somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে আমাদের অনুকরণীয়

২০ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পৃথিবীর যে সব দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড সেইসব দেশে ধর্ষণের মত ঘটনা অনেকাংশে কম । আর যে সব দেশে কিছু দিন জেল বা সাধারণ শাস্তি বা অনেক ক্ষেত্রে কোন বিচার হয় না। সে সব দেশের ধর্ষণের সংখ্যা কমে না বরং বৃদ্ধি পায় প্রতিনিয়ত।

আমাদের দেশের ধর্ষণ নিয়ে প্রকাশিত কিছু পরিসংখ্যানের দিকে যদি থাকাই তাহলে দেখতে পাই। জুন ২০১৯ আইন ও শালিস কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত বুলেটিন ধর্ষণ ও আমাদের বাস্তবতা প্রবন্ধে লেখা হয় ২০১৯ সালের প্রথম ৫মাসে ( জানু- মে) ৪৭৫ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গণ ধর্ষণের ঘটনা ১১৭ টি, অনধিক ছয় বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫০টি। ধর্ষণ পরবর্তীতে হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ২৮টি । ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৭টি এবং ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ৭১ টি । এর মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্তৃক ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাও রয়েছে। একই সংগঠনের ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী। একই সংগঠনের ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮১৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে ৪৭ জন নারীকে ।
দেশে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে কথিত মজনু ধর্ষণ করেছে সেও একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। ধরে নেওয়া যায় মজনুর নেশা ও পেশা হচ্ছে ধর্ষণ করা। এর আগে যদি তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতো বা তাকে আইনের আওতায় আনা যেত তহালে নিশ্চয়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি তার শিকারে পরিণত হতো না। আর বর্তমানে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে এ থেকে যদি তাকে যদি সাধারণ শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে মুক্তি পাওয়ার পর সে আবার এই কাজে জড়িয়ে পরবে।


এখন আসি বহুল আলোচিত ২০১২ সালে নয়াদিল্লীতে চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এই ঘটনা সে সময় ‘নির্ভয়াকাণ্ড’ নামে পরিচিতি পায়। নির্ভয়া কে ধর্ষণের পর হত্যা নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় এর ফলে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো ভারত। সাথে সাথে এধরণের বীভৎস ঘটনার জন্য বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে ধর্ষণ বিরোধী নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। ভারতে ২০১৫ সালের পর এই প্রথম মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হলো। ২০১৩ সালে দেশটির বিচারিক আদালত এই চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ভারতের দিল্লিতে ২০১২ সালে চলন্ত বাসে নির্ভয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায়ে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। চার আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। চার আসামি হলেন অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা ও মুকেশ সিং। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে দিল্লির তিহার জেলে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা
এ ঘটনা ভারতসহ সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। ধর্ষণের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রাম সিং নামের এক অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ২০১৩ সালের মার্চে কারাগারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেন। ধর্ষণের সময় যে আসামির বয়স ১৭ বছর ছিল, তাকে ২০১৫ সালে মুক্তি দেওয়া হয়।


ধর্ষণ করলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শাস্তির দিকে যদি আমরা একটু খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাই। যেমন-

• চীন: ধর্ষণ প্রমাণ হলেই আর কোনও সাজা নয়, বিশেষ অঙ্গ কর্তন এবং সরাসরি মৃত্যুদণ্ড। অন্য কোন শাস্তি নেই।
• ইরান: ধর্ষককে ফাঁসি, না হয় সোজাসুজি গুলি করা হয়। এভাবেই ধর্ষককে এদেশে শাস্তি দেওয়া হয়।
• আফগানিস্তান: ধর্ষণ করে ধরা পড়লে চার দিনের মধ্যে ধর্ষকের মাথায় সোজা গুলি করে মারা হয়।
• উত্তর কোরিয়া: অভিযোগ, গ্রেফতার আর তারপর অভিযোগ প্রমাণ হলে গুলি করে হত্যা করা হয়।
• সৌদি আরব: জুম্মার নামাযের পর ধর্ষককে প্রকাশ্যেই শিরশ্ছেদ করা হয়।
• সংযুক্ত আরব আমিরাত: সাত দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
• সৌদি আরব: শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে জনসমক্ষে শিরশ্ছেদ করা হয়।
• মঙ্গোলিয়া: ধর্ষিতার পরিবারের হাত দিয়ে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
• মিশর: ধর্ষককে জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়।

উপরের দেশগুলোতে ধর্ষণের মাত্রাও খুব কম। মৃত্যুদণ্ডের মত ভালো ঔষধ আর হতে পারে না। এর দুটি ভালো দিক আছে। ১. বর্তমান অপরাধী নির্মূল করে। ২. একই অপরাধের জন্য নতুন অপরাধী খুবই কম তৈরি হয়।
ভারতের মত দেশ যেখানে মৃত্যুদণ্ড দিতে অনীহা প্রকাশ করে ২০১৫ সালের পর মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে প্রমাণ করলো ধর্ষণের ব্যাপারে মৃত্যুদণ্ড ছাড়া কোন ভাবেই এ অপরাধ রোধ করা যাবে না। তাই ধর্ষণের মত বীভৎস মহামারির হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের দেশেও মৃত্যু দণ্ডের বিকল্প আছে বলে আমি মনে করছি না।

শাহাবুদ্দিন শুভ
প্রধান সম্পাদক, সিলেটপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২১
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×