এই পর্যায়ে একটু মায়া মায়া দৃষ্টি আমার উপর বর্ষিত হল আর ঠাশ করে চড় পড়ল বড় কন্যার গালে, "মুখে খাবার জমায়া রাখস ক্যান?"
আমি আরেকটা ঢোঁক গিলে সটান উঠে আসলাম টিভি রূমে। বুঝলাম যুগে যুগে সব সুখী পরিবারেই এইরূপ মধুর ঝগড়া হয়ে আসছে, এবং চলতেই থাকবে। টিভি তে অযথাই কিছুক্ষন চ্যনেল ঘুড়িয়ে হাই তুলে আবার ঝগড়া করতে ফেরত আসলাম বেডরুমে।
এইবার কৌশলে আমাকে দৈনন্দিন জীবনে কি কি "বিপজ্জনক" কাজে ব্যাস্ত থাকতে হয় তার ফিরিস্তি দিয়ে ঝগড়ায় নতুন এঙ্গেল আনবার চেষ্টায় রত আমি। অবশ্য ফলাফল বরাবরের মত পরাজয়েই পর্যবসিত হল। অতঃপর তাই ব্লগে বসেই সেই ফিরিস্তিটাকে একটু রং চড়িয়ে ছড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হল।
জঙ্গি বৈমানিকের প্রাথমিক যোগ্যতা
একজন জঙ্গি বৈমানিক মানে হচ্ছে একজন সুস্থ মানুষ। তার হৃদয়, ফুসফুস, চোখ, মস্তিস্ক, হাত, পা , নাক, কান, গলা, পেট, রক্ত ইত্যাদি সব ঠিক আছে। (পাত্র খুজছেন যারা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি!!!) এর বাইরেও তিনি মানসিক ভাবে অত্যন্ত শিথিল একজন মানুষ যিনি যেকোনো সমস্যাকে অগ্রাহ্য করে ঠাণ্ডা থাকতে পারেন। না ভাই, তিনি Superman না, তবে তার কাছাকাছি একজন। হে হে।
একজন জঙ্গি বৈমানিককে একটি Balanced জীবন যাপন করতে হয়; যেখানে দৈনন্দিন জীবনের সব চাপকে টপকে তিনি নিজেকে ফ্লায়িং ফিট রাখেন। আমার মনে হয় একজন বৈমানিকের জীবন যাপন তাই অনুসরণ করা যেতেই পারে।
একজন জঙ্গি বৈমানিকের সবচাইতে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে তার দু'জোড়া চোখ। হ্যা, একজোড়া চর্ম চক্ষু; আর একজোড়া অন্তরচক্ষু। চর্ম চক্ষুর সক্ষমতা হতে হবে ২০/২০। যাকে ইংরেজিতে বলে Visual acuity (VA)। সহজ বাংলায় বললে, ২০ ফুট দূরের কোন বস্তুকে আলাদা করে সনাক্ত করতে পারার ক্ষমতা। খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাবার সময় ২০ ফুট দূরের গাছে যাতে আপনি লটকে না যান সেইটা ensure করাই লক্ষ্য আরকি। মানুষের চোখে দেখা আর সেই অনুযায়ী দ্রুত কাজ সম্পাদনে মস্তিষ্কের একটি অংশ কাজ করে। যাকে ইংরেজিতে বলে Reflex. চোখে দেখা আর কাজ করা তাই এক বিষয় নয়। এই “অন্তরচক্ষু” একজন জঙ্গি বৈমানিকের জীবন আর মরনের মাঝে পার্থক্য গড়ে দেয়। চোখে দেখা আর তা কাজে রূপান্তরের জন্য একজন জঙ্গি বৈমানিককে OODA LOOP নামক একটি জটিল হিসেবের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রথম O তে Observe (দেখা), দ্বিতীয় O তে Orient (বোঝা), D তে Decide (সিদ্ধান্ত গ্রহণ) এবং A তে Act (কাজ করা)। এবং এই Loop টি সম্পন্ন করতে তিনি সময় পান ০.০৩ সেকেন্ড।
তাই একজন বৈমানিক হতে হলে অবশ্যই চোখের যত্ন নিতে হবে।
চোখের জন্যে উপকারী ভিটামিন A যুক্ত খাবার গ্রহণ এবং চোখের যত্নে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন অন্ধকার ঘরে বসে টিভি না দেখা, দীর্ঘ সময় পিসি’র সামনে বসে না থাকা, অতি বেগুনী রশ্মি প্রতিরোধকারী রোদ চশমা পড়া , ধূমপান না করা, প্রচুর পরিমানে গাজর খাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:০১