প্রিয় আকরামঃ
আজ তুমি কোথায় আমি জানিনা। তবু পলে পলে কেবল তোমাকেই উপলব্ধি করি। সেদিন তোমার প্রেম আমি ফিরায়ে দিয়েছিলাম। অথবা তোমার প্রেমকে গ্রহন করার ক্ষমতা আমার ছিলনা। তখন তুমি ছিলে মেডিক্যাল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। আমি সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি। বেরাতে গিয়েছিলাম ময়নামতি। লংপ্লেতে হেমন্ত ও সন্ধার হৃদয় আকুল করা গান আর ময়নামতির অপরূপ সৌন্দর্য। তোমার বয়স বাইস/ তেইস আমার সতের। সব মিলায়ে কী উন্মাতাল সে দিনগুলি। তুমি যে কখন আমার প্রতি দুর্বল হয়েছিলে একটুও বুঝতে পারিনি। আমি তোমার সাথে মিশেছি আমার সহজাত হাসি, খুশি ও আন্তরিক স্বভাবে। তোমাকে খুব ভালো লেগেছিল কিন্তু ভালোবাসার কথা কখনও মনে হয়নি।
যেদিন তুমি তোমার ভালোবাসার কথা আমার কাছে নিবেদন করলে ততদিনে আমি সোনার শিকলে বাধা পরেগেছি। আমার অভিভাবকেরা প্রতিষ্ঠিত একজনের সাথে আমার ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলেছে। সেই মুহূর্তে তাদের সাথে বিদ্রহ করার শক্তি, সাহস কোনটাই ছিল না আমার। সে-ই তুমি বললেই যদি মনের কথা দুদিন আগে বললেনা কেন?
বিয়ের পরে কোনদিনও তোমাকে মনে করতে চাইনি। স্বামীকে ভালোবেসেছিলাম মনপ্রান উজার করে। কিন্তু হৃদয় যার পাথর দিয়ে তৈরী সে কী করে দেবে আমার ভালোবাসার মূল্য? বার বার সে আমাকে শারিরীকভাবে আঘাত করেছে তীব্রভাবে। আর আমার কেবলই মনে পরেছে তোমার সেদিনের সেই ছল ছল আখি। আজ আমার জীবন পাথর হয়েগেছে। তোমার মুখও আমি ভুলেগেছি প্রায়। এখন এই অসহ্য কষ্টের মুহূর্তে তোমার সেই চোখ আমাকে পাগোল করে দেয়। এতদিনে তবে কি সময় এসেছে তোমার প্রেমের প্রতিদান দেয়ার? উত্তর আমি জানি না, তুমি কি জানো? তুমি কি জানো আমার এ জীবনের পরিনতি কি???
গুনিজনে কহেঃ
"অনুকূল আলো বাতাসে বেড়ে ওঠো"
আজকের এই আলো ও অনুকূল দখিনা সমীরন
আর নাও আসতে পারে আবার।
তখন কিন্তু শুধুই অনুশোচনা।