নিজেকে যদি সত্যিকার অর্থেই একজন বাংলাদেশি মনে করেন তাহলে অবশ্যই পুরো পোস্টটি পড়বেন ...
একটি কথা শুরুতেই বলতে চাই ... লিখাটি কাউকে ব্যাক্তিগত ভাবে কষ্ট দেওয়া বা কাউকে তিরোষ্কার করে লেখা নয় ... আমি জানি আমাদের দেশের মানুষ প্রত্যেকেই এই দেশটা কে ভালোবাসে... কিন্তু তার প্রকাশ ভঙ্গি হইতো ভিন্ন ... হয়ত অবোহেলার বশে কিছু বিষয় আমাদের চোখ এড়িয়া যায় ... অথবা ব্যাপারটি সত্য জেনেও তা না জানার ভান করি ... যা হোক কথা না বাড়িয়ে মূল প্রসঙ্গে আসা যাক ...
----------------------------------
-----------------------------------------
----------------------------------------------
বাংলাদেশ এর একজন নাগরিক হিসেবে আমরা কি পাকিস্থান কে সমর্থন জানাতে পারবো কিনা তা নিয়ে কিছু যুক্তি তর্ক ও তার সাথে কিছু প্রমান সরুপ কিছু তথ্য উপস্থাপনা... পোস্টটি মূলত
রাহাত রহমান এর লেখা মুল লেখা এখানে - আমি পাকিস্তানকে কেন ঘৃণা করি তার সাথে আমার কিছু কথা ও লিঙ্ক ...
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
প্রথমেই বলছি কেউ যদি ধর্মের কারনে পাকিস্তানিদের ধর্মের ভাই মনে করে পাকিস্তানকে সমর্থন করে থাকে তাহলে বলে রাখি আমি নিজেও ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী এবং আমিও নামাজ, আমার ধর্ম যথাযথভাবেই পালন করার চেষ্টা করি। ধর্মের কারনে যারা পাকিস্তানিদের সমর্থন করে থাকেন তাদের বেশির ভাগই মনে করে পাকিস্তান ইসলামিক দেশ বলে তাদের দেশটা পবিত্র। এই বিশ্বাসটা করার আগে কেউ কী কখনো এর সত্যতা যাচাই করে দেখেছেন ?? পাকিস্তান দেশটা কতটা নোংরা ও তাদের চরিত্র কতটা নিকৃষ্ট তা আপনাদের সামনে সব তুলে ধরার চেষ্টা করছি, ক্রিকেটও সেখান থেকে বাদ পড়বে না।
প্রথমেই আসি পাকিস্তান দেশটা আসলে কী ?
পাকিস্তান এমন একটা দেশ যেটার জন্ম হয়েছে Marshal Law দেখে এবং শেষও হবে একইভাবে। আপনারা কী জানেন ওদের পতাকার পেছনে কোন যুক্তি বা অর্থ নেই ? পতাকা কোন ব্যাপার না, তাইনা ? তাহলে একবার এই পোস্টটা দেখে আসুন: http://www.nagorikblog.com/node/2161
এবার আসি ক্রিকেটে ! ক্রিকেটের মাঝে রাজনীতি আনছি কেন ?! সবার একই প্রশ্ন তাই না ??
পাকিস্তান খুব ভাল ক্রিকেট খেলে, তাদের খেলা ভাল লাগে তাই সমর্থন করি ! এই কথাগুলা সব বাঙালি পাকিস্তান ক্রিকেট সমর্থকদের প্রচলিত যুক্তিহীন ব্যাখ্যা ... আসুন দেখা যাক কেন যুক্তি গুলো অযোক্তিক ---
প্রথমে http://udvraanto.amarblog.com///posts/128659/ এই পোস্ট টার কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরি। আর সবাইকে অনুরোধ করবো লিংকে যেয়ে পুরোটা পড়ার জন্য। ছবিগুলো দেখার জন্য।
ব্যক্তি পর্যায়ে এধরণের কিছু পাকিস্থান-প্রেমী সমর্থকের সাথে কথা বলার সূযোগ হয়েছে; তাদের ভাষ্য অনুযায়ী যে কারণগুলোর জন্য তারা পাকিস্থান ক্রিকেট টিমের একনিষ্ঠ সমর্থক, তা অনেকটা নিম্নরুপ-
১.ক্রিকেটের সাথে রাজনীতি মিশানো ঠিক নয় (সকল সমর্থকই এই কথাটি বলেন)।
২.পাকিস্থান হচ্ছে সবচেয়ে আনপ্রেডিক্টেবল টিম; হয় জহির, নয় ফকির-- এই জন্য পাকিস্থান ভাল লাগে।
৩.ওরা অনেক স্মার্ট, সুদর্শন.... ওদের দেখলেই আমার হৃদয়ে যেন “কী’রাম কী’রাম লাগে”; হি হি হি, ওদের আমার খুব পছন্দ (তরুণীরা এধরণের চকলেটধর্মী যুক্তি বেশী দেন)
৪.প্রত্যেক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। পাকিস্থানীরা মুসলমান আমরাও মুসলমান, তাই মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের “ঈমানী” দায়িত্ব। মুসলমানরা জয়ী হোক অমুসলিমদের বিরুদ্ধে। (এই যুক্তিটিও যথেষ্ঠ জনপ্রিয়, যদিও অনেকেই চেপে যেতে চান, তবে তাদের হৃদয়ের ফাঁকফোকড় গলে সেটি সহজেই বেড়িয়ে পরে)
।
এবার পাল্টা যুক্তিতে আসি। যেটা দিয়েছেন জয় ভাইয়া
একজন পাকিস্তানী সমর্থকদের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন- 'আচ্ছা বাংলাদেশ পাকিস্তান ম্যাচে আপনি কাকে সাপোর্ট করবেন? যদি বলেন বাংলাদেশ, আমি জানতে চাইবো কেন? এটাতো খেলা, যাকে খুশি সাপোর্ট করা যায়, বাংলাদেশকে কেনো? মাতৃভূমি বলে? এখানে কি খেলার বাইরে যাচ্ছেন না? আপনি এখানে দেশকে টেনে আনছেন, খেলাকে নয়, তাহলে কেনো আমি ৩০ লাখ শহীদকে টেনে আনবোনা? কেনো ৭১ কে আনবোনা? আপনি মাতৃভূমি বলে বাংলাদেশ সাপোর্ট করবেন আবার ৭১ কে টেনে আনলে বলবেন রাজনীতি মেশানো ঠিকনা। এটা কি কন্ট্রাডিকটারি না?'
আরেকজন বলেছেন- 'যখন পাকিস্তানী প্রোডাক্ট নিয়ে কথা হয় তখন আমরা বলি আচ্ছা এটা তো ব্যাবসায়িক ইস্যু, ৭১এর সাথে কি সম্পর্ক? যখন জামাতের কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির কথা আসে, আমরা বলি আমরা প্রকেশনাল, রাজনীতির এখানে কি?
যখন ব্যাক্তিগত পছন্দ যেমন ক্রিকেট, পতাকা, জাতিয় সংগীতের কথা আসে আমরা বলি আহ! আবার রাজনীতিকে মেশানো হচ্ছে? এটা আমার ব্যাক্তিগত পছন্দ। ৭১ এখানে কেনো আসবে?
আমাকে বলুন, তাহলে ৭১ কোথায়? শুধু কি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে?
ক্রিকেট নিয়ে যখন শুরুই করেছি বিস্তারিতই তুলে ধরি। আপনারা ক্রিকেটে যাদের সমর্থন করেন তাদের চরিত্র নিয়ে কী কখনো ভেবেছেন ?
প্রথমেই আসি "ড্যাশিং" অধিনায়ক আফ্রদি প্রসংগে। বুম বুম আফ্রিদি, আফ্রিদি রক্স, আফ্রিদির ছবি ফেসবুক প্রোফাইল পিকচারে, আফ্রদি "Marry Me" আরো কত কিছু দেখি আমরা, এইবার উনার আসল চারিত্রিক গুণাবলি(!) দেখে নিন। ২০০০ সালে উনি সিঙ্গাপুরে কী জানি(!) করেছিলেন, এইখানে আর বিস্তারিত না বলি, সরাসরি দেখে আসেন: http://www.indiatimes.com/photostory/5284086.cms
পুরো পাকিস্তান দলের অবস্থা একবার দেখেন: http://www.samakal.com.bd/details.php?news=39&view=archiev&y=2010&m=11&d=29&action=main&menu_type=crorpathro&option=single&news_id=111582&pub_no=526&type
আর শোয়েব আখতার ! এক কথায় ম্যাচ পাতানো, নারী কেলেঙ্কারি, মাদক বহন ও সেবনসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যা সে করেনি তারই কিছু প্রমান দেখতে লিংক ঘাটুন:
http://www.guardian.co.uk/sport/2006/nov/02/cricket.davidhopps
http://teeth.com.pk/blog/2005/02/02/shoaib-akhtar-in-aussie-bar-party
আর আসিফ এর কথা আর না-ই বলি ! মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। শুধু পুরুষ নয়, তাদের মহিলা ক্রিকেট দলের চারিত্রিক গুণাবলি(!) সম্পর্কেও জেনে নিন: http://www.zimbio.com/Cricket/articles/y2BnKfOYNb_/PCB+Women+Lesbian+Scandal
এখনো কী উচু গলায় বলতে পারবেন যে এটা একটা পবিত্র(!) দেশ ?! ইসলামের বিধান পালন করে বলে এদের সমর্থন করবেন, বলতে পারবেন কেউ উচু গলায় ??
আর ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারি তো তাদের নিত্য সঙ্গী ! দেখে আসুন: http://blogs.bettor.com/Match-fixing-and-the-Pakistan-cricket-team-past,-present-and-future-a27202
http://www.telegraph.co.uk/sport/cricket/international/pakistan/7970298/Pakistan-match-fixing-claims-overshadow-England-Test-win.html
এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে। আপনাদের অনেকরই ধারনা যুদ্ধ অনেক আগে হয়েছে। পাকিস্তানের নতুন জেনারেশন আর আগের মত নেই, তারা আমাদের শ্রদ্ধা(!) করে, তাই না ??
তারা আমাদের ও আমাদের ক্রিকেট কে কী মনে করে আর তাদের বর্ণবাদের কিছু নমুনার লিংক দিচ্ছি, দেখে নিন: ।
http://www.youtube.com/watch?v=41Oa5zMMbJg&feature=player_embedded
http://www.youtube.com/watch?v=gInDVDk_PIk&feature=player_embedded
http://www.youtube.com/watch?v=gInDVDk_PIk&feature=player_embedded
বর্ণবাদী পাকিস্তান , ক্রিকেটে ওদের স্বাগতম জানান !
এসব দেখে বলতে পারেন "খেলাকে রাজনীতির সাথে মিশাবেন না" এই ব্যাপারে আপনাদের প্রচলিত কিছু কথা ও তার জবাবও তুলে ধরছি এখান থেকে: http://www.sachalayatan.com/bolai/16035
এটা আমরা স্বীকার করি আর না করি ক্রিকেটে বাংলাদেশে সম্ভবত পাকিস্তানের সাপোর্টারই সবচেয়ে বেশি। স্বাধীনতা যুদ্ধ ও তার আগেকার সময়কার ঘটনা বিচারে এটা একটা অস্বাভাবিক ঘটনা। কারণ, যুদ্ধের সময়কার আবেগ, পরিস্থিতির তীব্রতা এবং বাঙালির জানবাজি রেখে লড়াই - ইতিহাসের এই অংশটুকু ফ্লুক নয়, একেবারেই জলজ্যান্ত বাস্তব। তারপরেও আমাদের এই পাকিপ্রেম কেন?
"পাকিস্তান আমাদের ওপর এত অত্যাচার করার পরেও পাকিস্তানকে সমর্থন করেন কেন?" - এই প্রশ্ন শুনলে এই বিশাল সংখ্যক মানুষ সাধারণত একটু অসহিষ্ঞু হয়ে যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করেন -
ক) খেলাকে রাজনীতির সাথে মিশাবেন না।
খ) পাকিস্তান ভালো খেলে তাই সাপোর্ট করি।গ) তারা আমাদের মুসলমান ভাই।
আচ্ছা, এই বিষয়গুলোর ওপর একটু আলোকপাত করা যাক।
ক) খেলাকে রাজনীতির সাথে মিশাবেন না।
এই কারণটার ওপরে সাধারণত সার্টিফিকেটওয়ালা উচ্চশিক্ষিতরা বেশি জোর দেন। রাজনীতি এবং আন্ত্রজাতিক সম্পর্ক থাকবে রাজনীতির যায়গায়, খেলাধুলা ইজ জাস্ট ফ' ফান। এটা একটি স্বতন্ত্র বিষয়। ফুলস্টপ। আমার কাছে বিষয়টাকে এত সরল সমীকরণ মনে হয় না। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে প্রত্যেকটা মানুষই রাজনৈতিক জীব। বাংলাদেশের জন্ম হওয়া এবং না হওয়া দ্বারা যেহেতু আমার ব্যক্তিজীবনও প্রভাবিত হয়, আমার বোনকে ধর্ষণ করলে তার প্রভাব যেমন আমার ভাবনা ও জীবনে এসে পড়ে, আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলে হত্যাকারীর প্রতি ঘৃণাকে যেহেতু এড়াতে পারি না, সেহেতু ব্যক্তিজীবন, খেলাধুলার ফান এবং রাজনৈতিক জীবন বিচ্ছিন্ন জিনিস নয়, পরস্পর অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। খেলার মাঠে আমরা যখন একটি দলকে সমর্থন করি, সেই দলের পিছনের দেশটির নামও তখন তাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। "খেলাকে রাজনীতির সাথে মিশাবেন না" - কথাটি তাই আমার কাছে খেলো মনে হয়, জুতসই কারণের অনুপস্থিতিতে শর্টকাটে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা মনে হয়।
খ) পাকিস্তান ভালো খেলে তাই সাপোর্ট করি।
এই যুক্তি (?) সাধারণত স্কুল-কলেজের পোলাপান লেভেলে বেশি চলে। এটা অবশ্য একটু চানাচুর টাইপ কথা। হালকা চাপ দিলেই গুঁড়া হয়ে যায়। পাকিস্তান ঠিক কোনদিক দিয়ে ভালো খেলে তা সহজে বোধগম্য নয়। রেজাল্ট হিসেব করলে আইসিসি rankingএ ৬ নম্বর দলটি পছন্দের লিস্টে আসার কথা না, স্কিল হিসেব করলে অস্ট্রেলিয়া-সাউথ আফ্রিকা-বর্তমান ইন্ডিয়া এরা আগে চলে যায়, সাহস হিসেব করলে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ ১ নম্বরে। সবচেয়ে বড় কথা 'ভালো খেলা'টা ডায়নামিক ব্যাপার। ভালো খেলার সূচক যা-ই হোক, কোন নির্দিষ্ট টীম বছরের পর ধরে ভালো খেলে না, অবস্থান পালটায়। কিন্তু এই সমর্থক গোষ্ঠীর সমর্থন তাতে পালটায় না। বেশি চাপাচাপি করলে যথারীতি উষ্মাসহকারে "আমার যাকে ইচ্ছা তাকে সাপোর্ট করি, তোমার কি?" লেভেলে কথা চলে যায়। 'কেন?'র উত্তরের সমাধা আর হয় না।
(এখানে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু বিষয় যুক্ত করবো যেটা পোস্টটায় ছিলনা। পাকিস্তান ভাল খেলে, তাদের খেলা ভাল লাগে এসব প্রায়ই শুনে থাকি কিন্তু কোন দিক দিয়ে পাকিস্তান ভাল ক্রিকেট খেলে ?? তাদের অধিনায়ক আফ্রিদির বাইরের জীবনের কথা বললাম এবার ভেতরেরটায় আসি, সে বুট দিয়ে পিচ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে, বলে কামড় দিয়ে টেম্পারিং করতে চেয়েছে, ব্যাট হাতে দর্শকদের দিকে তেড়ে গেছে সাথে নারী কেলেঙ্কারি তো আছেই ! যে দলের অধিনায়কই এমন তাহলে দলটা কেমন হবে ?? দলটার খবরও বলছি, দুদিন পর পর পাকিস্তানি খেলোয়ারেরাই ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে, মাদক কেলেঙ্কারির সাথে পাকিস্তানের নাম সবচেয়ে ঘনিষ্টভাবে জড়িত। আসিফের কথা বাদই দিলাম ! এবার আসি ম্যাচ কেলেঙ্কারি প্রসংগে ! বলার অপেক্ষা রাখেনা অধিনায়ক হয়ে বাট কী করেছে ! যেই দল তাদের নিজের দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করে ম্যাচ পাতায় সে দলকে কীভাবে আমার দেশের মানুষ "ভালো ক্রিকেট খেলে" বলে সমর্থন করে ?? একটা চিট করা দল "ভাল খেলে" বলে সমর্থন করি, এই কথাটা বলতেও তো লজ্জা পাবার কথা ! আর এই নোটেই শেয়ার করা লিংক গুলোর ভিডিও দেখুন ওরা আমাদের দেশের ক্রিকেটকে কী চোখে দেখে ! এরপরও তাদের "বেহায়া"র মত সমর্থন করাটা কী অনেকটা কুকুরের মত পা চাটা নয় ??)
গ) তারা আমাদের মুসলমান ভাই।
এই কারণটা বেশি কাজ করে তথাকথিত সরলমনা ধর্মভীরু(?) আমজনতার মধ্যে। আমজনতার কতভাগ সরলমনা আর কতভাগ প্রকৃতপক্ষে ধর্মভীরু তা ভিলেজ পলিটিক্স সম্পর্কে অবগত মানুষ ভালো করে জানে, সে বিষয়ে কথা না বাড়াই। কিন্তু যে কোন সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরই বুঝা উচিত, পাকিস্তান এবং ইসলাম সমার্থক নয়। পাকিস্তানী শাসকদের দৃষ্টিতে আধা মালাউন বাঙালিদেরকে সাচ্চা মুসলমান বানাতে তাদের মেয়েদেরকে রেপ করে ইসলামের বীজ বপন করা, নিরস্ত্র মানুষকে লাইন দিয়ে গুলি করে হত্যা করা, গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া, এটা ইসলাম নয়। এই কাজ যারা করে, তারা কিভাবে 'ইসলামী' ভাই হয়? এটা বুঝতে সার্টিফিকেট লাগে না, উচ্চশিক্ষা লাগে না, যেকোনো সুস্থ মানুষই মাথাটা খাটালেই বুঝতে পারে। আমরা মাথাটা খাটাই না।
এবার আসি ওদের চরিত্র নিয়ে। নারী জাতিকে তারা তাদের কৃতদাশের চেয়েও নিচু মনে করে সেটা কী কারো জানা আছে ?! পাকিস্তানে একজন ধর্ষিত নারীর শাস্তি আরো ১০ জনের দ্বারা ধর্ষন ! কেন নারীকে ধর্ষন করা হলে তাকে ১০০ বেত ঘা অথবা বেঁধে তার গায়ে পাথর ছোড়া হয় ! এটা কী আরেকটা গণধর্ষনের সমতুল্য নয় ??
MUKHTARAN কে কেউ চেনেন ? তিনি ধর্ষনের শিকার হবার পর তাকে শাস্তি(!) স্বরূপ "উপহার" দেয়া হয় আরেকটা গণ ধর্ষন ! উইকিপিডিয়ায় তার সম্পর্কে পড়ে দেখতে পারেন: http://en.wikipedia.org/wiki/Mukhtaran_Bibi
এবার আসি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে । ১৯৭১ আপনার অজানা নয় কিন্তু তারপরও আপনি কিছু না জানার ভান করেন কারন আপনি মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। শোনা কথায় কেন বিশ্বাস করবেন ? না ?? ৯ মাসে মাত্র ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা করে তারা তেমন কিছু করেনি তাই না ? আমাদের দেশের মানুষের উপর তারা কেমন নির্যাতন চালিয়েছে সেটা কারোই অজানা নয়। জেনেও কেন না জানার ভান করেন আপনারা ? নির্যাতনের শত শত নমুনা আমি দেখাতে পারি কিন্তু বোঝানোর জন্য একটা নমুনাই যথেষ্ট, এখানে যেয়ে পুরোটা পড়ুন: http://www.nagorikblog.com/node/2329
যাদের পড়তে অসুবিধা হবে তাদের জন্য পুরো পোস্ট টা আমি মন্তব্যেই তুলে ধরছি:
বীভৎস যৌন নির্যাতন, কিন্তু এড়িয়ে গেছেন সবাই!
লিখেছেন: জল রঙ » ১৭ আগস্ট, ২০১০, মঙ্গলবার, ১৬:৫৩ শেষভাগ
একাত্তরে আমাদের নারীদের ওপর পরিচালিত পাকিস্তানি সৈন্যদের যৌন নির্যাতনের ধরন কতোটা ভয়াবহ, কতোটা বীভৎস ছিল- যুদ্ধ চলাকালে এদেশ থেকে প্রকাশিত কোনো দৈনিকে তা প্রকাশিত হয় নি। প্রকাশিত হয়নি বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত বাংলাদেশের যুদ্ধ সংবাদেও।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পর থেকে জাতীয় দৈনিকগুলোতে পাকিস্তানিদের নারী নির্যাতনের বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশিত হলেও ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন নির্যাতনের ধরন, প্রকৃতি, শারীরিক, মানসিক প্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ে খুব কমই গবেষণা হয়েছে। “স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস লিখন ও দলিল প্রামাণ্যকরন” প্রকল্পের তৎকালীন গবেষক, বর্তমানে ইংরেজী দৈনিক ডেইলি ষ্টারের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক আফসান চৌধুরী এজন্য ইতিহাস রচনার সনাতনি দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করে বলেছেন, দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখনে বরাবরই সশস্ত্র লড়াই, ক্ষমতাসীন পুরুষদের কৃতিত্ব গ্রন্থিত করার উদ্যোগ চলছে, কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে লাখ লাখ নারী অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না করেও যেভাবে যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার হয়েছে, সনাতনি মানুসিকতার কারণে কখনই তা নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের যৌন সন্ত্রাসের ধরন সম্পর্কে প্রথম তথ্য পাওয়া যায় ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত আমেরিকান সাংবাদিক সুসান ব্রাউন মিলার রচিত “এগেইনেস্ট আওয়ার উইল: ম্যান, উইম্যান এন্ড রেপ” গ্রন্থে। দেশে এ বিষয়ক গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হয় খুব কম এবং যা হয়েছে ৮০ সালের পর থেকে। যুদ্ধের পর ৭৬-৭৭ সাল পর্যন্ত গ্রহণ করা এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাক্ষাৎকার একমাত্র প্রকাশিত হয় প্রামাণ্যকরণ প্রকল্পের অষ্টম খন্ডে। কিন্তু এই খন্ড যাচাই করে দেখা গেছে, এতে মোট গৃহীত ২৬২টি সাক্ষাৎকারের মধ্যে নির্যাতনের সাক্ষাৎকার মাত্র ২২টি।
প্রকল্পের তৎকালীন গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, প্রামাণ্যকরণ কমিটি তাদের কার্যালয়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখের বেশি পৃষ্ঠার তথ্য সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে মাত্র ১৫ হাজার পৃষ্ঠা গ্রন্থিত আছে। বাকি লাখ লাখ পৃষ্ঠার তথ্যের মধ্যে নারী নির্যাতন বিষয়ক বেশকিছু ঘটনা আছে। প্রকল্পের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক কে এম মহসীন বলেন, ‘ডকুমেন্টগুলো এখন জাতীয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব গ্র্রহনের পারস্পরিক টানাহেচড়ায় অরক্ষিত অবস্থায় আছে। যতোদূর জানি, বেশ কিছু ডকুমেন্ট চুরিও হয়ে গেছে।’
মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লিখিত সূত্র, সমাজকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ মার্চ থেকে পাকিস্তানিদের ধারাবাহিক ধর্ষণ উন্মত্ততার সঙ্গে মধ্য এপ্রিল থেকে যুক্ত হতে শুরু করে এদেশীয় দোসর রাজাকার, শান্তি কমিটি, আল বদর ও আল শামস্ বাহিনীর সদস্যরা। এরা বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের ধরে আনার পাশাপাশি ধর্ষকে অংশ নিয়েছে। প্রত্যেকটি ক্যান্টনমেন্ট, পুলিশ ব্যারাক, স্থায়ী সেনা বাঙ্কার ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল কলেজ, সরকারি ভবন ধর্ষণের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
জানা যায়, একাত্তরে পুরো ৯ মাস পাকিস্তানি সৈন্যরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ঘটনাস্থলে, কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বাঙালি নারীদের ধরে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন আটকে রেখে ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটিয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা গণধর্ষণ। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির পুরুষ সদস্য, স্বামীদের হত্যা করার পর নারীদের উপর ধর্ষণ নির্যাতন চালাতো পাকিস্তানী সৈন্যরা। ৯ থেকে শুরু করে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা কেউই পাকিস্তানী সৈন্য বা তাদের দোসরদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সুসান ব্রাউনি মিলার তার গ্রন্থের ৮৩ পাতায় উল্লেখ করেছেন, কোনো কোনো মেয়েকে পাকসেনারা এক রাতে ৮০ বারও ধর্ষণ করেছে। ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির “যুদ্ধ ও নারী” গ্রন্থ থেকে জানা যায়, এক একটি গণধর্ষণে ৮/১০ থেকে শুরু করে ১০০ জন পাকসেনাও অংশ নিয়েছে। একাত্তরের ভয়াবহ ধর্ষণ সম্পর্কে একমাত্র জবানবন্দিদানকারী সাহসিক ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী তার সাক্ষাৎকারে (একাত্তরের দুঃসহ স্মৃতি, সম্পাদনা শাহরিয়ার কবির) জানান, “রাতে ফিদাইর (উচ্চ পদস্থ পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা) চিঠি নিয়ে ক্যাপ্টেন সুলতান, লে. কোরবান আর বেঙ্গল ট্রেডার্সও অবাঙালি মালিক ইউসুফ এরা আমাকে যশোরে নিয়ে যেত। যাওয়ার পথে গাড়ির ভেতরে তারা আমাকে ধর্ষণ করেছে। নির্মম, নৃশংস নির্যাতনের পর এক পর্যায়ে আমার বোধশক্তি লোপ পায়। ২৮ ঘন্টা সঙ্গাহীন ছিলাম”।
পাকিস্তানি সৈন্যদের ধর্ষণের বীভৎসতার ধরন সম্পর্কে পুনর্বাসন সংস্থায় ধর্ষিতাদের নিবন্ধীকরণ ও দেখাশোনার সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মী মালেকা খান জানান, সংস্থায় আসা ধর্ষিত নারীদের প্রায় সবারই ছিল ক্ষত-বিক্ষত যৌনাঙ্গ। বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ছিড়ে ফেলা রক্তাক্ত যোনিপথ, দাঁত দিয়ে ছিড়ে ফেলা স্তন, বেয়োনেট দিয়ে কেটে ফেলা স্তন-উরু এবং পশ্চাৎদেশে ছুরির আঘাত নিয়ে নারীরা পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসতো।
পাকিস্তানি সৈন্যরা আমাদের নারীদের একাত্তরে কতো বীভৎসভাবে ধর্ষণসহ যৌন নির্যাতন করেছে তার ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশী ধরা পড়ে ১৮ ফেব্র“য়ারীর ৭৪ সালে গৃহীত রাজারবাগ পুলিশ লাইনে একাত্তরে সুইপার হিসেবে কাজ করা রাবেয়া খাতুনের বর্ণনা থেকে। প্রামান্যকরন প্রকল্পের অষ্টম খন্ডে গ্রন্থিত ঐ বর্ণনায় কয়েকটি অংশ: রাবেয়া খাতুন জানান, ‘উন্মত্ত পান্জাবি সেনারা নিরীহ বাঙালী মেয়েদের শুধুমাত্র ধর্ষণ করেই ছেড়ে দেয় নাই অনেক পশু ছোট ছোট বালিকাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করে ওদের অসার রক্তাক্ত দেহ বাইরে এনে দুজনে দুপা দুদিকে টেনে ধরে চড়াচড়িয়ে ছিড়ে ফেলে ছিল। পদস্থ সামরিক অফিসাররা সেই সকল মেয়েদের ওপর সম্মিলিত ধর্ষণ করতে করতে হঠাৎ একদিন তাকে ধরে ছুরি দিয়ে তার স্তন কেটে, পাছার মাংস কেটে, যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে সম্পূর্ণ ছুরি চালিয়ে দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ওরা আদন্দ উপভোগ করতো । ’ রাবেয়া খাতুনের আরেকটি বর্ণনায় জানা যায়, ‘ প্রতিদিন রাজারবাগ পুলিশলাইনের ব্যারাক থেকে এবং হেডকোয়ার্টার অফিসে ওপর তলা থেকে বহু ধর্ষিত মেয়ের ক্ষত-বিক্ষত বিকৃত লাশ ওরা পায়ে রশি বেধে নিয়ে যায় এবং সেই জায়গায় রাজধানী থেকে ধরে আনা নতুন মেয়েদের চুলের সঙ্গে বেধে ধর্ষণ আরম্ভ করে দেয়। ’
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরও পাকিস্তানি সৈন্যরা বাঙ্কারে আটকে রেখে নির্বিচারে ধর্ষণ করেছে বাঙালী নারীদের। বিচারপতি কে এম সোবহান প্রত্যক্ষ দর্শনের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘ ১৮ ডিসেম্বর মিরপুরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া একজনকে খুঁজতে গিয়ে দেখি মাটির নিচে বাঙ্কার থেকে ২৩ জন সম্পূর্ণ উলঙ্গ, মাথা কামানো নারীকে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে পাক আর্মিরা। ’
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, পুরোপুরি পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত পাক আর্মিদের ধর্ষণ-উত্তর অন্যান্য শারীরিক নির্যাতনের ফলে বেশ কিছু মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, কাউকে কাউকে পাকসেনারা নিজেরাই হত্যা করেছে; আবার অনেকেই নিরুদ্দিষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক ড. রতন লাল চক্রবর্তী ৭২- এর প্রত্যক্ষদর্শনের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, ‘ যুদ্ধের পর পর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে বেশ কিছু নারীকে। তাদের ড্রেসআপ এবং চলাফেরা থেকে আমরা অনেকেই নিশ্চিত জানতাম ওরা যুদ্ধের শিকার এবং ওদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। ’
তথ্যসূত্র: উক্ত লিখাটি ভোরের কাগজ, ১৮ মে ২০০২ ইং এ প্রকাশিত
শেষ কথা: এতো বিভৎস নির্যাতনের কোনো বিচার আজও হয়নি। বিশ্বের কাছে এসকল তথ্য অজানা। বিদেশ কেনো আমাদের নতুন প্রজন্ম যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে কতোটুকু জানে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
এটা শুধু একটা নমুনা মাত্র। শুধু এটুকুই নয়, তারা আমাদের দেশ নিয়েও বিভিন্ন জায়গায় বাজে কথা ছড়াচ্ছে, ভিডিও আপলোড করছে।
আমি এই লেখা শেষ করবো click this link
এই পোস্টটার কিছু অংশ দিয়ে পুরোটা পড়ে দেখতে পারেন। এতেও যদি আপনাদের একটু বোধ হয় !
পাকিস্তান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি। পাকিস্তানের স্কুলের পাঠ্যবইতে৭১ সংক্রান্ত ব্যাপার সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়। ফেসবুকে আমাদের একটা গ্রুপ আছে। ওখানে মাঝেমাঝে পাকিস্তানের এই প্রজন্মের ছেলে-পেলেরাও আসে। কি তাদের ভাষা! আর কি তাদের কনসেপ্ট আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে! তবে আমার মূল সমস্যা তাদের নিয়ে না। তারা পরাজিত পক্ষ, পরাজিত প্রজন্ম। চুলোয় যাক। আমাদের গৌরবগাঁথা লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। কিন্তু পরাজয়ের ছাইভস্ম থেকে তাদেরকে উঠিয়ে এনে মহিমান্বিত করছে আমারই দেশের মানুষেরা। আমার কাছের মানুষেরা। স্বজনেরা, বন্ধুরা! ক্রিকেটের দোহাই দিয়ে, ধর্মের দোহাই দিয়ে! হায়রে বিস্মৃতিপরায়ণতা, নির্লজ্জতা! ছিঃ!
না! এরকম আমরা চলতে দেবোনা। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এমন হবেনা। আমি আমার অনুজদের শিখিয়েছি কেন পাকিস্তান সাপোর্ট করা যাবেনা। কেন তারা ঘৃনার পাত্র। তাদেরকে ঘৃনা করতে শেখাচ্ছি। হ্যাঁ ঘৃনা। নির্ভেজাল ঘৃনা। এই ঘৃনার আগুন আপনিও ছড়িয়ে দিন সবখানে, সবার মাঝে. . . .
আর সবশেষে অফটপিক আরেকটা কথা বলবো। ধর্মের দোহাই নিয়ে কেউ এখানে ধর্ম সংক্রান্ত বিষয় আনবেন না আর নাস্তিকদের অনুরোধ করবো আপনারাও এখানে পাকিস্তানিদের চরিত্র দেখে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার কোন সুযোগ নেবেন না।
নাস্তিকদের সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই, এটা শুধু আমার অনুরোধ।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি Rahul Talikder ও Joy Imagination ভাইয়াকে তথ্যগুলো জোগাড় করে এক করার জন্য এবং আরো কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি লিংক শেয়ার করা সকল পোস্টের লেখকদের। আপনাদের লেখা পোস্টগুলোর অনেকাংশ এখানে তুলে ধরেছি, সময় স্বল্পতার কারনে অনুমতি নিতে পারিনি তবে লিংক দিয়ে দিয়েছি। আশা করি তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানুন......গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহূল লিঙ্ক সমূহ
১৯৭১ নিয়ে তৈরী হওয়া ৮৩টি ডকুমেন্টারীর সমন্বয়ে একটা পোষ্ট
অপারেশন সার্চ লাইট
বাংলাদেশের জন্য গান
অপারেশন জ্যাকপট
১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধ" মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু মুক্তিযোদ্ধার লিখিত চিঠি...সংগ্রহে রাখুন..
মুক্তিযুদ্ধের কিছু প্রামান্য বইয়ের তালিকা
ফটোগ্রাফিতে মুক্তিযুদ্ধ এবং একজন কিশোর পারেখ
ফটোগ্রাফিতে মুক্তিযুদ্ধ এবং একজন কিশোর পারেখ
আজ ২৫ মার্চ, চেতনাকে ঝালাই করে নিতে আবার পড়ুন
বাংলাদেশে বিশ্বকাপ … পাকিস্থানকে সমর্থন ও একজন সাধারন মানুষের অব্যক্ত কিছু কথা … …
যা হোক পাকিস্থান সম্পর্কিত আমার মনোভাব হল –
১. আপনি চাইলে এখনকার একজন পাকিস্থানের নাগরিক বা একজন ব্যাক্তি বা একজন খেলোয়ার বা একজন শিল্পী কে ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করতে পারেন ( যেহেতু এখন কার মানুষ / তরুন রা যারা ১৯৭১ এ যুদ্ধ করেনি)
২. আপনি চাইলে পাকিস্থানের কোন অসহায় মানুষ কে সাহায্য বা সমবেদনা জানাতে পারেন ( যেমন – কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ )
৩. কিন্তু যেখানে জাতিগত ভাবে পাকিস্থানকে তুলে ধরা হয় বা রিপ্রেজেন্ট করা হয় ( যেমন – ক্রিকেট বা অনান্য যেকোন বিষয় বা ক্ষেত্রে ) সেখানে একজন বাংলাদেশি হয়ে … এই স্বাধীন বাংলাদেশে বাস করে আপনি পাকিস্থান কে সমর্থন করতে পারবেন না … পারেন না …
পোস্টের শেষে আপনাদের একটা জোকস শুনিয়ে যাই
রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছি এক বন্ধুর সাথে … কথা হচ্ছে …
আমিঃ আচ্ছা ক্রিকেটে এখন World Champion কে রে ?
বন্ধুঃ কেন অষ্ট্রেলিয়া
আমিঃ অষ্ট্রেলিয়া নাকি অষ্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিম ???
বন্ধুঃ একই তো কথা …
আমিঃ কেন এক হবে কেন ? খেললো তো ওরা ১১ জন … বড়োজোড় দলের ১৫ সদস্য আর কোচ ( যদিও অধিকাংশ কোচ আন্য দেশের হয়ে থাকে ) কে World Champion বলা যাতে পারে … তাই বলে পুরো অষ্ট্রেলিয়াকে !!!!!!
বন্ধুঃ আরে গাধা … এই যে বাংলাদেশের খেলা হচ্ছে তো ওরা কি শুধু ১১ জন খেলছে … আমরা … !!! ওরা খারাপ করলে আমরা ১৬ কোটি মানুষ হতাশায় ডুবি … ওরা ভালো করলে ১৬ কোটি মানুষ সারা দিন রাত উল্লাস করি … এই যে ওদের সমর্থন এর জন্য কত কিছু … কেন করি … কারন ওদের সাথেই জরিয়ে আছে আমাদের সবকিছু … ওদের হাতেই আজ বাংলাদেশের পতাকা … ওরা বাংলাদেশ কে তুলে ধরছে সারা বিশ্ব এর কাছে …
আমিঃ তাই নাকি !!! আচ্ছা বন্ধু তাহলে অন্য দেশ গুলোও নিশ্চয় ওদের দেশ কে তুলে ধরার জন্য খেলে ???
বন্ধুঃ তুই যে এতো গাধা আগে জানতাম না … শোন যে কোন খেলায় দেশ ভিত্তিতে কেন এসেছে জানিস ??? ঐ দেশকে সারা পৃথিবির সামনে তুলে ধরার জন্য … তাহলে তো শুধু একা একা খেললেই পারতো তাই না … আর আজকের যত নামি দামি খেলা যেমনঃফুটবল , ক্রিকেট এসব খেলা যে কিভাবে একটা দেশকে সারা বিশ্বের কাছে নিজের দেশ কে রিপ্রেজেন্ট করে চিন্তাও করা যাই না … এই যেমন ধর পৃথিবির মানুষ কি বাংলাদেশ কে চিন্তো … এই ক্রিকেট দিয়েই তো চিনলো …
আমিঃ হুম তাহলে ক্রিকেট শুধু ঐ ১৫ কে না পুরো জাতি বা দেশকেই তুলে ধরে … ??? আজ যদি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জেতে তাহলে ওরা শুধু ১৫ জন ই বিশ্বকাপ জিতবে না … জিতবে পুরো জাতি … পুরো বাংলাদেশ …!!!
বন্ধুঃ অবশ্যই …
আমিঃ আচ্ছা বন্ধু তোমার কি মনে হই না ৭১ এর জন্য পাকিস্থানের ক্ষমা চাওয়া উচিত ???
বন্ধুঃ হঠাত এ প্রসংগ ??? উচিত তো … ওরা যা করেছে তা তো যুদ্ধ নয় গনহত্যা … নির্মম পাষান্ড গন হত্যা … ওদের এই গনহত্যা পৃথিবির ইতিহাসে বিরল নিকৃষ্ট ঘৃন্যতম অপরাধ …
আমিঃ তাহলে যে তুমি ক্রিকেটে পাকিস্থান কে সমর্থন কর !!! আজ না পাকিস্থান নিয়ে কত লাফালাফি করলে !!!
বন্ধুঃ আরে ওটা তো ক্রিকেট … ক্রিকেটে সমর্থন করলেই কি পাকিস্থানকে সমর্থন করা হই নাকি ???
আমিঃ কেন তুমি যে বললে ক্রিকেট শুধু ১১ জন এর খেলা না … পুরো জাতির খেলা … ক্রিকেট রিপ্রেজেন্ট করে পুরো জাতি কেই ??? বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ জিতলে তা হবে বাংলাদেশের জয় ??? ??? ??? ???
বন্ধুঃ :-& :-& :-&
ভাইরে আমি হইলাম আবাল পোলা … আমগো জ্যানী গুনী গো কথা তো শুনলেন … আমি ভাই মূর্খ মানুষ … কেম্নে দেশ প্রেম হয় বুঝিনা … কিন্তু আজকাল কার ডিজুস পোলাপাইন কি বজে তারা আসলে কি করে কেন করে … …
উতসর্গঃ আমাদের দেশের পাকিস্থান সমর্থক আমার প্রাণপ্রিয় অগনিত ভাই ও বোন দের … যারা পাকিস্থান ছাড়া ক্রিকেট খেলা ভাবতে পারে না …
পোস্টের এই পর্যায়ে অনেকেই হয়ত আমার ভারত সম্পর্কিত মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন ... তাদের জ্ঞাতার্থে জানাই ---
ভারত সম্পর্কিত আমার মনভাব ...
মুক্তিযদ্ধে ভারত আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে তার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ ... কিন্তু তার মানে এই নয় যে সারা জীবন তাদের পা চাটতে হবে ... ৭১ এ ভারতের ভুমিকা ও ২০১১ সালের ভুমিকা কিন্তু এক নয় ... আমরা একটু সচেতন হলেই দেখতে পাই ... ফারাক্কা বাধ, টিপাইমুখি বাধ , সম্প্রতি বিএসএফ এর নির্বিচারে বাংলাদেশি হত্যা ... একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনি কিভাবে এসব কে সমর্থন করবেন ??? তারপর আসি ভারতীয় দের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এর কথায় ... দেখুন আপনার বাসার টেলিভিশন এ এখন কি চলছে ??? হিন্দি সিরিয়াল তো ... হুম ... একটি বার কি ভেবেছেন ... এই হিন্দি সিরিয়াল দেখা ... তা দেখে মেয়েদের পোশাকের পরিবর্তন ... আমাদের সংস্কৃতিকে কথায় নিয়ে যাচ্ছে ... ??? এই যে ইভ টিজিং ... এর পছনেও যে এই সিরিয়ালের অনেক বড় ভুমিকা ... ভাবা দেখেছেন কি কখন ???
পার্শবর্তী দেশ বড় হলে তার প্রভাবটা পাশের ছোট রাষ্ট্র এর উপর পরবেই ... কিন্তু আমার প্রশ্ন হল এরকম ক্ষেত্রে ছোট দেশগুলো কে তা সাম্লাতে হবে কৌশল এর মাধ্যমে... টেকনিক এর মাধ্যমে ... আমরা নিজেরাই যদি তাদের প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করে দেই তবে জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবো কিভাবে ...... ???
একটি কথা স্শষ্টভাবে ও দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই ... এখন ২০১১ সাল ... অনেক তো হয়েছে ... এখন আমাদের সময় নিজেদের কারো আড়ালে লুকিয়ে না রেখে একটি সমুন্নত জাতি হিসেবে নিজেদের পৃথিবীর সামনে তুলে ধরা ... আসুন বর্জন করি পাকিস্থান বা ভারত প্রিতী ... আজ জাতি হিসেবে আমরা অনেক উন্নত... ক্রিকেটে তো অবশ্যই ... আমরা আজ বিশ্বের যেকোন দল কে হারিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখি ...
একজন পাকিস্থানি বা ভারোতীয় কে প্রশ্ন করে দেখুন তো ওরা নিজের দেশ ছেড়ে বাংলাদেশ কে সমর্থন করে কিনা ??? ওরা না করলে আমরা কেন করব ???
কেন আমরা নিজেকে একজন গর্বিত বাংলাদেশি ভাবতে পারবো না ...
আমি জানি আমরা পারব... আপনাদের সবাই মুখে যায় বলেন না কেন নিশ্চয় আপনার ভেতরে দেশের জন্য একটু হলেও মমতা আছে ... আমি জানি তা এক সময় প্রকাশিত হবেই...
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৫