ পায় না। নিজেদের লিঙ্গ ও পরিবর্তন করতে চায়।
খ) জেনানা: এরা স্ত্রী সাজে সজ্জিত পুরুষ। তবে এরা আকুয়া নয়। কারণ এরা নারী বেশে থাকতে মানসিক সুখ পায় না, হিজড়া সেজে কিছু সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। এরা সেচ্ছায় হিজড়া দলে আসে। জেনানা ‘হিজড়া’ দু ধরনের।
ক) পৌরুষহীণ জেনানা।
খ) যৌন ক্ষমতা সম্পন্ন জেনানা।
গ) ছিবড়ি : যৌনাঙ্গের কোন ত্রুটি নেই অর্থাৎ স্বাভাবিক যেসব মহিলারা ‘হিজড়া’ সেজে থাকে তাদেরকে ছিবড়ি বলে। সাধারণত অসহায় উপায়হীন মহিলারা এ পথ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বেছে নেয়।

ঘ) ছিন্নি : পুরুষাঙ্গ ছেদন করে ছিন্নি ‘হিজড়া’ হয়। আকুয়া থেকে অনেকে স্বেচ্ছায় ছিন্নিতে রূপান্তরিত হয়। বৈজ্ঞানিকভাবে লিঙ্গ পরিবর্তন করা ব্যায় বহুল ও সময় সাপেক্ষে। একারণে অবৈজ্ঞানিকভাবে পুরুষাঙ্গ ছেদন করে এবং হরমোন থেরাপী নিয়ে অনেকে নারীবেশ ধারন করার চেষ্টা করেন।
খোজাকরণ বা লিঙ্গচ্ছেদনঃ
অতীতের রাজা বাদশারা অন্দর মহলে পাহারাদার নিযুক্ত করার আগে পুরুষদের খোজা করে দিতেন। তখনো আমাদের এই উপমাহাদেশে বিশেষ বিশেষ কারনে খোজা করার তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশে খোজা করনের কোন পরিসংখ্যান বা প্রমান পাওয়া না গেলেও সর্ব ভারতীয় ‘হিজড়া’ কল্যাণ সভার একটি সমীক্ষায় জানা যায় ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতি বছর ছয় থেকে পঁচিশ বছরের আশি হাজার পুরুষ অবৈজ্ঞানিক পন্থায় অন্ডোকোষসহ পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া হচ্ছে। এদের অর্ধেকই চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। তবে খোজা করনের পক্ষে বাংলাদেশে সামাজিক ও আইনি কোন স্বীকৃতি নেই। ফৌজদারি দন্ডবিধির ৩২৬ ধারার লিঙ্গচ্ছেদনকে Griedoas Hurt হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
হিজড়াদের সম্পর্কে উপরের বিশদ আলোচনার পথে একথা বলা যায় যে, ক্রোমোজোমের ত্রুটির করনে যে সকল মানুষ লিঙ্গগত সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তারাই মূলত ‘হিজড়া’। আবার অন্য কথায় বলা যায় সুস্থ সামাজিক মানুষ শুধুমাত্র মানসিক তৃপ্তির জন্য ‘হিজড়া’ সাজে এমনকি তারা হরমোন থেরাপীও নিয়ে থাকে। তাই ‘হিজড়া’ বলতে বোঝায় শরীরিক ও মানসিক ভাবে যৌন প্রতিবন্ধীরাই হল ‘হিজড়া’ । হিজড়ারা সাধারন পরিবেশে সাধারন মানুষের সাথে মিশতে পারে না তাদের চরিত্রগত বৈচিত্র্যের জন্য। এইসব সামাজিক প্রতিবন্ধকতা তাদের পড়াশোনা বা অশিক্ষার অন্ধকারের ডুবে থাকে সারা জীবন।
তবে বর্তমানে একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে বাঁধন ‘হিজড়া’ সংঘ তাদের নিজেদের মধ্যে শিক্ষার আলো জালাতে সক্ষম হচ্ছে আস্তে আস্তে। তারা একত্রে শিক্ষা গ্রহণ করছে এবং তাদের এই শিক্ষা প্রদানের ভার নিয়েছে কয়েকটি এনজিও সংস্থা।

হিজড়াদের কর্ম প্রকৃতি ও আয় কাঠামো
হিজড়ারা মূলত যে কাজটি করে আয় উপার্জন করে থাকে তা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদেরকে নাচায়, ঢোল, ঘোঙ্গার, বাঁশি, খঞ্জনি তাদের বাদ্য যন্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয় একটি নবজাতিকে নাচাতে ৩-৫ জন হিজড়া কাজ করে। একজন ঢোল বাজায়, একজন খঞ্জনি, একজন ঘোঙ্গর পাঁয়ে দিয়ে নবজাতককে কোলে নিয়ে নাচে। এই নাচার কাজটি ২ জনও করতে পারে। নবজাতককে নাচানোর জন্য ঐ পরিবার থেকে এক হাজার টাকা দাবি করে। যদি কম দেয়া হয় তারা তা নিতে রাজি হয় না। তারা নাছোড়বান্দা। যা দাবি করবে তা দিতে হবেই। বিশেষভাবে উল্লে¬খ করা যায় যে নবজাতককে নাচানোর এই রিতীটি গ্রামেই বেশি পরিচালিত হয়। তবে বর্তমানে হিজড়ারা নবজাতককে নাচানোর রিতীটা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। তারা অন্য অনেক ব্যতিক্রম ধর্মী কিছু কর্ম কান্ডের মাধ্যমে নিজেদের উপার্জন এর পথ বেছে নিয়েছে। বর্তমানে তারা দোকানে দোকানে দলবেধে যায় এবং প্রতি দোকান থেকে দশ টাকা চাঁদা নেয়। চাঁদার পরিমান অনেক সময় বেশিও হতে পারে। দোকানে গিয়ে দোকানীর সাথে হাসি, ঠাট্টা করে এবং চাঁদা বেশি নেওয়ার চেষ্টা করে। বর্তমানে গ্রামে আরও একটি আয়ের মাধ্যমে প্রচলিত আছে তা হচ্ছে হিজড়ারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা, চাউল, ডাউল, ইত্যাদি বিন্যাস পত্র চাঁদা নেয়। হিজড়াদের আরও একটি ব্যতিক্রমধর্মী আয় এর সন্ধান পাওয়া যায়। তা হচ্ছে যৌন ব্যবসা। তাদের যৌন ক্ষমতা না থাকলেও সাধারণ স্বাভাবিক মানুষের জন্য এরা মেয়েদের ভূমিকা পালন করে। এই পথেও তারা আয় করে থাকে। এদের যৌনাঙ্গ না থাকলেও তারা পায়ুপথে যৌনমকর্ম করে যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করে অর্থ আয় করে থাকে।

এ কোন মানবিকতা?
বর্তমান সময়ে মানুষের আর্থিক, সামাজিক ও প্রযুক্তিগত জীবনের অনেক উন্নতি হয়েছে। সেই সাথে মানুষের মনোভাবেরও পরিবর্তন হচ্ছে। অনুন্নত মানসিকতা হতে উন্নতি মানসিকতার উদয় হচ্ছে। তবুও বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সামনে এসে দাঁড়ায় সবার। অনেকের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব বিরাজ করলেও প্রায় সব স্থানে নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
হিজড়া জনগোষ্ঠীদেরকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতীবাচক মনোভাব প্রকাশ পায়। তাদের অনুন্নত জীবন ব্যবস্থা, তাদের প্রতিবন্ধকতা তাদের নিজেদের বেঁচে থাকার পথকে কঠিন করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ওদের সাধারণ জীবন ব্যবস্থা নেই, নেই কোন আনন্দের মুহুর্ত। ঈদ, পুজা, সাংস্কৃতিক কোন কর্মকান্ডে নিয়োজিত হয়ে সাঠিকভাবে নিজেদেরকে তুলে ধরতে পারে না। ওদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের সুযোগ নেই। তাদের পেশাগত জীবনও ভিন্নতর। তারা সঠিক, সুন্দর স্বাভাবিক কোন পেশায় অংশ গ্রহণ করতে পারে না, এর বড় কারন হল কেউ তাদেরকে কাজে নেই না।
তারা শতকরা ৯৮ ভাগই আশিক্ষিত। সমাজের এক ধরনের বোঝা হয়ে অবস্থান করে তারা মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাদের একটি পরিবারের সাথে বাস করতে পারে না বা করে না। বাংলাদেশের মোট হিজড়া সংখ্যার শতকরা ৯৯ ভাগ হিজড়াই তাদের সংঘের সাথে বসবাস করে। বাকি যারা পরিবারের সাথে অবস্থান করে তারা নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখে।
বর্তমানে হিজড়াদেরকে নিয়ে বিভিন্ন এনজিও গুলো সঠিক উন্নয়নের চিন্তা করলেও তা সফল করতে গিয়েও অনেক বাধা প্রাপ্ত হয়। তাছাড়া তাদের উন্নয়ন বাজেটও কম থাকে। তাই সকলকে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে সরকারের উচিৎ এ বিষয়ে সরকার নিজ তত্ত্বাবধানে তাদের দ্বায়িত্ব নেয়া। আজও পর্যন্ত উদ্দ্যেগ সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায় নি। এটা আসলেই একটি দু:খ জনক ব্যাপার। হিজড়াদের কে সমাজের মানুষ ঘৃনার চোখে দেখে।
গবেষণার প্রথমেই আমরা জেনেছি ‘হিজড়া’রা সাধারন মানুষের কাছে হাসি, ঠাট্টার পাত্র। এরা নিজেরাও সাধারণ মানুষের সাথে তামাশা, ঠাট্টা করতে পছন্দ করে। হাসি ঠাট্টা করা ওদের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য, ওরা সব সময় এই মনোভাব নিয়েই থাকে। যাকে সমনে পায় তার সাথেই তামাশা করে। তাদেরকে নিয়ে সবাই যে ঠাট্টা তামাশা করে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা সবাই একই উত্তর দেয়। তারা বলে, অন্যের সাথে ঠাট্টা করে মজা পায় এবং অন্য কেউ তাদের সাথে ঠাট্টা করলে সেটাতেও মজা পায়। তবে তার এই উত্তরে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমার মতে তারা সব সময় ঠাট্টা তামাশয় লিপ্তথাকে এই জন্য যে, তাদের দৈহিক, বৈচিত্র, এবং যৌনতা বৈচিত্র্যকে তারা ভূলে থাকতে চাই। এবিষয়টি নিয়ে যদি কেউ আরও একটু গভীর চিন্তা না করে তাহলে একটি ব্যাপার নজর এড়িয়ে যেতে পারে আর তা হচ্ছে ‘হিজড়া’রা নিজেদেরকে এতটাই অসহায় এবং নিজেরা এতটাই মানসিকভবে ভেঙ্গে পড়ে যে তারা অনেক সময় কি করে তা বুঝত পারেনা। যেমন, পাগল। পাগলরা অবশ্যই স্বাভাবিক আচরন করতে পারেনা মানুষের সাথে এবং তারা বুঝতেও পারেনা যে তারা অস্বাভাবিক আচরন করছে সবার সাথে। অনেকটা এমনই হয় কিন্তু অনেক সময় তাদের নিজেরকে এভাবে প্রকাশ করে ইচ্ছা করে।
আমরা জানি হিজড়ারা যৌন প্রতিবন্ধী তাই তারা কখনও মা, অথবা বাবা হতে পারে না। এরও বড় কারণ তারা দৈহিক মেলামেশাতেও অক্ষম। আর এটির কারনে তাদের মানসিক অবস্থা কেমন হওয়া উচিত তা আমরা হয়ত ঠিক তাদের মত করে বুঝতে পারব না। ‘কমন জেন্ডার’ নামক একটি বাংলা সিনেমাতে (নোমান রবিন পরিচালিত, ২০১১) পরিচালক হিজড়াদের তাদের মা-বাবার বসবাসরত সমাজের সাথে সাধারন ভাবে বসবাস করার আকুলতা ভীষন ভাবে তুলে ধরেছেন। তাদের মনের কষ্টটা ফুটে উঠেছে পরিপূর্ণভাবে। বাবা-মা যখন থেকেই জানতে পারল যে সে ‘হিজড়া’ তখন থেকেই তার প্রতি সবার থেকে একটু আলাদা দৃষ্টি এসে পড়ল এবং ‘হিজড়া’ সংঘ থেকে হিজড়ারা বাড়ির ওপরে এসে বাবা-মা এর সাথে অনেকটা কাড়াকাড়ি করে ‘হিজড়া’ বাচ্চাকে নিয়ে যায়। আবার সেই বাচ্চা বড় হয়ে বাবা-মাকে অনেক বেশি মিস করে। তাদের ভালবাসা পেতে চায়, তাদের সাথে একই পরিবারে হেসে খেলে থাকতে চায় কিন্তু সমাজের কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ এই নিতীর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। ‘হিজড়া’টির জন্য মায়ের বুক ফেটে কান্না বের হয়ে আসে। কিন্তু সমাজের কাছে সেই মায়ের কান্নার কোন মূল্য নেই। সমাজ থেকেই বের করে দেয়া হয় তাকে। যাদের ভেতরে বুকের এই যন্ত্রনা বোঝার ক্ষমতাটুকু হারিয়েছে তারাই আবার ফূর্তি করতে তাদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়।
‘কমন জেন্ডার’ সিনেমাটিতে দেখা যায় হিজড়াদের আরও একটি করুন চিত্র। কিছু হিজড়া সারাদিন চাঁদা তুলে যখন ক্লান্ত তখন ওরা খুজতে থাকে একটি পাবলিক টয়লেট। এক পর্যায়ে পেয়েও যায় এবং মেয়ে সেজে থাকা এক হিজড়া মহিলা টয়লেট লেখা একটি টয়লেটে প্রবেশ করার সাথে সাথে ভেতরে থাকা কোন একটি মহিলা উচ্চস্বরে চিৎকার করে ওঠে এবং আশপাশ থেকে লোকজন এসে তাদেরকে তাঁড়াতে থাকে। তখন হিজড়াটি দৌড় দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে কারন সে ওদেরকে অনেক ভয় পেয়েছে। তারা তাকে মারতে পারে। এমন অবস্থায় দুরে থাকা বন্ধুরা এসে তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। আর সবাই কেঁদে কেঁদে তাদেরকে বলে “আমরা কি মানুষ না? আমরা কি হাগা-মুতাও করতে পারব না? এই চিত্রটা এতটাই হৃদয় বিদারক তা কেবল অনুভব শক্তি থাকলেই বোঝা সম্ভব। মোট কাথা তারাও তো মানুষ। এটা কোন ধরনের মানবিকতা? তারও তো এই সমাজেরই মানুষ। তারা সমাজের আর দশটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মতই প্রতিবন্ধী। কিন্তু হাত-পা হীন একজন প্রতিবন্ধীর উপর তো এত পাশবিক আচরন কেউ করেনা। তাহলে হিজড়ার উপর কেন এই আচরন? প্রশ্ন রেখে গেলাম।
যে কথা বলে শেষ করব
হিজড়া জনগোষ্ঠীর পৃথিবীর সব দেশেই কম বেশি আছে। তবে বাংলাদেশের মত একটি দেশে যে পরিমাণ হিজড়া আছে তা এই দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় ওদের সংখ্যা একটু বেশিই। তাদের জীবন বৈচিত্র্য আসলেই হতাশা জনক। কারণ বাংলাদেশে এদের বেড়ে ওঠা, এদের আলাদাভাবে পরিচর্চা করার মত কোন ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত হয়নি। তাদের ঘৃনিত, নিপীড়িত ও অবহেলিত জীবন যাত্রা আসলেই বেদনাদায়ক। তাদের মা-বাবা হবার আকুলতা যে কতখানি তা হয়ত সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। হয়ত তাদের যৌন সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারবনা। কিছু আমাদের, আমাদের সরকারের, বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এদের দিকে মানবতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এদেরকে বাড়তি যতœ নেওয়া। তাদের জন্য আলাদাভাবে কর্মসূচী রাখা উচিত, তাদেরকে সমাজে সঠিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্যে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য এমন বিভিন্ন কর্মসূচী থাকলেও যৌন প্রতিবন্ধী (হিজড়া) দেরকে নিয়ে এমন ব্যবস্থা না থাকাটা আসলেই দুঃখ জনক। যদিও ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর সচিবালয়ে একটি আইন পাশকরা হয়েছে যে বাংলাদেশের যে কোন অফিস আদালতের কাগজ পত্রে যে স্থানে মহিলা/ পুরুষ লেখার জায়গা সেখানে মহিলা-পুরুষের পাশাপাশি হিজড়া শব্দটি লেখা থাকবে। যাতে তাদের সঠিক পরিচয়টি বহন করতে পারে। এছাড়া দেশের বাইরে যাবার সুযোগ দিতে পাসপোর্ট তৈরিতেও এই অপশনটি রাখা হয়েছে।




রশিদ আল রুহানী
নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ইমেইলঃ [email protected]





গ্রন্থ নির্দেশ
১। অজন মুজমদার: লিয়বসু
২। গবেষণক: এস এ এম হুসাইন
ভারতের হিজড়া সমাজ.
৩। বাংলা পিড়িয়া ১০ম খন্ড
The New Encyclopedia Britannica Volume 5, 15th Edition, 1987, Page-874৪. বন্দোপাধ্যায় নারায়ন চন্দ্র (১৯৪৫)ঃ যৌর্স যুগের ভারতীয় সমাজ, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
৫। বন্দোপাধ্যায় রাখালদাস (১৯৭১) ঃ বাঙ্গালার ইতিহাস (২য় খন্ড) নব ভারত পাবলির্শস।
৬। বাৎস্যায়নের কামসূত্র (১৯৮৩) ঃ অনুবাদ সুধাংশু রঞ্জন ঘোষ, মৌসুমী
প্রকাশনী, কলিকাতা।
৭। সরকার, দীনেন্দ্র কুমার (১৩৯০) ঃ মানব সভ্যতায় কুমারী বলি, পুস্তক বিপনি: কলিকাতা।
৮। হফেজ মাওলানা হুসাইন বিন সোহরাবর সংকলিত একটি হাদিস বই।
৯। হাসানাৎ, আবুল (১৯৩৫) ঃ সচিত্র যৌন বিজ্ঞান (১ম খন্ড)
স্ট্যান্ডার্ড পাবলির্শস।
১০। হোসেন হামজা (১৯৮৭)ঃ অপরাধ বিজ্ঞান মুক্তধারা : ঢাকা।
উপরের এই বই গুলো ছাড়াও ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হিজড়াদের উপর বিভিন্ন টেলিভিশন চানেলে প্রচারিত বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারও তথ্যসূত্র হিসেবে আমি ব্যবহার করেছি।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×