কি প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে গেলেন। মনে মনে হয়ত বলছেন আইনস্টাইনকে জানোনা আবার তার ছবি নিকে দিয়েছ কিভাবে??
এ প্রশ্নটি আমি অনেকেই করেছিলাম: আইনস্টাইন আসলে কি করেছিলেন? বেশির ভাগেরই উওর ছিল তিনি বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। কেউ কেউ আবার বলেছিলেন তার সেই বিখ্যাত সমীকরনের E=mc^2 এর কথা ।
আইনস্টাইনের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা তার জীবনের মজার মজার দিক নিয়ে আলোচনা করি। যেমন তিনি খুব সুন্দর বেহালা বাজাতের পারতেন, মাঝে মাঝে বাসার ঠিকানা ভুলে যেতেন, শেইভ করতেন সাবান দিয়ে। আবার আমরা ব্যপক অর্থে মেধাবী মানুষকে বুঝাতে আইনস্টাইন বিশেষনটি ব্যবহার করি।
তাহলে আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক পরিচয় কি?
এলবার্ট আইনস্টাইন!! বিজ্ঞান জগতের এক অন্যন্য স্রষ্টা এবং সংস্কারকের নাম। তিনি বিজ্ঞানকে দিয়েছেন নতুন এক পরিচয়। যে বিজ্ঞান স্থান, কাল আর ব্যক্তির উর্দ্ধে। বিজ্ঞান জগতে তিনি থিওরী অব রিলেটিভিটি বাংলায় যার নাম অপেক্ষিকতাবাদ এর সংস্কারক কিছু কিছু ক্ষেএে সৃষ্টিকর্তা।
বাংলা উইকি পিডিয়ার ভাষায়:
আলবার্ট আইনস্টাইন (জার্মান ভাষায়: Albert Einstein আল্বেয়াট্ আয়ন্শ্টায়ন্) (মার্চ ১৪, ১৮৭৯ - এপ্রিল ১৮, ১৯৫৫) জার্মানিতেজন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি তার বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত।
তার পরিচয় এর জন্য এই ভিডিওটি লক্ষ্য করুন।
আইনস্টাইন আসলে কি করেছিলেন?
এখানে আমি ধাপে ধাপে তার গবেষনা ও তত্ত্বগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
১. থিওরী অব রিলেটিভিটি
অনেকেই আইনস্টাইনকে থিওরী অব রিলেটিভিটির মূল স্রষ্টা মনে করেন। এটি একটি ভুল ধারনা!!!!
এই ধারনা টি আসলে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর বিভিন্ন সময়ের আবিষ্কার থেকে আস্তে আস্তে মানুষে সামনে আসতে থাকে। তবু বিখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্লাঙ্ক (১৯০৮ সালে) প্রথম এটি সম্র্পকে ধারনা দেন। আইনস্টাইন তাকে বিস্তৃত করেছেন, একে দিয়েছেন পুর্ণাঙ্গরুপ। আলো তরঙ্গ নাকি ইথার তা নিয়ে গবেষনার মধ্যেই লালিত হয়েছে এই থিওরী অব রিলেটিভিটি। মজার কথা হল আইনস্টাইন কিন্তু নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এই আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কীত গবেষণার জন্য নিয়ে গবেষনা করার জন্য। আলো আসলেই আলো হয়ে ধরা দেয়ে বিশ্ববাসীর কাছে আইনস্টাইনের জন্য।
থিওরী অব রিলেটিভিটির দুইটি আছে।
১.জেনারেল থিওরী অব রিলেটিভিটি এবং
২. স্পেশাল থিওরী অব রিলেটিভিটি।
থিওরী অব রিলেটিভিটি পুরো বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিই পরিবর্তন করে দিয়েছে। থিওরী অব রিলেটিভিটি আসলে একক কোন সূএ নয়। অনেক গুলো সূএের সমন্বয়েই এটি গঠিত।
থিওরী অব রিলেটিভিটির প্রথম দুই অধ্যয়ই তুলে ধরা হয়েছে বস্তুজগত সম্পর্ক আমাদের ভুল ধারনা গুলো। থিওরী অব রিলেটিভিটির আগে বিজ্ঞানের তত্ত্ব ছিল পর্য বেক্ষকের গানিতিক প্রমানের ভিত্তিতে ফলাফল। এর আগের বিজ্ঞানের কিছু কিছু তত্ত্ব সব জায়গায় খাটত না। কিন্তু আইনস্টাইন এই প্রথম থিওরী অব রিলেটিভিটির মাধ্যমে বলে বিজ্ঞানের সূএ সব জায়গায় সমান হতে হবে। আর এজন্য আমাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিই পরিবর্তন করতে হবে। এটি এমন একধরনের দৃষ্টিভঙ্গি যা সর্বক্ষেএে সমান এবং নিরেপেক্ষ(পর্যবেক্ষকের যে কোন ভুল ক্রটিমুক্ত)। এটি এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে স্থান কাল পর্যন্ত কোন বাধা হতে পারবে না।
আইনস্টাইন নিজের হাতে লেখা জেনারেল রিলেটিভিটি এর স্ক্রিপ্ট।
থিওরী অব রিলেটিভিটি এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো হল:
১. পদার্থবিজ্ঞানের সব সূএ সবজায়গায় সমান।
২. বস্তুজগতে বা মহবিশ্বে আলোর চেয়ে দ্রুতগতি সম্র্পন্ন আর কিছুই হতে পারে না। এটি চরম গতি(সেকেন্ডে ১৮৬০০০ মাইল)।
৩. আলোর গতি স্থান কালের সীমা অতিক্রম করে।
৪. সময় এবং কালের আপেক্ষিকতা। তাদের সর্ম্পক স্থাপন।
৫. আর E=mc^2 । এটা অবশ্য জেনারেল রিলেটিভিটির একটি বিষয়।
থিওরী অব রিলেটিভিটি এর উপর চারটি ভিডিও।
http://www.youtube.com/watch?v=6rl3Z9yCTn8
ভিডিও গুলো লোড হতে সময় নেয় তাই শুধু লিংক দিলাম।
http://www.youtube.com/watch?v=WgsKlSnUO0k
http://www.youtube.com/watch?v=W6o_-yTa168
http://www.youtube.com/watch?v=TSOPq9rZYcU
ভিডিও গুলো দেখার পর হয়ত অনেক কিছুই বুঝতে পারছেন। আসলে এই বিষয়টা অনেক গুলো সূএের উপর নির্ভরশীল। তাই কেউ চাইলেও এক বাক্যে এটি বলতে পারবে না। জাফর ইকবাল স্যারেই এই বইটি পড়ে দেখতে পারে। ডাউনলোড করুন এখান থেকে।
যাক অনেক কঠিন কঠিন কথা বলে ফেললাম তাই একটি কৌতুক দিয়ে আজকের পর্ব শেষ করব।
আইনস্টাইন কে একবার এক সংবাদিক প্রশ্ন করলেন “আপনি এক বাক্যে থিওরী অব রিলেটিভিটি টা বলতে পারবেন।”
আইন স্টাইন তখন বলেছিলেন এরকম:
"থিওরী অব রিলেটিভিটি হল এরকম যেমন আপনি যদি কোন সুন্দরী মেয়ের সাথে এক ঘন্টা থাকেন তখন আপনার কাছে এক মিনিট মনে হয় কিন্তু আগুনের শিখার উপরে এক মিনিট হাত রাখেন তখন একঘন্টা মনে হয়।"
তথ্যসূএ:
ছবি: উইকিপিডিয়া
ভিডিও: ইউটিউব
বিভিন্ন বই আর সাইট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৫৯