“কালকে যদি তুই চুল দাড়ি না কেটে ক্লাসে আসিস তোর একদিন কি আমার একদিন!কেমন লাগে দেখতে!নিজেকে কোনদিন আয়নায় দেখসিস?মনে তো হয় না!!”
খাওয়ার মধ্যে আচমকা এমন ঝাড়ি খেয়ে আরাফ কিছুক্ষন হাঁ হয়ে অপ্সরার দিকে তাকায় থেকে বলে,”না মানে সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে যায়।সারাক্ষন এমন বিধ্বংসী মুডে থাকিস কেন?স্কুলের হেড মিস্ট্রেসের মত”।
আরাফের কথা শুনে আরও দ্বিগুন স্বরে অপ্সরা বলে উঠে “আমার ইচ্ছা হইসে তাই।যা বলসি তাই করবি।কথা বাড়াবি না।”........................
অপ্সরাঃঅ্যাই কি হইসে তোমার???কোনদিকে তাকায় আস?আমি আসছি।দেখ না?
আরাফঃআজকে শেভ করে আসছি,দেখ.........
অপ্সরাঃসেটা তো দেখতেই পাচ্ছি।ঠিক করে বলতো কি হইসে তোমার।এমন করতেস কেন?
আরাফঃ ও।হুম।না মানে...কিছু না।হঠাত ওই দিনের কথা মনে পরল।
অপ্সরাঃকোন দিন?
আরাফঃ আরে ওইযে কলেজে।তুমি আমাকে চুল,দাড়ি নিয়ে বকা দিসিলা যে।
অপ্সরাঃ এমন ঝাড়ি কলেজ কেন,এখনো সপ্তাহে দুইবার করে খাও।কলেজে কোনদিনে?
আরাফঃবাদ দাও।
অপ্সরাঃ ওহ! মনে পরসে। তা অইদিনের কথা এতদিন পরে মনে পরার কারন?
আরাফঃজানি না।হঠাৎ করেই মনে করতে ইচ্ছা করল।আমার সেই চিঠিটা এখনও আসে তোমার কাছে?
অপ্সরাঃ তিন তিনটা বানান ভুল করসিলা মনে আসে?অপ্সরা নাম যে কেউ ওপ্সরা লিখতে পারে তোমার অই চিঠি না পড়লে জানা হত না!
আরাফঃআমার কি দোষ! আমার তখন কি অবস্থা ছিল সেটা আমি ছাড়া কেউ জানে না!তুমিও তো কম যাও নাই। হ্যাঁ করে দিলেই হয় সেখানে এক গাদা শর্ত দিসিলা।এই করা যাবে,এইটা করা যাবে না।মনে আসে?
অপ্সরাঃথাকবে না কেন?তুমি যেমন করে চলতা!শর্ত না দিলে মানুষ আমাকে দেখায় বলত পাগলের প্রেমিকা।নিজের ভালর জন্য ওইসব শর্ত দিসিলাম।নাইলে আমার কিছু যায় আসে না!
আরাফঃতোমার মনে আছে?আমরা প্রথম যেদিন রিক্সাতে ঘুরলাম?
অপ্সরাঃথাকবে না! স্যান্ডেল ছিড়ে গেসিল আমার।ওইদিনের কথা কিভাবে ভুলি??আর প্রথম পহেলা বৈশাখের দিন?আমি সারাদিন তোমার জন্য ক্যাম্পাসে বসে অপেক্ষা করলাম।তোমার কোন খবর নাই
আরাফঃআমার কি দোষ ছিল বল?ট্রেন না চললে আমার কি করার আসে?তারপর এসে তো ঠিকই রিক্সাতে ঘুরসিলাম।সেটা মনে নাই?ফালুদাতো ভুতকে খাওয়াইসিলাম!
অপ্সরাঃওমা!মা! তুমি খাওয়াবা না তো কে খাওয়াবে! আমাকে খাওয়ানো তোমার দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে পরে!
আরাফঃ হুম জানি!তবে যাই বল বাসায় গেলে খুব মিস করতাম তোমাকে!
অপ্সরাঃ এমন করে বলতেস জানি আমি করতাম না।বেয়াদ্দব ছেলে তোমার জন্য কম কষ্ট করসি!
আরাফঃ আচ্ছা কি খাবা?অনেকক্ষণ ধরে বক বক করতেসি।কিছু অর্ডার না করলে তুলে দিতে পারে!
অপ্সরাঃ তুলে দেয়ার সাহস আসে এদের?? জানি না।তুমি যা অর্ডার করবা তাই খাব।
আরাফঃ তুমি আর কি খাবা! পিৎজা আর মিল্কশেক!
অপ্সরাঃ সবই তো জান?তাইলে আর জিজ্ঞেস কর কেন?
আরাফঃকার্টেসি মেইনটেন।
অপ্সরাঃ হইসে আর ভাব নেয়া লাগবে না।তাড়াতাড়ি কর না প্লিজ।দেরি হয়ে যাচ্ছে!
আরাফঃ দেরি আর কই?একটা শাড়ি কিনতে কতক্ষন আর লাগবে?
অপ্সরাঃঅইসব তুমি বুঝবা না।তোমার বোঝার কথাও না।বিয়েটা যেহেতু আমার তাই চিন্তাটাও আমার!
আরাফঃ ওরেব্বাস!! কাকে বিয়ে করতেস?
অপ্সরাঃতোমাকে বলব কেন?
আরাফঃতাও ঠিক! আচ্ছা বাদ দাও।শুন আজকে একটু পাসপোর্ট অফিস যাওয়া লাগবে।
অপ্সরাঃকেন?
আরাফঃ একটা ছোট কাজ আসে।তোমার শাড়ি কিনে তারপর একটু যাব।ঠিক আসে?
অপ্সরাঃ তুমি যে কি কর না!আগে বলবা না? দেরী হলে খবর আসে!
আরাফঃ খবর করার সময় সারাজীবন পাবা।আপাতত পিৎজা খাও।
শাড়ি কেনা শেষে গাড়িতে উঠেই......
অপ্সরাঃ তুমি এতি বাজে বাজে জিনিস কিভাবে পছন্দ কর?
আরাফঃ এতদিন পরে বুঝলা?
অস্পরাঃ বুঝসি অনেক আগেই!আচ্ছা শুন পাসপোর্ট অফিসে তোমার কাজ কতক্ষনের?
আরাফঃ বেশিক্ষন না।কেন তোমার কি কাজ?
অপ্সরাঃ পার্লারে যাব।
আরাফঃ আমারতো বেশি সুন্দর বউ লাগবে না।পার্লার যাওয়ারতো কিছু নাই!
অপ্সরাঃ তোমার সব কিছুতে ফাইযলামি না করলে হয় না?
পাসপোর্ট অফিসে......
আরাফঃ যাও অইখানে বসে ছবিটা তুলো।
অপ্সরাঃ আবার ফাইযলামি!আমি ছবি তুলতে যাব কেন?
আরাফঃ পাসপোর্টের জন্য?
অপ্সরাঃ ধুর!আমার পাসপোর্ট কে বানাতে দিসে?
আরাফঃ কথা বাড়ায় না।এখন তুমিই দেরি করতেস।পরে পার্লারে যেতে দেরি হলে আমার দোষ নাই।
অপ্সরা ছবি তুলে এসে জিজ্ঞেস করেঃ এসবের মানে কি?
আরাফঃ সবই হল ভূটানটা বাদ রাখব কেন?