somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবিত্রী আমার বন্ধু ছিল না।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাবিত্রী, আমার ক্লাসমেট ছিল। অতখানি অধিকার জন্মেনি যে বন্ধু বা বান্ধবী বলে পোস্ট লেখা শুরু করবো। তাছাড়া এখন কার ফেসবুকের আমলের মতো আমাদের সময়ে এত সহজে বন্ধু বলে ডাকা, গায়ে পড়া ভাব ছিল না বা হতো না। আমাদের সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্ধুত্বসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিল সততায় ভরপুর।

যে কথা বলছিলাম, সাবিত্রী আমার ক্লাসমেট কিন্তু কখনো আমরা একসাথে ক্লাস করিনি, তাহলে কি করে ক্লাসমেট? আসলে ক্লাসমেট না বলে ইয়ারমেট বলাটাই মনে হয় বেশি যুক্তিযুক্ত। আমারা প্রাইভেট পড়েছিলাম কিছুদিন একসাথে এবং সে সুবাদেই ইয়ারমেট না ভেবে ক্লাসমেট ভাবতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধা করতাম। সামান্য আলাপ চারিতায় একটুখানি পরিচিত। সাবিত্রী খুব সুন্দরী আর নরম প্রকৃতির মেয়ে ছিল। সরস্বতীর পুজোয় ওকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম রাজহাসের সাথে তোর সাদা মূর্তিটা বানায়ছে ক্যারে ? ওর স্বভাবসুলভ জবাব ছিল, যাহ্‌! আমার হবে কেন? এটাতো সরস্বতীর প্রতিমা। ওরে কখনো রাগতে দেখিনি। নারীরা যে কারনে সবচেয়ে বেশি সুন্দরী হয় তা ছিল ওর মাঝে ১০০তে ১০০, আর তা হলো লজ্জা। ওর মতো লজ্জাবতী কন্যা আমি আর দ্বিতীয়টা দেখিনি।

জয়পারা পাইলট স্কুলের সামনে ওদের একটা মুদি দোকান ছিল। সে দোকানে ও মাঝে মাঝে বসতো । এক টাকায় দুই তকতি পাওয়া যেতো এবং দুইটা লাল ফোটা দেওয়া সাদ বিস্কুট । আমি তিনটা নিয়ে নিতাম কখনো জোর খাটিয়ে, কখনোবা ক্লাসমেটের অধিকারের বলে। তখনো বুঝিনি কি একটা ঝামেলায় যেন ওদের বাড়ীটি বিক্রি করে দিয়েছিল। বাড়ী বিক্রি করার পরও ওর ছোট ভাই দোকানটি চালাতো । কিন্ত মাঝ কিছুদিন পর ওরা হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেল। ওদের আর কোন হদিস পাইনি, খুঁজিওনি । খোঁজার ইচ্ছাও কখনো করিনি, আগেই বলেছি সাবত্রি আমার বন্ধু ছিল না। তবু কোথাও যেন শূন্যতা কাজ করতো মাঝে মাঝে। কিশোরবেলার সেই মন অজানা কারনেই মাঝে মাঝে মনে করে সাবিত্রীর কথা।

কাল হটাত করে ফেসবুকে আলাপ চারিতায় পরিচয় হল সাবিত্রীর ভাইপোর সাথে। ওর কাছে শুনলাম সাবিত্রী বিয়ে করে চলে গেছে ইন্ডিয়াতে। আহ্‌! এই জীবনে আর কখনো দেখা হবে না ওর সাথে। কিশোর বেলার সে লাল ফোটাওয়ালা সাদা বিস্কুট জোর করে খাওয়ার জন্যে স্যরিও বলতে পারবো না। আমারা একই এলাকার পাড়া-প্রতিবেশী ,আমরাই তো আপনজন কিন্ত শুধু নোংরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা আর ধর্মীয় বিভাজনে পর হয়েছি। চলে গেছে অনেক দূরে যেখানে ও নিশ্চিত নিরাপত্তা বোধ করে। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে ওর মন খারাপ করেনা জন্মভূমির জন্যে ? যেখানে ও কানামাছি খেলছে, পুতুলের বিয়ে দিছে। সাবিত্রী, যেখানে থাকিস ভাল থাকিস রে...
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×