রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেশের সেরা ওলানা বা ধর্মগুরুকে বসালে কি হবে? দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় (আই রিপিট, জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকা) মওলানা, কেউ কেউ যাকে চাঁদেও দেখে, সেই মওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদিকে বসালেই বা কি হবে ? সে মওলানা, ধর্ম গুরু, ভাল মানুষ এমন কি চোর বাটপার সে যে কেউই হোকনা কেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গণতান্ত্রিক ধারায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মধ্য দিয়ে হবে- এতে কারো কোনো আপত্তি থাকতে পারেনা, আমার নাই। সেই ভাল প্রধানমন্ত্রী, তার ভাল তার কাছে আমার কি । আমি তার কবরে যাবো না। সেও আমার কবরে যাবে না। যার যার পাপের বোঝা সে বহন করবে। তার জান্নাতে সে যাবে, আমার কি? আমি চাই দেশের ভাল, তার ভাল-মন্দ দিয়ে কিছু যায় আসে না। দেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমি শুধু রাষ্ট্রের কাছে প্রথমত চাই আইনের শাসন তথা জান-মালের নিরাপত্তা, আর দ্বিতীয়ত: নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যাতে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। তৃতীয়ত রাষ্ট্রের মৌলিক সেক্টর গুলি তার নিজস্ব নিয়ম নীতির মধ্যেই চলবে। দেশের প্রত্যেকটা নাগরিক যাতে বুক উঁচিয়ে বলতে পারেআ, “এই দেশটা আমার”। দেশের সরকার সে যে কেউ হোক দেশের জনগণের সত্যিকারী অভিবাবক হয়ে থাকবে, রাজনীতি সচেতন নাগরিক হিসেবে এটাই আমার চাওয়া। আর এই তিনটা জিনিস ঠিক রাখার জন্য রাজনৈতিক অভিবাবকদের শুধু একটা জিনিসের প্রতি শতভাগ শততা প্রদর্শন করলেই সম্ভব, সেটা হলো ‘নিয়োগ’। রাষ্ট্র চলবে মেধাবী লোকদের দ্বারা। সরকার যাবে, সরকার আসবে, এটাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কাঙ্খিত রাজনৈতিক ধারা। কিন্তু নির্বাহী বিভাগ থাকবে রাজনীতি মুক্ত এবং জনমুখী। দুর্নীতি, দলীয়করণ এবং প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে মেরুদন্ডহীন, অযোগ্য, মেধাহীন মানসিক/বিবেক প্রতিবন্ধী দলীয় ক্যাডার দিয়ে যে প্রশাসন গড়ে তোলা হয়েছে, তা দেশকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাবে।
লতিফ সিদ্দিকি ইসলাম ধর্মকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছে, তাতে কিন্ত ধর্মের কোন ক্ষতিই হয়নি। এরকম ইসলামের শুরু থেকেই হয়েছে । আমার প্রিয় নবীকে পাগল কবি বলে ডেকেছে তাতে কি আর আর নবীর গুনগ্রাহী মানুষের অভাব হয়েছে ? ইসলামেরও কোন ক্ষতি হয়নি এবং কেউ তা করতেও পারেনি। বরং উত্তরোত্তর তা বেড়েই চলেছে। এক লতিফকে এ্যারেস্ট করে এমন কি ফাঁসি দিয়েও কিছুই হবে না । যেখানে লতিফের অভিবাবকই অবিশ্বাসী, লোকদেখানো ধর্মকর্ম করে। দেশের ধর্মপ্রান মানুষদের সতর্ক থাকতে হবে। লতিফ সিদ্দিকি ইস্যু নিয়ে কোন আন্দলনে যাওয়া ঠিক হবে না । তাতে এই অবৈধ সরকারের পাতা ফাঁদেই পড়ে যাওয়া হবে। সরকার বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের যে ইটোপিয়া সত্যি প্রমাণ করতে চাইছে, সেটাই প্রমাণিত হয়ে যাবে। এটা সরকারের একটা খেলা। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই এই নাটক সাজিয়েছে যাতে কিছু অরাজকতা দেখিয়ে বহির্বিশ্বের কাছে দেশের ভুয়া জঙ্গিবাদকে সত্য প্রমাণিত করে আরো কিছুদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়। কারণ সরকার জানে, ক্ষমতা ছাড়লে পিঠের চামড়া আর পিঠে থাকবেনা। সুতরাং যেকোন মূল্যে, দেশকে বিঁকিয়ে দিয়ে হলেও টিকে থাকতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দিকে দিয়ে বিশ্বের প্রথম সারির যেকোনো দেশকে টেক্কা দিতে পারে। এই দেশে মুসলমানের বাড়িতে দুধ পুড়লে প্রতিবেশি হিন্দুবাড়ির ভাবি ছুটে আসে চুলা বন্ধ করতে। আমাদের আছে হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শান্তুপূর্ণ এবং গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য। সুতরাং হাসিনার ফাঁদে পড়ে অযথা উত্তেজিত হয়ে এই গৌর ভূ-লুন্ঠিত করা যাবেনা। সাবধান!!
বরং ধর্মীয় ইস্যু বাদ দিয়ে দল-মত নির্বিশেষে এই অবৈধ সরকার হটানোর আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার এখনি সময়। আগামী ৫ ই জানুয়ারি আসার আগেই যেকোন মূল্যে এই সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এজন্য বিরোধী দলের সাথে সাথে প্রয়োজন সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ। অল আউট মুভমেন্ট ছাড়া এই জালিম, ফ্যাসিষ্ট, স্বৈরাচারি অবৈধ সরকারকে উৎখাত করা যাবেনা।
সকলের একই হোক শ্লোগানঃ জালিম অবৈধ সরকার, ভোট চাইলে জুতা মার।