২০১৪ শেষ হয়ে ২০১৫ শুরু হওয়ার সময় সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল আইসিসের উত্থান। তারপর আস্তে আস্তে সময় গরালো দেখতে দেখতে পৃথিবী রাজনীতি বদলে গেল অনেকটা, বিশেষ করে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া ও আমেরিকার বৈরিতা যেটা সোভায়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার ২ যুগ পরে প্রত্যক্ষ করলো আবার এক ক্লোড ওয়্যার। দেখেছি কিভাবে ক্রামিয়া আলাদা হয়ে যাওয়ার মাধ্যেম ব্ল্যাক সি তে একছত্র নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করলো রাশিয়া। তেলের দামে ভয়াবহ রকম ধ্বস নামলো যা পুরো অর্থনীতিকেই করে দিল স্থির। বিশেষ করে ইরান ও সৌদি আরবের বাজেট বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। অন্যদিকে ইয়ামানে সৌদি আরবের অভিযান। সিরিয়া হয়ে গেল আগুনের স্ফুলিঙ্গ যেন এই আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে পুরো বিশ্ব কে ডেকে আনতে পারে মহাযুদ্ধ যাকে হাদিসের ভাষায় বলা হয়ছে মালহামা। আবার দক্ষিন চীন সাগরে ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের পর প্রথমবার জাপানের সংসদে আক্রমণাত্মক যুদ্ধ কে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যুদ্ধ কেউ চাই না তবে যায়নিস্টরা এই যুদ্ধ বাঁধানোর পুরো পরিকল্পনা করে রেখেছে সাথে নিউ ওয়াল্ড অর্ডার বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অলরেডি বিশ্ব কে দুই মেরু করণে ভাগ করা হয়ে গেছে একদিকে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া, চায়না, সেন্ট্রাল এশিয়া, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও পূর্ব ইউরোপের দেশ সমূহ আর অন্যদিকে ন্যাটো-আমেরিকা যায়নিস্ট এলায়েন্স। ইরান, ইন্ডিয়া, সৌদি আরব এখন দোটানায় ভুগছে।
২০১৫ তে ডলার অনেক টা দুর্বল হয়ে গেছে ICU থেকে ফিরে আসতে পারবে না তা অনেকটা নিশ্চিত আর কফিন অলরেডি তৈরি হয়ে গেছে ইউয়ান কে আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে গন্য করার মধ্য দিয়ে অনেক অর্থনীতিবিদদের মত মাইক মালোনি পূর্বেই বলেছিলেন তেলের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে জানুয়ারি-২০১৫ তে যা ছিল ব্যরল প্রতি ১০২$ তা ৭ মাসেই হয়ে গেল ৪২$। ইকনোমিক সার্কেলের পতনের মধ্যে এখন ২০১৬ কে ধরা হয়েছে ১৯৯৩....২০০০...২০০৮....২০১৬ এটা মাইক মেলোনি দের মত মনেটারি হিস্টোরিয়ান দের মুখে শুনা জেতেই পারে তবে, আশ্চর্য হওয়ার বিষয় হল দাজ্জালের আগমনের প্রতীক্ষাদর্শী ইয়ায়হুদি পেস্টর-রাবী জনাথন চেন যখন দাবী করনে ২০১৬ তে অর্থনীতির মহাধ্বস নামতে যাচ্ছে। এই রকম দাবী আছে আরও অনেক যে তাদের মাসিহা অর্থাৎ দাজ্জালের আগমন খুব সন্নিকটে তাই ইসরাইলী রাব্বি চাইম কেনেস্কি সকল ইয়াহুদিদের কে ইসরাইলে হিজরত করতে বলেছে।
অন্যদিক শত বছরে প্রথমবার অর্থোডোক্স খ্রিষ্টান চার্চ রাশিয়ার সিরিয়ার অভিযান কে পবিত্র ধর্ম যুদ্ধ নামে ঘোষিত করেছে। এটাই প্রমান করে ইয়াহুদী কম্যুনিস্ট নাস্তিক সোভায়েতের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ মুছে দিয়ে এক ধার্মিক রাশিয়ার আত্মপ্রকাশ হয়েছে যারা এখন ধর্মের নামে যুদ্ধ করে।
আর চির বৈরি প্রোটেস্টান ও ক্যাথলিক খ্রিষ্টান দের মধ্যে সম্পর্ক আরো উন্নত হয়েছে পোপ ফ্রান্সিস এর আমেরিকা সফরের মাধ্যমে আবার সিরিয়ার মধ্যে রাশিয়ার অভিযান, তুর্কী কর্তৃক রাশিয়ার বিমান ধ্বস, রাশিয়ার এস-৪০০ মিসাইল সিরিয়া তে পাঠানো আর ইউরোপের সিরিয়ান শরণার্থী সমস্যা ও সর্বশেষ প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা কে পোপ ফ্রান্সিস তৃতীয় ও মহাযুদ্ধে সূচনা বলে অভিহিত করেছেন। আর সকলকে আশ্চর্য করে কয়েকদিন আগে বলেছেন সম্মিলিত ভাবে এর পর থেকে আর ক্রিসমাস উৎযাপন করা যাবে না কারন ২০১৬ তে মহাযুদ্ধ বা খ্রিষ্টানদের ভাষায় আরমোগেডান হতে যাচ্ছে।
এই তো হলো খ্রিষ্টান ও ইয়াহুদিদের ইস্কেটোলোজি এই দিকে হিন্দুরাও পিছিয়ে নেই তাই মোদি কাবুলে ঘোষণা করলো অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা যেমন রাম রাজ্যতে ছিল আফগানিস্তানের কুন্দুজ পাহাড় থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত, আর এই একইভাবে বিজেপি’র জাতীয় সেক্রেটারি রাম মহাদেব ২৫ ডিসেম্বর আল-জাযিরা’য় দাবী করে খুব জলদি পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ মিলে একটা অখণ্ড ভারত কায়েম হবে এর প্রতিউত্তরে গাযওয়ায়ে হিন্দের কথাও শুনা যাচ্ছে। গ্রেটার ইসরাইল যে ভাবে ইসরাইলীদের একটা অনেক পুরাতন স্বপ্ন যা খুব সম্ভবত বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে ঠিক তেমনি হিন্দুদের ও স্বপ্ন গ্রেটার ইন্ডিয়া। ইয়াহুদি আর মুশরিক মুসলিমদের সবচেয়ে ঘোরতর শত্রু সুরাহ মায়িদায়ে স্পস্ট করে বলা হয়েছে। বাবরী মাসজিদে কে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে তার স্থলে রাম মন্দির তৈরি হবে ২০১৬ তেই। আর মাসাজিদে আঁকশা কে ভেঙ্গে হয়তো ৩য় টেম্পল বা টেম্পল অফ সলোমন বা দাজ্জালের দরবার প্রতিষ্ঠা হতে দেখতে পারি ২০১৬ তে।
সৌদি রাজবংশে শত্রুতা চরমে পৌঁছেছে যা অনেকে মনে করেন ইমাম মাহদির আগমন ক্ষেত্র বানাচ্ছে। আইসিস ও আল-কায়েদা উভয়ে নিজেদের ইমাম মাহদির সাহায্যকারী বাহিনী বলে দাবী করছে। আর অন্যদিকে মুসলিমদের পৃথিবী আর ছোট হয়ে আসছে প্যারিসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক গুলো মসজিদ বন্ধ ও হিজাবী নারীদের উপর পাথর নিক্ষেপ বেড়েই চলছে। শাইখ ইমরান নযর হোসেন ১ বছর আগেই বলেছিলেন পশ্চিম ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে মুসলিম দের হিজরত করতে, কিন্তু মডারেট মুসলিমরা স্বপ্নে ভাসছিল যে খুব কম সময় ইউরোপে মুসলিম মেজরিটি হতে যাচ্ছে। অপর দিকে মুসলিম দেশ সমূহে জঙ্গি বাদের ভয়ে সরকার সাধারন মুসলিম দের উপর আরো বেশি কঠোরতা দেখাচ্ছে, আর সাধারণ আলেম সমাজ বুকে হাত নাকি নাভিতে হাত নিয়ে বেশ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বাংলাদেশে পরপর হটাত কিছু জঙ্গিদের উত্থান লক্ষ্য হচ্ছে বিশেষ করে বেশ কয়েকটি মাসাজিদে বোমা হামলার মধ্যে দিয়ে আর প্রথম বার আমরা দেখলাম এই দেশে আত্মঘাতী হামলা আর খুব অত্যাধুনিক ওয়েপন জব্দ হতে। আল্লাহু আলাম
সাধারণ মানুষেরা মেতে আছে আজ পটকাবাজী ও বিভিন্ন জাহিলিয়াতে, খেলাধূলায় ও মুভি-সিনেমায় তবে যত জলদি কেটে গেল ২০১৫ ঠিক তার চেয়ে জলদি কেটে যাবে ২০১৬ কিন্তু এই অল্প সময় ঘটিয়ে দিতে পারে পৃথিবীর আমূল পরিবর্তন।
কি হতে যাচ্ছে ২০১৬ তে তা মহান আল্লাহই ভালো জানেন। যাইহোক একটা জিনিস স্পষ্ট আমাদের মুসলিম দের জন্য খুব কষ্টের হবে তবে এইটাই আশাজাগায় যে কষ্ট যত বারবে আমাদের সোনালী দিন তত নিকটে আসবে। রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে।