somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

জনরাষ্ট্র ভাবনা-৭

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংবিধানের ত্রুটি-বিচ্যুতি, অসঙ্গতি: (২)

আরো একটি ছোট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে। দুইটা খুব ছোট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে এই কারণে যে পরে যখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে তখন সংবিধান প্রণয়নকারীদের মাইন্ড সেট, আইন, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের জ্ঞান বা সীমাবদ্ধতাগুলো সম্পর্কে ধারণাটা পরিষ্কার থাকবে।

ইতোমধ্যে সংবিধানের শুরুতেই যে ত্রুটি আছে তা চিহ্নিত করা হয়েছে, এই অধ্যায়ে সংবিধানের একেবারে শেষে যে ত্রুটি তা চিহ্নিত করা হবে। সংবিধানটি ত্রুটি দিয়ে শুরু এবং শেষ হয়েছে।

ভুল, না চালাকি, না প্রতারণা?

সংবিধানের ভাষাটা বুঝার জন্য প্রথমেই সংবিধানের ১৫৩ ধারার (২) ও (৩) উপধারা হুবহু উদ্ধৃত করছি (এটাই সংবিধানের সর্বশেষ ধারা):

(২) বাংলায় এই সংবিধানের একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ ও ইংরাজিতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুমোদিত পাঠ থাকিবে এবং উভয় পাঠ নির্ভরযোগ্য বলিয়া গণপরিষদের স্পীকার সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।

(৩) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা-অনুযায়ী সার্টিফিকেটযুক্ত কোন পাঠ এই সংবিধানের বিধানাবলীর চূড়ান্ত প্রমাণ বলিয়া গণ্য হইবে;

তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরাজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


ইংরাজীতে অনুদিত এই দুইটি শব্দ পড়লে মনে হবে সংবিধানটা বাংলা থেকে ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে। সহজ কথায় এমন একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে মূল সংবিধানটা প্রথমে বাংলায় লেখা হয়েছে পরে সেটা ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে সংবিধানটি প্রথমে ইংরেজীতে লেখা হয়েছিল পরে সেটা বাংলায় অনুবাদ করা হয়। এই ক্ষেত্রে সত্যের খাতিরে লেখা উচিত ছিল, "ইংরেজিতে এই সংবিধানের একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ ও বাংলায় অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুমোদিত পাঠ থাকিবে" কিন্তু সত্যকে আড়াল করার জন্য এই ধরণের চালাকি (খারাপ অর্থে প্রতারণা) করার বার্থ চেষ্টার কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমল হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও সব আইন ইংরেজিতে প্রণয়ন হতো। ১৯৮৭ সালে এরশাদের আমলে "বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭" ( ১৯৮৭ সনের ২ নং আইন ) প্রণয়ন হওয়ার পর থেকে বাংলা ভাষায় আইন প্রণয়ন শুরু হয়।

তাছাড়া সংবিধান যারা প্রণয়ন করেছিলেন তারা মূলত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন বা আইন বিষয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন। ঐ সময় বিদ্যমান আইনসমূহ যেহেতু ইংরেজিতে ছিল, এবং যেহেতু বিভিন্ন দেশের সংবিধান তাদেরকে ইংরেজিতে পড়তে হয়েছে এবং যেহেতু তাদেরকে আদালতে পেশাগত কারণে সব আর্জি, দরখাস্ত, ড্রাফট ইত্যাদি ইংরেজিতে লিখতে হত এবং যেহেতু আইনে ব্যবহৃত ইংরেজি ও ল্যাটিন শব্দ ও শব্দ-বন্ধগুলির বাংলা পরিভাষা বা বাংলা প্রতিশব্দ ছিল না বা তাদের জানা ছিল না সেই কারণে ইংরেজিতে সংবিধান প্রণয়ন করার পক্ষে একটা জোরালো যুক্তি আছে। অর্থাৎ মূল সংবিধানটি ইংরেজি ভাষায় প্রণয়ন করে তারা অন্যায় কিছু করেন নাই। পরে বাংলাভাষার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। অসৎ মন মানসিকতা ছাড়া এই বাস্তব সত্যটা লুকানোর কোন প্রয়োজন ছিল না।

হীনমন্যতা বোধ এবং নিজের উপর আস্থা হীনতার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জোড়াল যুক্তি এবং কারণ থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। আরেকটা কারণ হতে পারে মিথ্যা অহংকার বোধ এবং আত্মম্ভরিতা। আরো একটা জোরালো কারণ হচ্ছে নাগরিকদেরকে গুরুত্ব না দেয়া এবং ছোট করে দেখা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×