মৃত্যুভয়, ইন্দ্রচাপ
দুটি কবিতা
প্রান্তস্বর। সম্পাদক : ইকতিজা আহসান
বর্ষ ৯ম, ১১তম সংখ্যা, ফেব্রুয়ারি ২০১৭
মৃত্যুভয়
ঘুমুতে যাবার আগে জেগে ওঠার খাটুনি
অসহ্য হয়ে উঠছে,
আমি আর বেঁচে থাকতে পারছি না
অথচ, আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়;
শুধু কষ্ট আর নিঃসঙ্গতা তাড়া করছে
যন্ত্রণা পাচ্ছি নিজে
তবু বলছি না এ-জীবন চাই না।
পৃথিবীতে আমার মতন সুখী আর কেউ নেই
কখনো এমন সত্যি করে বুঝিনি
আমার ঈশ্বর, স্বর্গীয় বন্ধু, সেও একা
ভীষণ।
একজন মানুষ
স্নেহ আছে
ভালোবাসা আছে
আছে বন্ধুত্ব,
তবু সে জুয়াড়ি
স্বপ্নের কাছে বন্দি।
তৃপ্তিহীন আত্মা
অমৃতেরে দেয় সালাম
আত্মার গহনে গন্ধ ঢালে চিরন্তনতার
শাশ্বত সৌরভ কৌটো করে রাখে সংগোপনে
ভুলে যাওয়া কোনো ধূপদানি জ্বলে রাতভর
অসীমের গহ্বরে অদৃশ্য মায়াজাল যেন উদ্ভ্রান্ত উদ্বাস্তু।
ঘুমুতে যাবার আগে কাগজে বিদায়পত্র লিখি
প্রিয়তমা, নিজেকে মিশিয়ে দিতে চাই বিষাক্ত কালিতে
যতটুকু আছে তার বাকি...
ইন্দ্রচাপ
সত্যের অন্বেষণ মানুষকে অনেক সময় ঘরছাড়া করে
ব্যক্তিজীবনে গার্হস্থ্য প্রেম তাকে বাঁধতে পারে না
দারিদ্র্য ও মুক্ত জীবন প্রেমে ও প্রেরণায়—
কখনো ধর্মের মুখোশ খুলে দেয়,
দর্শনের মহত্ত্ব কখনো ধর্মকে আঁকড়ে বাঁচে না।
কঠিনতম মুহূর্তে স্থির, অবিচল থাকা কোনো কল্পনাবিলাস নয়
বরং হৃদয়ের দুর্বলতা কেটে যায়
চরিত্রে দেখা দেয় তেজস্বী রোমান্টিকতা
চিন্তার রাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার এই সুসময়
শুধু হিংসে নয়, নিজেকে ভালোবাসুন।
স্বর্গের বধূ হলেও, নারীর প্রতি বিশ্বাস আটকে রেখো না
নারী কখনো বিকল্প হতে পারে না
নিরীশ্বরবাদই একমাত্র মুক্তির পথ নয়
ধর্মের মধ্যে সারবস্তু কিছু নেই
তবু তাকে ছেড়ে যেয়ো না।
দারিদ্র্য দূর করতে জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন সব থেকে বেশি
ভারি ব্যাগ কাউকে বইতে দিয়ো না
বরং ওজন কমিয়ে ফেলো
কখনো বলো না, বাবা-মা সন্তানের সব থেকে খারাপ অভিভাবক
ফ্রি ম্যারেজের চেয়ে দশবার বিয়ে করা ভালো।
হৃদয়ের রক্ত দিয়ে যে কাউকে ভালোবেসো
নারী কিংবা পুরুষের শক্তি নয়
মানুষের শক্তিতে বিশ্বাস রাখো
ধর্মের প্রবক্তা হয়ো না, ঈশ্বর হও
ভালো থাকো নিজস্ব ব্যাকুলতায়...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২৪