কৃষ্ণচুড়ার লালে চারিদিক বর্ণীল। সবুজের কিছু কিছু ঝলক উঁকি দিয়ে গেলেও, লালের আগ্রাসী প্রখরতায় ওরা বড্ড নিষ্প্রভ।
এই গাছের নিচে-দীঘির পাড়ে, বসে আছে একজন। নিষ্প্রভ.. বর্ণহীন..
ঝরাপাতার বিবর্ণতায় একজীবনের সকল দু:খকে বুকে বয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ কিছু সময় আগেও ওর জীবন ছিল উচ্ছল- ছল ছল নদীর ঢেউয়ের মতো আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাওয়া বল্গাহীন গতিময়।
যে কোনো কারণেই হোক, নীলার সম্পর্কটা এই কিছুক্ষণ আগেই ভেঙ্গে গেলো! রাসেল নিজেই হৃদয়ের লেনদেন চুকিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। ভালোবাসা কি ফেরতযোগ্য?
তাই তো করে দেখালো রাসেল। দুজনের হৃদয়ের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভালোলাগার পলেস্তারা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে, যার যার হৃদয়ের অন্যের অংশটুকু খুব ভালোভাবেই নিতে এসেছিল সে! নিজেরটুকু নিয়ে চলে যেতে পেরেছে ভেবে কি এখন তৃপ্ত রাসেল? ওর হৃদয়ে নীলার ভালোবাসার একটকুও কি ফেরত দিতে পেরেছে সে? ভালোবাসা কি এতই ঠুনকো?
ফাগুনের এই আগুন জ্বলা ভরদুপুরে, এক এলোকেশীর চুলকে নিয়ে উদ্দামতায় মেতে উঠেছে লিলুয়া বাতাস। তাতে যদি ওর বুকের জ্বালা একটু কমে। নিজের চোখের জলে বুক ভেসে যায় নীলার... কিন্তু হৃদয় নামের বিমূর্ত অবয়বে, বেদনার পাখিরা কি ওই আগুন জলের ছোয়ায় কেঁপে উঠে দূর আকাশে ডানা মেলে? দু:খগুলো হারিয়ে যায়? একসময় রাসেল নীলার চুল নিয়ে খেলা করতে ভালোবাসতো! হঠাৎ মনে পড়ে নীলার।
এক নীলাম্বরী, তার নীল বেদনাগুলি চোখের অশ্রু দিয়ে মেপে ভালোবাসার গভীরতা অনুভব করতে চায়। একটু হাল্কা হতে চায়। ভাবে- ওর ভালোবাসা কি তবে গভীর ছিল না?
ভালোবাসার মানুষকে ধরে রাখতে হলে, কতটা ভালোবাসতে হয়?
অন্তরের দু:খ- ব্যথা কি কিছু দিয়ে মাপা যায়! তেমন নিক্তি কি এই পৃথিবীতে আদৌ রয়েছে?
ভালোবাসা এমন শাঁখের করাত- যা যেতে আসতে কেবল যন্ত্রণাই দিয়ে থাকে। তাই বলে কি কেউ ভালোবাসে না.. ভালোবাসবে না?
বিষন্ন এক দুপুরে, নিজের মনে এক নিঃসঙ্গ নারী, একা একা ভাবতে থাকে.. জীবনের আর কতটুকু সময়?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:১৬