“বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে!
বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধতে তিনটি ইঁদুরের দরকার।
তিনটি ইঁদুরের ঐ সুইসাইড স্কোয়ার্ড দরকার।
একটা ইঁদুরকে মুখে কামড়ে ধরবে বিড়াল।
আর দুটো বিড়ালকে সামনে দুই পায়ে চেপে ধরেবে।
তারপরে চতুর্থ ইঁদুর গলায় ঘন্টা বাঁধবে।
তো এই তিন ইঁদুর পাওয়া যায়না,
কাজেই বিড়ালের গলায় ঘন্টাও বাাঁধা যায় না্।” ---- (পৃষ্ঠা:১৬৫)
কোন বইয়ের ১৬৫ নং পৃষ্ঠা তা বলার আগে ভূমিকাটা বলে নেই।
আমার বর্তমান পড়ার বিষয় - “নারী”
হুমায়ুন আজাদের বই “নারী’ না। নারীর নারী।
তবে নারী বিষয়ে পড়তে গিয়ে হুমায়ুন আজাদের ‘নারী’ আমাকে পড়তে হয়েছে।
পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেছি।
ক্লান্তি কাটানোর জন্যে গেলাম ৫০০ বছর আগের শহর ‘পানাম সিটি’ ।
না ক্লান্তি কাটে না।
এই জাতীয় ক্লান্তি কাটানোর জন্যে আমি যা করি- হুমায়ুন আহমেদের একটা বই পড়ে ফেলি।
কিন্তু তার বই বোধহয় আর বাকী নেই পড়ার। অথবা দু একটা থাকলেও ধারে কাছে পাচ্ছিনা।
যাক সে কথা।
ভেবে দেখলাম ইন্টারভিউ জাতীয় বই পড়া যেতে পারে।
তাতে কনসেনট্রেশন কম লাগবে।
আবুল আহসান চৌধুরীর “আলাপচারী আহমদ শরীফ” পড়ে ফেললাম। ২০৭ পৃষ্ঠা।
উপরের কোটেশন এই বইয়ের।
প্রথম দিকে বেশ ঝড়ঝড়ে অনুভুতিই হচ্ছিল।
পরে কথার প্রসঙ্গ কঠিনতর লাইনে চলে যাচ্ছে।
সব ভারি ভারি কথা আরকি।
তবে টুইস্ট আছে।
একটা কোট করি।
“আমি এই পর্যন্ত দেখেছি সাংবাদিক মরে গেলেই ‘নির্ভীক সাংবাদিক ছিল’ বলে।
কিন্তু যতোদিন বেঁচে থাকে সে নির্ভীকতা কখনো কারো দেখা যায় না,
এর পরে তিনি বলেছেন- ইউ মাস্ট স্পিক আউট এ্যান্ড সাফার।
এই কথাটা ব্যাখ্যাপূর্বক তিনি বলেন-
এই যে একটা দেশ দুইশ চারশো পাঁচশো ছয়শো বছর ধরে অধীন রয়েছে
সে ঐ প্রান দেওয়ার লোক নেই বলে। আমি একটা রূপক দিয়ে কথাটা বোঝাই- যে গপ্পোটা তোমার জানা- যে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে !..... (পরের অংশ শুরুতে পড়েছেন)।
আর একটা কোট করি-
“ডিজায়ার নট এনিথিং ফর আদার্স হুইচ ইউ ডু নট ডিজায়ার ফর ই্ওরসেলফ” পৃ: ৬৯।
এই লোক কাউকে ছাড়েননি।
সাহিত্য বিশারদ আবদুল করিম তার আপন চাচা।
তাকে তিনি শ্রদ্ধা করেণ।
আহমদ শরীফ যখন ইন্টারমিডিয়েটে পরেণ তখন রোজার দিনে তিনি রুমে লুকিয়ে লুকিয়ে ভাত খাচ্ছিলেন।
তাই দেখে চাচা সাহিত্যবিশারদ তাকে বললেন- “আল্লাহর ভয় না থাকলে মানুষের ভয় কি?’
আহমদ শরীফের ভাষায়- এই যে কথাটা বলেছে এরপর থেকে আর আমি মানুষকে ভয় পাই নি।”
সাহিত্যবিশারদ আরো বলতেন-“ যতোটুকু নামবে, ততোটুকু ভিজবে।”
বইটায় নানান বিষয় আর নানান মানুষের আলোচনা আছে।
বৃটিশ শাষন, দেশভাগ, স্বাধীনতা, ভাষানী থেকে খালেদা;
ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্য, মতবাদ, ধর্ম, এমনকি সিনেমাও।।
............
..........
এখন আমি ক্লান্ত। ক্লান্তি কাটাতে এসে আবারও ক্লান্ত হয়ে গেলাম।
ঐরকম আরকি- “কুইনিন জ্বর সারাবে, কুইনিন সারাবে কে?”
.........
......
...
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:২২