খ্রিস্টান ধর্মে মিলেনিয়ালিজম নামে একটা শব্দ এবং আছে তার উপর ভিত্তি করে কার্যক্রম। জেনেসিসে বলা হয়ে থাকে কোন এক হাজার বছরের প্রারম্ভে যিশু পুনরায় পৃথিবীতে আসবে। জেনেসিসের এই কথার ফলশ্রুতিতে গত শতাব্দীতে থেকেও শুরু হয়েছে নিজেকে যিশু ঘোষণার একটি প্রবণতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক ব্যক্তি নিজেকে যিশু বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদেরই একজন হলেন সাইবেরিয়ার ভিসারিয়ন। আমাদের সাধারণ দৃষ্টিতে অন্যান্য যিশুর চাইতে সাইবেরিয়ার যিশু একটু আলাদা গুরুত্ব বহন করে। কারণটা সবার শেষে বলছি।
সার্গেই ছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন পুলিশ কর্মকর্তা। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর রাশিয়ায় ধর্ম পালন যখন উন্মুক্ত হয় তখন তিনি নিজেকে যিশু হিসেবে ঘোষণা দেন এবং সাইবেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব কোণের এক প্রত্যন্ত গ্রামে একটি চার্চ স্থাপন করেন। এবং নিজের নামকরণ করেন ভিসারিয়ন যার অর্থ মুক্তিদাতা। বর্তমানে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও অধিক।
রাশিয়ান সরকারের পূর্ণ সহযোগিতায় ভিসারিয়ন সাইবেরিয়া অঞ্চলে তাঁর কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে। কিন্তু এককালের কট্টর ধর্ম বিদ্বেষী কম্যুনিস্ট শাসিত অঞ্চলে সরকারের সহযোগিতার কারণ কি? সাইবেরিয়া অঞ্চলে সন্ত্রাস, ডাকাতি, গোত্রে গোত্রে সংঘাত ইত্যাদি সমস্যাগুলো যে সময়ে পুরো সাইবেরিয়া অঞ্চলকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে ঠিক সেই সময় ভিসারিয়নের অনুসারীরা রয়েছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে। ঠিক এই কারণেই রাশিয়া সরকার চাইছে সাইবেরিয়া অঞ্চলে ভিসারিয়নের অনুসারী সংখ্যা বৃদ্ধি পাক।
এখন প্রশ্ন হলো এক কালের কট্টর ধর্ম বিদ্বেষী কম্যুনিজমের দ্বারা পরিচালিত অঞ্চল কি তাহলে শেষ পর্যন্ত ধর্মের কাছেই সমাধান খুঁজে পেলো? ঠিক এই প্রশ্নের উত্তরের জন্যই সম্ভবত অন্য সব যিশুর চাইতে আমাদের কাছে ভিসারিয়ন অধিক গুরুত্বপূর্ণ!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:০৪