মধ্য বয়সী শাহেদ বউ বাচ্চা নিয়ে জীবনের ধরাবাঁধা নিয়মে অভ্যস্ত ছিল। বৈচিত্রহীন, নিরাপদ দিনগুলো যাচ্ছিল। এর ভিতরে একজন বন্ধু হয়। ভার্চুয়াল বন্ধু। সম বয়সী। সমমনা। ভিন্ন সেক্স। দু'জনেই একে অন্যকে জানতে কৌতুহলী, একে অন্যের জাতধর্ম সম্পর্কে উৎসুক। দুজনের মনের ইচ্ছেঘুড়িগুলোর সূতো দ্রুতই লাটাই ছেড়ে গায়ে বাতাস লাগাল। নিজের ও গোপনে মনের গভীরে লুক্কায়িত একটুখানি চাওয়া- যার সাথে মিলে এমন একজন বন্ধু - সব মানসিক যাতনা যার সাথে শেয়ার করা যায়। সে তা শরীরের গোপন অসুখ বা দাম্পত্য জীবনের কিছু অপুর্ণতা, বা তা থেকে মুক্তির কথাই হোক না কেন। তার সাথে তার জীবন সত্যিই জড়িয়ে যায়।
এক সময় শাহেদ সীমানা ভুলে যান। মাঝে মাঝে নিজের অভ্যস্ত দাম্পত্য জীবনে অবদমনের ফল হয়ে উৎপাদিত হয় খেলার মত প্রেম। নিজেকে ভুলিয়ে রাখার এক বিপদজনক অসতর্ক উপায়। এভাবে শাহেদ এক সময় বন্ধুকে জ্বালাতন করে করে বিশ্বাসের গোড়াটা হঠাৎ হঠাৎ কিভাবে যেন ভঙ্গুর করে ফেলেন। আবার নিজের মাঝে ফিরে আসেন। তিনি তার সন্তানদের চোখে নিজেকে দেখেন। স্ত্রীর চোখে দেখেন। নিজের বৃদ্ধ বাবা মায়ের চোখে দেখেন। এমনকি কলিগ বা সমাজের অচেনা মানুষের চোখেও। নিজের ভিতর থেকে ভিন্ন চোখেও। স্রষ্টার চোখেও। তাতে নিজেকে দেখে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না। কূলহীন মধ্যসাগরে সাঁতরানোর অনুভূতি পান। বিচিত্র এক সম্পর্ক দাঁড়িয়ে যায় দুই বন্ধুর মধ্যে, যা একই সাথে বিশুদ্ধ এবং অশুদ্ধ। সময়ের সাথে সাথে সেই প্রেম আর বন্ধুত্ব- দুইয়ের মিশেল থেকে আসে সত্যিকার ভালোবাসা। তাতে যোগ হয় এক অসহায় লোকের টানাপড়েন। জীবন চলতে থাকে। চলতে থাকে সিদ্ধান্তের টানাহেঁচড়া। ।
★মামুনের অণুগল্প
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩