somewhere in... blog

ওয়াজ মাহফিলের আড়ালে জঙ্গি প্রচারণা বন্ধ করুন

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়াজ মাহফিল ও ইসলামী জলসার নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতে ইসলামের নেতারা রাজনীতি করছেন। সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন এবং সাধারণ মুসলিমদের তথাকথিত জিহাদে উদ্বুদ্ধ করছেন। গত রোববার প্রকাশিত একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাটোরের এক গ্রামে অনুষ্ঠিত ওয়াজে হেফাজতের নেতারা যোগ দেন। তারা বলেন, বর্তমান সরকারের হাতে ইসলাম নিরাপদ নয়। সরকার নাস্তিকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে কিন্তু আলেম-ওলামাদের নানাভাবে হেনস্তা করছে। তারা আরও বলেন, ভারতের সহায়তায় সরকার দেশকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছে। ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের জন্য ওয়াজ মাহফিল থেকে জেহাদের ডাক দেয়া হয়। ওয়াজ মাহফিলে বলা হয়, ইহুদিদের অর্থায়নে দেশের এনজিওগুলো নারীদের বেপর্দা করছে ও অসৎ কর্মে লিপ্ত করছে।

নাটোরের ঘটনাটি একটি উদাহরণ মাত্র। কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ওয়াজ মাহফিল বা ইসলামী জলসার নামে সরকারবিরোধী ধর্মীয় উসকানিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এটি একটি সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ কাজে মূলত নেতৃত্ব দিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। কওমি মাদ্রাসাকে পুঁজি করে তারা নিয়মিত এই প্রচারণার আয়োজন করছে। এসব আয়োজনে পেছন থেকে মদত দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, অনেক ওয়াজ মাহফিলে ধর্মীয় জঙ্গিরা বিশেষ করে জেএমবির জঙ্গিরা উপস্থিত থাকে। সাধারণত শীতকালে ওয়াজ মাহফিল বা ইসলামী জলসার আয়োজন করা হয়। কিন্তু শীত শেষে গরমের মৌসুমেও দেশজুড়ে এই আয়োজন চলছে। বিষয়টা অস্বাভাবিক। ধারণা করা হচ্ছে, জুনের পর থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করা হবে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠী তৎপর হয়ে উঠেছে বা তাদের নেপথ্য থেকে উসকানি দেয়া হচ্ছে। অনেক ওয়াজ মাহফিলে আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির অডিও বার্তা প্রচার করে জিহাদের ডাক দেয়া হচ্ছে। তথাকথিত ইসলামপন্থি কিছু উগ্রগোষ্ঠী এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এসব ইসলামপন্থি গোষ্ঠীর সঙ্গে জামায়াতের সখ্য রয়েছে।

জামায়াত-হেফাজতের নেতৃত্বে একাধিক উগ্র ইসলামপন্থি ও জঙ্গিগোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই চক্রটিই গত বছর ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে তা-ব চালায়। তাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশকে বর্বর মধ্যযুগে নিয়ে যাওয়া। এই গোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

দেশে উগ্র জঙ্গিবাদ দমনে বর্তমান সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। ৫ মে হেফাজতের ভয়াবহ তা-বের বিচার আজও শুরু হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, সরকার হেফাজতের নেতাদের বিচার না করার কৌশল নিয়েছে। গত সোমবার প্রকাশিত একটি দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তিনটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও হেফাজত নেতা মুফতি ইজহারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। উগ্র ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে আপসরফা করে সরকার লাভবান হবে কিনা সেটা সরকার জানে। তবে এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের নেতৃত্বে জঙ্গিবাদী প্রচারণা চলছে, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জিহাদ করার জন্য উসকানি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার ঘুমিয়ে আছে। যেন হেফাজতের এই জিহাদি জঙ্গিবাদী উসকানিমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকারের কিছুই করণীয় নেই। দেশে যেন জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা না পায় সেজন্য সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়াজ মাহফিলে যারা জঙ্গিবাদের প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়াজ মাহফিলে জঙ্গিবাদের প্রচারণা কঠোরহস্তে বন্ধ করতে হবে।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরাকানে 'স্বাধীন মুসলিম রাজ্য' প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১২


বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি একটি ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা আসলে হাস্যকর এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি , এবং চীনের ভূ-রাজনীতির ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

১০০ টা নমরুদ আর ১০০ টা ফেরাউন এক হলেও একজন হাসিনার সমান নৃশংস হওয়া সম্ভব ছিলো না!!

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৫২

সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য কবর খুঁড়তে হয়েছিলো ২ টা।
একটা না।
ফাঁসির ৪ ঘন্টা আগেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী জানতেন না, আজকেই তাকে যেতে হবে।
ফ্যামিলি যখন শেষবারের মতো দেখা করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিলিস্তিন নিয়ে এতো লাফালাফির কি আছে?

লিখেছেন অপলক , ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:১০

ফিলিস্তিনে গত ৩ বছরে মারা গেছে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫১ হাজার। বাংলাদেশে ১৯৭১এ মাত্র ৯মাসে মারা গেছে ৩ লক্ষ, যদিও শেখ মুজিব বলেছিল, ৩০ লক্ষ।
কোথায় ৫১ হাজার কোথায় ৩০ লক্ষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন ...

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:১৯





****
আরো দেখতে চাইলে ভেতরে আসেন ...







...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

"হুজুগে-গুজবে বাংগালী"- বলে আমাদের একটা দুর্নাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। গুজব আর হুজুগ যমজ ভাই।
গুজব বা হুজুগের সবকিছু মানুষ কিনতে পারে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্যোতনা দেয় অন্ধ বিশ্বাস।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×