IMDb rating : 7.8
কিছু কিছু ফিল্ম আছে, যে ফিল্মগুলোর মাঝে আপনি কোন ভালো বা খারাপ চরিত্র খুজে পাবেননা। শুধুমাত্র দুচোখ দিয়ে মুগ্ধ হয়ে দেখবেন প্রতিটি মানুষ এবং তাদের জীবনের খুটিনাটি আনন্দ এবং বেদনাগুলোকে। আর চরিত্রগুলোর মাঝে নিজেকে খুজতে চাইবেন। ঠিক এমনই একটি ফিল্ম 3:10 to Yuma. জেমস ম্যানগোল্ড এর সৃষ্টি এই ফিল্মটি তার অন্যান্য ফিল্ম থেকে একেবারেই ভিন্ন। আর যদি অভিনেতা হিসেবে দুটি মুখোমুখি চরিত্রে পাওয়া যায় ক্রিশ্চিয়ান বেইল আর রাসেল ক্রো কে, তাহলে তো কথাই নেই।
ফিল্মটির প্লট শুরু হয় ড্যান ইভানস (ক্রিশ্চিয়ান বেইল) এর ছোট্ট বাসা থেকে। কিছু মানুষ এসে জ্বালীয়ে দেয় ড্যান এর শেষ সম্বল ঘোড়াগুলোর থাকার জায়গাটি। ড্যানের পাওনাদার ওরা। সেই পাওনা পরিশোধের জন্য ড্যানের প্রয়োজন অনেক অর্থের, যেটা এত কম সময়ে তার পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব। অপরদিকে, বেন ওয়েড (রাসেল ক্রো) একটি ভয়াবহ দস্যুদলের অধিপতি। যার কাজ সাধারনত মানুষ খুন করা আর মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করা। বেন ওয়েড একসময় ধরা পড়ে কাউন্তি শেরিফ এর কাছে। তাকে এখন পাঠানো লাগবে ইউমার জেলে। ইউমাগামী ৩.১০ এর ট্রেনে উঠিয়ে দেয়া হবে বেনকে। আর এই যাত্রায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শেরিফের সঙ্গী হল ড্যান। কারন এর জন্য তাকে বড় অংকের অর্থকড়ী দেওয়া হত।
একদিকে ড্যান এর মত সৎ, রক্ষনশীল এবং ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগা একটি চরিত্র। অন্যদিকে, বেন এর মত সাহসী, শিল্পী এবং আত্মবিশ্বাসী একটি চরিত্র। এই ফিল্মের গল্প লেখক যে কতটা নৈপূণ্য নিয়ে চরিত্রগুলোকে সাজিয়েছেন তা ফিল্মটি দেখলেই বোঝা যায়।
একটি মডার্ন ওয়েস্টার্ন হিসেবে পারফেক্ট একটি ফিল্ম 3:10 to Yuma. ডিরেকশনের খুঁটিনাটি খুবই খেয়াল করে ঠিক করা হয়েছে। আর সিনেমাটোগ্রাফীতে ছিল শিল্পের ছোঁয়া। ওয়েস্টার্ন ঘরানার ফিল্মগুলোয় সাধারনত লং শটের প্রাচুর্য বেশি থাকে। আর ক্লোসশটগুলো হয় চরিত্রকেন্দ্রীক। কিন্তু এই ফিল্মটিতে আপনার নজর কাড়বে ক্লোসশটের ডিটেইলিংগুলোতে।
আমার সবচেয়ে ভালো লাগার দৃশ্যটি হল এই দুটি মূল চরিত্রের মুখোমুখি বসে শেষ কিছু কথা বলার দৃশ্যটি। ছবিটির অনবরত স্লো এবং ফাস্ট আবহসঙ্গীতের মোহে ঢুকে যেতে হয় কন্টেনশনের সেলুনগুলোতে। ভাবতেই হয়, যেন আমি নিজেও বেন এর সাথে ঘোড়া ছুটিয়ে চলেছি।
অনেকদিন পর ফিল্ম রিভিউ লিখলাম। হয়তোবা অনেক ভূলত্রুটি ছিল। আশা করি সামনে ভালো কিছু ফিল্ম রিভিউ দিতে পারব। এই বছর রিলিজ পাওয়া ধুমধাম এ্যাকশন ফিল্মগুলো দেখে যারা বেশ বোরড, তারা মনের ইনার পিস খুজে পেতে দেখে ফেলতে পারেন 3:10 to Yuma ফিল্মটি। কথা দিচ্ছি, খারাপ লাগবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০৭