somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বায়ন একটি সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত ইহুদী ষড়যন্ত্র

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীনকাল থেকে মুনি-ঋষিরা, ধর্ম প্রবর্তকরা, মরমিয়া সাধকরা, কবিরা, দার্শনিকরা নানাভাবে মানবজাতির ঐক্য ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের কথা বলে আসছেন। তাদের চিন্তা বিমূর্ত এবং বক্তব্য নৈতিক আবেদনে সীমাবদ্ধ। তাতে আর্থ-সামাজিক-রাষ্ট্রিক বিষয়াদির বিবেচনা নেই। বিশ্বব্যবস্থা দূরের কথা, রাষ্ট্রব্যবস্থার কথাও তারা ভাবেননি। আজকের বিশ্বায়নের মতবাদ ও কার্যক্রম সে রকম স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাপার নয়। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিকাশের ফলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবকিছুর বিশ্ব বিস্তৃত হয়ে পড়ার মধ্যেও বিশ্বায়নের পরিচয় সীমাবদ্ধ নেই। আজকের বিশ্বায়ন সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত ব্যাপার। এর কর্তৃপক্ষ আছে, সেই কর্তৃপক্ষের আধিপত্যনীতি, কূটনীতি, গোয়েন্দানীতি, প্রচারনীতি, লগ্নিপুঁজি, সামরিক আয়োজন ও আগ্রাসী যুদ্ধ আছে। এই বিশ্বায়নের অঘোষিত লক্ষ্য ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক বিশ্ববিস্তৃত এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
বিশ্বায়নের এই মতবাদ গড়ে তোলা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও জীবপ্রযুক্তির বিপ্লব (১৯৮০-এর দশক) ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির (১৯৯১) ধারাবাহিকতায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি উদ্যোগে ও তৎপরতায়।
ফরাসি বিপ্লবের (১৭৮৯) পর পশ্চিম ইউরোপ থেকে ক্রমে পূর্ব ইউরোপে এবং শেষে পৃথিবীর সব দেশে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের নিয়ামক হয়ে ওঠে তিনটি আদর্শ : জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপের (১৯৯১) পর যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে তাতে এগুলো আর আগের মতো আবেদনশীল ও কার্যকর নেই। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীরা পুঁজিবাদী ‘আধিপত্য ও নির্ভরশীলতানীতি’ নিয়ে সবকিছুকে পুনর্গঠিত করে চলছে বিশ্বায়নের ধারায়। আজও যারা মরমিয়া সাধকদের মতো স্বতঃস্ফূর্ত ধারায় চিন্তা করেন তাদের চিন্তা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়।
রুশ বিপ্লবের (১৯১৭) পর থেকে বিশ্বব্যবস্থা ছিল দ্বিকেন্দ্রিক : এক কেন্দ্র মার্কসবাদের পতাকাবাহী মস্কো, অপর কেন্দ্র পুঁজিবাদ ও গণতন্ত্রের পতাকাবাহী প্রথমে লন্ডন পরে ওয়াশিংটন। দুই কেন্দ্রের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল তীব্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-৪৫) পর থেকে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা øায়ুযুদ্ধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে চলছিল। যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করেছিল মারি অরি পারি যে কৌশলে নীতি। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর পৃথিবী হয়ে পড়ে এককেন্দ্রিকÑ ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক। বিশ্বব্যবস্থার রূপ দাঁড়ায় পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী। মার্কসবাদ আবেদনহীন হয়ে পড়ে। তখন বিশ্বব্যবস্থার রূপ ও প্রকৃতি নির্দেশ করার জন্য পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিবর্গ ঁহরঢ়ড়ষধৎরংস কথাটা চালু করে। বছর দুই যেতে না যেতেই তারা ঁহরঢ়ড়ষধৎরংস-এর স্থলাভিষিক্ত করে মষড়নধষরুধঃরড়হ-কে। ক্রমে মষড়নধষরুধঃরড়হকে গড়ে তোলা হয়েছে এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার মতবাদরূপে। এই মতবাদ বিশ্বায়নবাদ বা মষড়নধষরংস বা বিশ্বায়নের মতবাদ বলেও অভিহিত হয়েছে। বিশ্বায়নের পটভূমিতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবকে। নতুন প্রযুক্তি প্রসারের কালে বিশ্বায়নকে প্রচার করা হয়েছে অনিবার্য, অমোঘ, অপরিহার্য বলে।
বিশ্বায়নবাদীরা বিশ্বায়নের অর্থ যথেষ্ট স্পষ্ট করেন না। ঘোষিত বিষয়গুলোর সঙ্গে অনেক বিষয় অঘোষিত রাখা হয়। ঞযব ঊহফ ড়ভ ঐরংঃড়ৎু ধহফ ঃযব খধংঃ গধহ (১৯৯২) গ্রন্থে ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা এবং ঞযব ঈষধংং ড়ভ ঈরারষরুধঃরড়হং ধহফ ঃযব জবসধশরহম ড়ভ ডড়ৎষফ ঙৎফবৎ (১৯৯৩) গ্রন্থে স্যামুয়েল পি. হান্টিংটন মানবসভ্যতার গোটা ইতিহাস পর্যালোচনা করে ভবিষ্যৎ বিশ্বব্যবস্থার যে রূপ ও প্রকৃতি নির্দেশ করেছেন, পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিবর্গ, শিল্পোন্নত রাষ্ট্রসমূহ (প্রথমে জি-সেভেন, পরে এইট), আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা তাকেই বিশ্বায়ন নামে নানা কূটকৌশল অবলম্বন করে বাস্তবায়ন করে চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গৃহীত হচ্ছে নতুন নতুন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি। দুটি গ্রন্থই রচিত হয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তিকে পটভূমিতে রেখে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিপ্রায় অনুযায়ী। গ্রন্থ দুটি পরস্পর সম্পূরক। ফুকুয়ামা ও হান্টিংটন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দার্শনিক উপদেষ্টা। সেই অবস্থান থেকেই তারা গ্রন্থ দুটি রচনা করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর নতুন উদ্যমে পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন বিশ্বায়নবাদীরা। বিশ্বায়নের বিভিন্ন পরিচালক-শক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে আছে যুক্তরাষ্ট্রÑ তার পররাষ্ট্রনীতিÑ তার স্টেইট ডিপার্টমেন্ট। বাস্তবে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যদি বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিই বিশ্বায়ন, তাহলে খুব একটা ভুল বলা হয় না। দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উপায়ে ভীষণভাবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বিশ্বায়নের কর্মসূচি ও কর্মনীতি। প্রায় সব রাষ্ট্রের উন্নয়নবিদরা প্রায় অন্ধভাবে বিশ্বায়নবাদের সমর্থক। পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী উন্নয়ন তত্ত্বই তাদের অবলম্বন। বিচারমূলক ও বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামতও আছে, তবে সেগুলো চলমান ধারারই মৃদু সংস্কার প্রয়াসী।
পশ্চিমা আধিপত্যবাদীদের ও বিশ্বব্যাপী তাদের অনুসারীদের দিক থেকে আন্তর্জাতিকতাবাদে আর কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না। আর জাতীয়তাবাদীদের প্রতি ব্যক্ত করা হয় বিরূপ মনোভাব। জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে বিশ্বায়নের মতবাদকে।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তির কল্যাণে মানবজাতির সম্পদ অনেক বেড়েছে। উচ্চফলনশীল বীজ আর দ্রুত-বংশবৃদ্ধিকারী হাঁস-মুরগি-মাছ এখন মানবজাতির খাদ্যের প্রয়োজন মেটাতে পারছে। সিনথেটিক ফাইবারের কাপড় মানবজাতির কাপড়ের অভাব মিটিয়েছে। কিন্তু মনোবৃত্তির দিক থেকে মানুষের উন্নতি না হয়ে অবনতি হয়েছে। বিশ্বায়ন চলাকালে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র ধনী-গরিবের বৈষম্য এবং অন্যায়-অবিচার ও সহিংসতা আগের তুলনায় দ্রুতগতিতে বেড়ে চলছে। মানুষ মানবিক গুণাবলী হারিয়ে ফেলছে। সহিংসতার নাম দেয়া হয়েছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাস দমনের জন্য চালানো হচ্ছে বিনা বিচারে নরহত্যা ও সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ।
বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় পড়ে দুর্বল জাতি ও রাষ্ট্রগুলো জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে।
মানবজাতির এবং প্রত্যেক জাতি ও জনগোষ্ঠীর কল্যাণের কথা ভাবতে গেলে বিশ্বায়ন ও আনুষঙ্গিক সফল চিন্তাধারা ও কর্মধারার আমূল পরিবর্তন ও পুনর্গঠনের গভীর তাগিদ অনুভূত হয়। মনে হয়, পৃথিবীকে মানবজীবনের মহান সব সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য চলমান বিশ্বায়ন নয়, এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন বিশ্বব্যবস্থায় উত্তরণ অপরিহার্য। সর্বজনীন কল্যাণে বিশ্বব্যবস্থা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনর্গঠন ও নবায়নের জন্য জাতীয়তাবাদ, আন্তর্জাতিকতাবাদ, বিশ্বায়ন ও আনুষঙ্গিক কিছু বিষয়ে প্রচলিত ধারণার মৌলিক পরিবর্তন দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা, জি-এইট (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, রাশিয়া) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা একযোগে পরিকল্পিতভাবে বর্তমান ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার প্রক্রিয়াকে বিশ্ববিস্তৃত পুঁজিবাদী ধারায় বিকশিত করে চলছে এবং বিশ্বায়ন কথাটি চালু করেছে। এরাই বিশ্বায়নের উদ্ভাবক, পরিকল্পনাকারী, রূপকার, বাস্তবায়নকারী, বিকাশকারী ও কর্তৃপক্ষ। কারণ-করণীয়-করণ সূত্র ধরে আন্তঃরাষ্ট্রিক ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, কার্যক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিই বিশ্বায়নের মতবাদ। বিশ্বায়নের সব বিষয় ঘোষিত ও প্রকাশ্য নয়, অনেক কিছুই অঘোষিত ও গোপন।
বিশ্বায়নবাদ আন্তর্জাতিকতাবাদ থেকে ভিন্ন। বিশ্বায়নবাদের উদ্ভব ও বিকাশ সাম্রাজ্যবাদের ধারায়Ñ আন্তর্জাতিকতাবাদের ধারায় নয়। যে মনীষীদের চিন্তাধারার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকতাবাদের উদ্ভবÑ যেমন রেনেসাঁসের মনীষীরা, অগাস্ট কোঁৎ, স্টুয়ার্ট মিল, ডারউইন, মার্কস, এঙ্গেলস, ফ্রয়েড, সুইটজার, স্পেংলার, তলস্তয়, রাসেল, আইনস্টাইন প্রমুখÑ বিশ্বায়নের উদ্ভব তাদের চিন্তাধারার মধ্য দিয়ে নয়। লেনিন, মাও সেতুঙের চিন্তাধারার কিংবা জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের বিবেকসম্মত-যুক্তিসঙ্গত বিকাশের মধ্য দিয়েও বিশ্বায়নবাদের উদ্ভব ঘটেনি। বিশ্বায়নবাদের উদ্ভব ঘটেছে এসবের বিরুদ্ধে পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী প্রক্রিয়ার ধারা ধরে। যেসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা সাম্রাজ্যবাদের ধারক, বাহক, বাস্তবায়নকারী ও বিকাশকারী, সেগুলোই বিশ্বায়নবাদেরও উদ্ভাবক, ধারক, বাহক, বাস্তবায়নকারী ও বিকাশকারী। বিশ্বায়নবাদ সাম্রাজ্যবাদেরই সম্প্রসারণ। অত্যন্নত ও নতুন প্রযুক্তির ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে সাম্রাজ্যবাদ বিশ্বায়নবাদে উন্নীত হয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি, অবাধ প্রতিযোগিতা ও বহুত্ববাদের নামে বিশ্বায়নবাদীরা অবলম্বন করেছে এককেন্দ্রিক বিশ্ববিস্তৃত পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠার দূরদর্শী কর্মনীতি। পুঁজিবাদের বিশ্বগ্রাসী রূপের মধ্যে বিকশিত হয়ে চলছে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি। জাতিসংঘের কর্তৃত্বে (যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বে নয় কি?) গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী। বিশ্বায়নবাদীরা যুক্তরাষ্ট্রের অভিপ্রায় অনুযায়ী জাতিসংঘের বিধিবিধান পরিবর্তন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বে আছে ন্যাটো বাহিনী। ঘোষণা না দিলেও তাদের কার্যকলাপ দেখে বোঝা যায়, তারা চায় ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে গোটা পৃথিবীকে একটিমাত্র পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে। ঘোষণা না দিয়ে তারা বিশ্বরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুঁজিবাদের যা কিছু অভিশাপ, সবই ঘনীভূতরূপে দেখা যাচ্ছে বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায়।
এরই মধ্যে বিশ্বায়নবাদীরা দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে বিলুপ্ত করার ও তাদের সংস্কৃতির জায়গায় পরিকল্পিত বিশ্বায়নের সংস্কৃতি চালু করার নীতি কার্যকর করে চলছে। দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর শিল্পব্যবস্থাকে তারা তাদের ইচ্ছা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢেলে সাজাচ্ছে। দুর্বল রাষ্ট্রগুলোতে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সব সুযোগ তারা বন্ধ করে দিয়েছে। জাতীয় ভাষার জায়গায় তারা সুকৌশলে চাপিয়ে দিচ্ছে ইংরেজি ভাষা এবং তারা জোর প্রচার চালাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর (তাদের ভাষায় আদিবাসী) মাতৃভাষা রক্ষার জন্য। দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর জন্য গণতন্ত্রকে তারা সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে নিছক নির্বাচনে আর উন্নতির ধারণাকে অপসৃত করে তারা উন্নয়ন পরিমাপ করছে কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়ে।
যে কোন নৈতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার করলেই দেখা যায়, অত্যুন্নত প্রযুক্তির একালে বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় মানবিক সম্পর্কের সব পর্যায়ে অন্যায়, অবিচার, শোষণ, পীড়ন, প্রতারণা ও মানবসৃষ্ট বৈষম্য দ্রুততর গতিতে বেড়ে চলছে। বিশ্বায়নের এ বাস্তবতায় ধনী, গরিব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, শক্তিমান, দুর্বল নির্বিশেষে মানুষ হারিয়ে চলছে মানবিক গুণাবলী (ফবযঁসধহরুধঃরড়হ ড়ভ সধহ রহ ংড়পরবঃু)। দুর্বল জাতিগুলোকে তারা পরিণত করছে প্রতিবন্ধী জাতিতে। যারা ক্ষমতাবান ও শক্তিমান তারা ক্রমেই মানবিক গুণাবলী হারিয়ে নিরেট সম্পত্তি লিপ্সু, ক্ষমতালিপ্সু, ভোগলিপ্সু জন্তুতে পরিণত হয়ে চলছে।
বিশ্লেষণমূলক ও বিচারমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখলে দেখা যায়, পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ-বিশ্বায়নের পথ সভ্যতা ও সংস্কৃতিবিরোধী পথ। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপ কেন হল, মানবজাতি ন্যায়, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির পথে উত্তীর্ণ হবে কিভাবে, তা বুঝতে হলে পুঁজিবাদের ও সমাজতন্ত্রের মনোস্তত্ত্ব তলিয়ে দেখতে হবে। অতীতের কোন আদর্শ দিয়েই হবে না, নতুনকালের অনিবার্যতায় নতুন আদর্শ উদ্ভাবন করে নিতে হবে।

Necessity is the mother of invention. প্রয়োজনের তাগিদেই পুরাতনের অনুবর্তন ত্যাগ করে ইসলামকে পরিপূর্ণরুপে মানতে হবে

Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:৩৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রভূ-ভৃত্য নয়, চাই সমতা ও ইনসাফভিত্তিক মৈত্রী

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৫০

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রভূ-ভৃত্য নয়, চাই সমতা ও ইনসাফভিত্তিক মৈত্রী

ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ছবিটি http://www.gettyimages.com থেকে সংগৃহিত।

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক নৈকট্যের গভীর বন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে বাংলাদেশের কি করণীয় ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:১৬


কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক মুসলিম হওয়ায় এবং ভারত বিদ্বেষী(যৌক্তিক কারণ আছে) হওয়ায় এই ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউসুফ সরকার

লিখেছেন তানভীর রাতুল, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৭

নৈতিকতা এবং নীতিবোধ কখনোই আইনের মুখে পরিবর্তিত হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া উচিত নয়”)।

নৈতিকতা ও নীতিবোধ কখনোই সহিংসতা বা আইনী চাপের মুখে বদল হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাক-ভারত যুদ্ধ হলে তৃতীয় পক্ষ লাভবান হতে পারে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৭



সাবেক ভারত শাসক মোগলরা না থাকলেও আফগানরা তো আছেই। পাক-ভারত যুদ্ধে উভয়পক্ষ ক্লান্ত হলে আফগানরা তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতেই পারে।তখন আবার দিল্লির মসনদে তাদেরকে দেখা যেতে পারে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একবারে ৫০টি ফ্রি AI টুলের নাম বাংলায় সিরিয়ালসহ !!

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৪৭

আপনার কাজ হবে আগের থেকে ১০ গুণ দ্রুত!
আপনার দৈনন্দিন কাজকে আরও সহজ, স্মার্ট ও গতিশীল করতে নিচে ৫০টি অসাধারণ ফ্রি AI টুলের তালিকা দেওয়া হলো। এই টুলগুলো ব্যবহার করলে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×