বৃটেনের সাথে বন্দী বিনিময়ের চুক্তির পর তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়। দেশে ফিরে গিয়ে রিডলি কোন সংবাদ মাধ্যমে কথা বললেন না। তিনি কুরআন কিনে পড়লেন নিজ বাসায় বসে। কিছুদিন পর সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তালিবানদের বিরুদ্ধে মিডিয়া প্রপাগান্ডার প্রায় সবই যে অনুমান নির্ভর সে কথাও বললেন তিনি। তাঁর এই অবিশ্বাস্য পরিবর্তন হতে পারতো নিউজ হট কেক। তা না হয়ে সে খবর হয়ে গেল ব্ল্যাক আউট। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো এই যে, অবিশ্বাসী বিশ্বের মিডিয়া এই খবর অল্প গুরুত্ব দিয়ে হলেও প্রচার করল, কিন্তু সম্পূর্ণ চেপে গেল বাংলাদেশ সহ মুসলিম নামধারী বিশ্বের তল্পীবাহক মিডিয়া। এরাই মালালার জন্য পান থেকে চুন খসলে ঝড় তোলে পত্রিকার পাতায় আর টিভির পর্দায়, অথচ এদের ডেস্কে আজ ঠাই নেই এদেরই বোন রিডলির। কিন্তু এই বোন দমে জাননি। তিনি নিজের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সেই থেকে আজ পর্যন্ত ইসলামের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। নিজের সবটুকু স্বর দিয়ে তিনি বলে যাচ্ছেন ইসলামের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডার বিষয়ে। তিনি আরো বলছেন তালিবানদের নামে যা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়, আপনারা যাচাই করুন। তার কথা আজ মিডিয়াতে আসেনা সত্য, কিন্তু তাঁর রবের কাছে নিশ্চয়ই তা লিপিবদ্ধ থাকছে। এর প্রতিদান তিনি তাঁকে দিন। ইয়োনি রিডলি পরবর্তিতে আবার যান আফগানিস্তান। এবার সঙ্গে যায় তাঁর মেয়ে। তিনি আবিষ্কার করেন আরো লুকানো সত্য। মা-মেয়ের হিজাবে আবৃত ছবি দেখে অশ্রু ঝরে বিশ্বময় মুমিনদের চোখে।
মালালা ইউসুফজাঈ। ১৫ বছরের একটি মেয়ে দুদিন আগে ভাষণ দিয়েছে জাতিসংঘের অধিবেশনে। সারা বিশ্বে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে তা। প্রিন্ট মিডিয়ায় ছাপা হয়েছে তার ভাষণের পুরোটা কিংবা সারাংশ। এর কারণ মালালা তালিবানদের প্রতিপক্ষ হিসাবে নেমেছে, যাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারলে বাহবা পাবার অভাব হয়না। আজ মালালার নামে বিলিয়ন ডলারের ফান্ড তৈরী হয়েছে, তার নাম প্রস্তাবিত হয়েছে নোবেল শান্তির জন্য। হায়, মালালাকে যে তালিবানরা গুলি ছুঁড়েনি, তালিবানদের সে বক্তব্য পৃথিবীর কোন মিডিয়া প্রচার করেনি। সারা পৃথিবীর সকল নন মুসলিমতো বটেই, পৃথিবীময় মুসলিম নামধারী ভাইয়েরাও আজ তাদের শাপ-শাপান্ত করে বেড়াচ্ছে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনে বলেছেন, কোন ফাসিক ব্যক্তি যদি কোন সংবাদ নিয়ে আসে তা অবশ্যই যাচাই করে তাতে বিশ্বাস করতে হবে। আজ কুফফার নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব মিডিয়া এবং তাদের দোসর নিয়ন্ত্রিত দেশী মিডিয়ার খবর যাচাই না করেই ইসলামের বিরুদ্ধের খবরগুলোতে সবাই বিশ্বাস করছে।
কিন্তু সময় কি সবসময় এক যায়? যে দ্বীনকে আল্লাহ বিজয়ী হবার জন্য পাঠিয়েছেন তা যে আবার বিজয়ী হতে চলেছে তার লক্ষণ দিকে দিকে কি ভেসে উঠছে না?