"That was the greatest team I ever played in because it was more than sport. My political
victories are more important than my victories as a professional player. A match finishes in
90 minutes, but life goes on. - Socrates"
সক্রেটিস, ব্রাজিল ও করিন্থীয় মিডফিল্ডার। হালকা গড়নের, দার্শনিক গোছের চেহারা, মুখে দাড়ি দু’পায়ে গোল করার সমান দক্ষতা এবং সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য তৎকালীন সময়ে অসম্ভব জনপ্রিয় ফুটবলারকে ভালবেসে ডাকা হতো "ডক্টর সক্রেটিস" বলে।
১৯৫৪ সালের এইদিনে ব্রাজিলের আমাজন তীরবর্তী বেলেম শহরে। সক্রেটিস ১৯৮২ এবং ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। অবসরের পরে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং দাতব্য চিকিৎসার সাথে যুক্ত হন। অতিরিক্ত ধূমপান এবং মদ্যপানের কারনে মাত্র ৫৭ বছর বয়সে ২০১১ সালে ৪ ডিসেম্বর পৃথিবার মায়া ত্যাগ করে চলে যান।
সক্রেটিস আর পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ তার এই নাম দেয়ার জন্য, তার পিতা আমাজনের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করেন এবং কোন ধরণের শিক্ষার ছোঁয়া না পেয়েও বিশাল জ্ঞানের পাঠাগার ছিলেন, তার গ্রীক দর্শনের প্রতি আগ্রহ থেকে ছেলের নাম সক্রেটিস দেয়া।
ফুটবল ইতিহাসে যে রেকর্ড তিনি গড়ে গেছেন তা এখন পর্যন্ত কেউ করেনি। মুলত ১৯৭৮ সালে করেন্থীয় ক্লাবের মাধ্যমেই তিনি প্রফেশনার ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং এই ক্লাবের মধ্যে দিয়েই উনি ক্লাবের একনায়তন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজের প্রতিবাদী মানসিকতার ও গনতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বের প্রকাশ করেন। ক্লাবের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা এর বিপক্ষে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠান লক্ষ্যে ক্লাবে দলের সকলে ভোটের দেয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের নামেন এবং দলের সকলকে এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত করেন। তিনি বলেন, 'ক্লাবের প্রেসিডেন্টের যা অধিকার থাকবে, একজন সাধারন কর্মচারীরও সমান অধিকার থাকতে হবে'। এই আন্দোলন পরবর্তী ‘করিন্থীয় ডেমোক্রেসি’ নামে অভিষিক্ত হয় এবং দলের গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ব্রাজিলে সে সময় একনায়তান্ত্রিক সামরিক শাসন চলছিলো। তখন তার দল করিন্থীয় ক্লাবকে সাথে নিয়ে দেশের গণতন্ত্র ফিরে আনার লক্ষ্যে গনতান্ত্রিক আন্দোলনে নেমে পড়েন। ফুটবলকে কাজে লাগে লাগিয়ে মাঠে শুরু করে গনতন্ত্রের আন্দোলন। মাঠে নামেন গনতন্ত্রের পক্ষে শ্লোগান সম্বলিত জার্সি পিছনে "Democracia Corinthiana" লিখে। দর্শক সারিতে থাকে ব্যানার। একসময় সে আন্দোলন রাজপথের আন্দোলনের সাথে মিশে গেলো, সক্রেটিস মাঠের বাইরে রাজপথেও যুক্ত হয়ে যান। এই আন্দোলন ফলে পরবর্তীতে ১৯৬৪ তে ক্ষমতায় আসা সামরিক শাসক প্রথমবারের মতো ১৯৮৫ সালে ভোটের মাধ্যমে দেশের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ টানা ২ বছর এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকে করিন্থীয় ক্লাব এবং সক্রেটিস যা সত্যিকার অর্থেই এক অনন্য ঘটনা যা ফুটবলের ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আর ঘটেনি।