জাতিসংঘে যখন বিধবা দিবস বিল পাশ হয়েছে তখন দেশে দেশে চলছে যুদ্ধ বা বাজছে যুদ্ধের দামামা। এ মুহূর্তে আইভরি কোস্টে গৃহযুদ্ধ এবং উত্তর কোরিয়ার ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ উত্তেজনা বিরাজমান। সবাই জানে যুদ্ধের ধ্বংসলীলার ক্ষমতা কী। যুদ্ধে, শুধু মানুষই নয়, দেশের প্রভূত সম্পদেরও ক্ষতি হয়। দেশের সেরা মানুষেরাই হারিয়ে যায়-এই যুদ্ধে। কেননা, প্রতিটি দেশের সামরিক বাহিনী গঠিত হয়,সে দেশের সেরা পুরুষদের দিয়ে যারা বুদ্ধিতে, বিচক্ষণতায়, সততায়, সাহসে ও হৃদয়ের দিক দিয়ে সেরা।অন্ততঃ প্রতিটি দেশ চেস্টা করে, তার দেশের সেরা মানুষ দিয়ে সামরিক বিভাগ গঠন করতে ।তা নইলে নিজেদেরই প্রথম ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।সামরিক বাহিনী গঠিতই হয়, দেশ ও দেশের জনগণকে, দেশি দুবৃত্ত ও বিদেশি শত্রুদের হাত থেকে নিরীহ মানুষকে বাঁচানোর জন্য। আধুনিক সামরিক বিভাগ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়ও জনগণের সাহায্যে এগিয়ে আসে।যুদ্ধে, নারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুইভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়।কেউ বা ধর্ষণের কবলে পড়ে, কেউ বা স্বামী-সন্তান হারিয়ে চরম দুরাবস্থার মধ্যে পড়ে।
পুরুষের সাথে নারীর জীবন-যাপনের লড়াইয়ে, পুরুষই নারীর প্রধান ভরসা! কী ভাতের লড়াই, কী মর্যাদার লড়াইয়ে নারী সব খানেই নারী পুরুষের কাছে জিম্মি। জ্ঞানের লড়াইয়ে যদিও বা টেকে, টেকে না শক্তির লড়াইয়ে বা পুরুষতান্ত্রিক জটিলতার লড়াইয়ে। ফলে নারীকে সব সময়ই পুরুষের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হয়। পৃথিবীর সব স্থানেই নারী ঘরের কাজ দেখে, পুরুষ বাইরের অর্থনৈতিক কাজ দেখে থাকে। যুদ্ধে নারী ও শিশু তাদের এই অবলম্বন হারিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদের মধ্যে পড়ে। ভদ্র মেয়েটিকেও ইতর পেশায় জড়িয়ে চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হয়।
আধুনিক পৃথিবীর যুদ্ধের ইতিহাসগুলি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যুদ্ধে মিলে শুধু লাশ, রাশি রাশি পঙ্গু মানুষ আর হাজার হাজার বিধবা লাভের চেয়ে ক্ষতিই যেখানে বেশি। মিলে মেরুদণ্ডহীন অর্থনীতি,বিধ্বস্ত জনপদ। প্রথম, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধতো বটেই, ভিয়েতনাম-আমেরিকা, বাংলাদেশ-পাকিস্তান, ভারত-পাকিস্তান, ভারত-চীন, ইরান-ইরাক, সোভিয়েত রাশিয়া-আফগানিস্থান, মিশর ইজরাইল ও আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে মুর্হূ মুর্হূ গৃহযুদ্ধ-একটা সত্যিই শুধু প্রমাণ করে, অধুনা যুদ্ধ করে ক্ষতি বই লাভ নেই।এই উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়াই পূর্বেও পরস্পরের যুদ্ধে বিরুদ্ধে জড়িয়েছে। ক্ষতি ছাড়া, লাভ হয়নি কারোই। তবু দেশি বিদেশি স্বার্থাম্বেষি মন্দ লোকের উস্কানিতে যুদ্ধের দামামা বাজে। কেননা, যুদ্ধে ভালো লোকের ক্ষতি হলেও, মন্দ লোকের লাভ হয় ।
উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অনুরোধ তারা এই বিষয়গুলি ভেবে দেখবেন। আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান বজায় রাখা সম্ভব। একই সঙ্গে আই ভরি কোস্টের সরকারকে জাতিসংঘ প্রধানের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিধবা দিবসকে স্বাগতঃ জানানোর পাশাপাশি বিশ্বের সকল মানুষকে আহ্বান জানাচিছ, নারীকে শ্রদ্ধা করুন এবং নারীর বিপদে এগিয়ে আসুন। কেননা, আপনি ছাড়া তিনি পুরুষবিপদ থেকে রক্ষা পেতে অক্ষম। অন্ততঃ নিজে নারীর বিপদ হওয়া থেকে সরে দাড়াঁতেতো পারেন!