বার্মা তথা এশিয়া ও বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত জাতিসমূহের কণ্ঠস্বর অং সান সুচী। গণতন্ত্র ও মানবতাবাদের প্রবক্তা নোবেল বিজয়ী এই অগ্নিকন্যা।
চীনের মাও সেতুঙ, আফ্রিকার ন্যালসন ম্যান্ডেলা, লুমুম্বা, কিউবার ফিডেল ক্যাষ্ট্রো, সুভাষ চন্দ্র বসু, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হক, চিরবিস্ময়কর নাম।
বাঙ্গালী জাতি’র পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। মালয়েশিয়ার মাহাতির, সিঙ্গাপুরের লি কোঁয়াম ইউ, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্নো, নোবেল বিজয়ী ইউনুস এই কাতারে প্রোজ্জ্বল।
কারেন, কোচিন, আরাকান, চীন, শান, মুসলমানসহ মূল বর্মী জাতি-গোষ্ঠি নিয়ে বার্মা গঠিত। ১৯৮৮ সন থেকে এইসব জাতি-গোষ্ঠি নিয়ে গঠিত এই বার্মা বা হাল আমলে পরিচিত মায়ানমার।
১৯৪৮ সনে বার্মার পিতা জেনারেল অং সান স্বাধীনতার পর পর মন্ত্রীসভার বৈঠক চলাকালীন আততায়ীদের ব্রাশফায়ারে নিহত হন। সেই থেকে এই সুবর্নভূমিতে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায়। এখন-ও চলছে সেই যুদ্ধ।
চীন, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ডে এর ঢেউ উপচে পড়েছে। ক্ষমতাসীন বর্মী সরকারের প্রতিনিধি এক সাক্ষাতকারে বহুধাজাতি বিভক্ত এই জাতিকে একত্রিত করে এই দেশের স্বাধীনতা ও সার্র্র্বভৌমত্ব রক্ষার কাজে সামরিক বাহিনী নেতৃত্ব দিচ্ছে।
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যথা: চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি বর্মীদের দ্বারা গঠিত প্রবাসী সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, বার্মার বর্তমান বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে সামরিক বাহিনীর সাথে একটি সমঝোতায় আসতে হবে। শান, কোচিন জাতির প্রতিনিধি বলেছেন, একত্রিকরণ ও ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে সকল জাতি-গোষ্ঠিকে একটি ফেডারেশনের আওতায় একীভূত করতে হবে। এছাড়া বিকল্প নেই। বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠির সম্মিলিত ঐকান্তিক ও নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে ওই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
নির্বাচন হউক। এতে কে জিতল, কে হারল তা নিয়ে তর্ক বৃথা। বিবেকবান, দায়িত্বশীল ও সচেতন তরুণ নেতৃত্ব এ কাজে এগিয়ে এসেছে। এদের বংশধরদের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সেবাদানের স্বপ্ন ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিষয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গবেষনা ও উন্নয়নের সুবৃহৎ কর্মকান্ডে লিপ্ত।
‘আজিয়ান’ বর্মার বর্তমান সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল। এই প্রতিষ্ঠানের সেক্রেটারী জেনারেল একীভূতকরনের কর্মকান্ডে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। সংস্থাটি বিদেশী সাহায্য বন্ধের ঘোরতর বিরোধী। এমন কি অং সান সুচীও এই ব্যাপারে একমত। খোদ যুক্তরাষ্ট্র সরকার আজিয়ানের সিদ্ধান্তের পক্ষে।
সিকিউরিটি কাউন্সিল এবং আমেরিকান কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমিস কার্টার, বিল ক্লিনটন, অং সান সুচীর মত বৈদেশিক সাহায্য বন্ধের বিরোধিতা করছে এবং সমাসীন সরকারকে স্বীকার করে তাদের পরিপূর্ন সহযোগিতা নিয়ে জাতীয় একত্রীকরনের কর্মকান্ডে হাত বাড়াতে মত দিয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অভিজিত ভেজ্জাজিভ আজিয়ানের মাধ্যমে পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী।