অনেক খোঁজ-খবর নিয়ে, বিশেষ করে ইন্টারনেট থেকে, জানলাম সাউথ কোরিয়াতে বাংলাদেশীদের জন্য বিনা ভিসায় সর্বোচ্চ ৯০ দিন একটানা থাকা যাবে। আমার থাকতে হবে মাত্র ৩ দিন। কনফারেন্সের দিন সিউলে পৌঁছে, কনফারেন্স শেষের পরের দিন ফিরে আসব। আমি কোরিয়ান দূতাবাসে ফোন করে বিস্তারিত জানালাম। তারা বলল, আপনার ভিসা লাগবে না। ইমিগ্রেশনে কনফারেন্সের invitation letter দেখালে ঝামেলা হবেনা। যা হক, সে সময় কোরিয়াতে বেশ শীত পড়ছিল ভেবে এক বন্ধুর পরামর্শে তার থেকে একটি লেদার জ্যাকেট ধার নিয়ে ১৯ তারিখ সন্ধ্যায় মালেশিয়ান এয়ারলাইন্সে কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
কুয়ালালামপুরে যাত্রা বিরতি ছিল। কুয়ালালামপুরে যখন পৌঁছলাম তখন সবে সন্ধ্যা হয়েছে। প্রায় ৪-৫ ঘন্টা পরে রাত ১১টার দিকে অন্য একটি এয়ারবাসে সিউলের incheon airport এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেব। এই অবসর সময়ে আমি ঘুরে ঘুরে কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট দেখছিলাম। আমার কাছে চারদিকটা উজ্জল লাইটিং এর কারণে অনেক সুন্দর লাগছিল। বিভিন্ন স্টলগুলোতে ঘুরতে লাগলাম। তবে জনিসপত্রের দাম অনেক। আর সে সময় ব্যচেলর ছিলাম বলে তেমন কিছু কেনা হল না।
একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম, এয়ারপোর্টের দোকান গুলোতে যারা কাজ করছে, তাদের বেশিরভাগ মালে মুসলিম মেয়ে। তাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে (মাথায় হেডস্কারফ সহ) কাজ করছে। সবাই শিক্ষিত, অনেককে এখনও ছাত্রী মনে হেল, হয়ত: পার্টটাইম কাজ করছে। সবাই ফ্লুয়েন্ট ইংলিশ বলছে। মালেশিয়ার এ অগ্রগতি দেখে ভালই লাগল।
মাগরিবের আযান হলে এয়ারপোর্টের ভেতরে মসজিদে গিয়ে ওজু করে নামাজ পড়লাম। পূরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্হা। নামাজ শেষে খুব ভাল লাগছিল। ফুরফুরে মেজাজ। আরো কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরলাম। এর পরে এক মালে রেস্টুরেন্টে খেতে ঢুকলাম। দুর্ভাগ্যক্রমে মালেশিয়ান খাবারের প্রতি আমার এর আগের অভিজ্ঞতা ভাল ছিল না। এরা খাবারে প্রচুর মিস্টি জাতীয় সস, বাদাম, নারকেল, চিনি ব্যবহার করে। আমি আবার ঝাল ছাড়া খেতে পারি না। যা হক, খুব সতর্কতার সাথে অল্প কিছু খাবার নিয়ে খেলাম। কারণ এর পরে প্লেনে উঠলে হয়ত অন্য কিছু খাব।
রাত ১১টার দিকে আল্লাহর নাম নিয়ে নির্ধারিত এয়ারবাসে সিউলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
পরবর্তী পর্ব: সিউল ইমিগ্রেশনে তিক্ত অভিজ্ঞতা
ছবির সূত্র: এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:২০