এক।।
রাত সাড়ে এগারোটায় রুমে ফিরে একটি যুবকের আত্মবিশ্লেষন-
ক্লাসের ফাকে টঙের মামার কাছ থেকে একটা লীফ নিয়ে দোস্ত নাহিদের পাশে এসে বসেছিলাম। কিছুটা গালাগালি আর ফালতু টপিক নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনার পর সিগারেটটিতে আগুন ধরাতে গিয়েই টঙের অপর পাশে বসা কোন একটি পায়ের দিকে নজর পড়েছিল। একটা মেয়ে এত সুন্দর করে পা নাচায়! আাগে সাজেদের ধারনা ছিল মেয়েরা মাত্র দুটি ক্ষেত্রেই শৈল্পিকতার পরিচয় দেয়, প্রথমটা হল ন্যকানি প্রদর্শন আর দ্বিতীয়টা চোখের জল ঝরানো। আমার মনে হল আমার জানায় ভুল ছিল, মেয়েরা ক্যম্পাসের নোংড়া চায়ের দোকানে বসে নোংড়া কাপে অদ্ভুত ঠোটের চুমুক দিতে দিতে পাও সুন্দরভাবে নাচাতে পারে। ক্ষনিকেই মনে হল সব মেয়েরা পারে না বোধহয়, এই মেয়েটাই পারে।
নাহ মেয়েটা এখনো পা নাচানো বন্ধ করেনি। উপরের দিকে তাকাব কিনা তা নিয়ে সন্দেহে পড়ে গেছিলাম আমি। উপরে তাকিয়ে যদি এতক্ষনের ভাললাগার বিসর্জন দিতে হয়। না ভয়ের জয় হল। আমি নিজেকে যতটা ভীতু ভাবি আসলে ততটা ভীতু না। সে সত্যিই উপরে তাকাল, এবং মেয়েটার সবকিছুতেই অবিভুত হতে থাকল।
টিউশানিতে যাবার সময় আজ গলির মুখের ঐ নরসুন্দরের দোকানের ঘড়িটাতে কয়টা বাজতে দেখেছিলাম? মনে করতে পারছি না। অথচ মাসখানেক আগে আমার ঘড়ি আর সেলফোনটা একই সাথে আমার সাথে বিরুদ্ধ অবস্থান জারি করলে আমি ঘড়ি দেখার কাজটা সারতাম গলির মুখের ঐ নরসুন্দরের দোকানটা থেকেই। এরপর থেকেই অভ্যাসটা রয়ে গেছে। গতপরশু ঘড়িতে যাবার পথে দেখেছিলাম সাতটা চল্লিশ আর ফেরার পথে কাটাটা ছিল নয়টা ত্রিশের ঘরে। কিন্তু আজকে?
টিউশনিতে চা দিয়েছিল, চায়ে চুমুক দেয়ার সময় দুটো ঠোটের কথা মনে পড়ছিল।
স্টুডেন্টের বাসা থেকে বের হবার পর আমাকে দ্রুত দুটি বাচ্চা অতিক্রম করেছিল।একটা বচ্চা ছিল আরেকটার চেয়ে বয়সে বড়। বড়টা বোধহয় পিচ্চিটাকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছিল ভুত ভুত বলে। পিচ্চিটা কান্না করে আপু আপু বলে ডাকতে ডাকতে বড় বাচ্চাটার পিছনে দৌড়। বিষয়টা তখন খেয়াার করিনি। রুমে ফেরার পর মনে পড়ে গেল। এরকম একটা মজার ঘটনা ঘটে গেল আমার তখন বিষয়টা নজরেই পড়েনি। এইত দুমাস আগে টিউশনিতে যাবার পথেই খুব দ্রুত হাটছিলাম। এক পিচ্চি হুজুরকে অতিক্রম করার পর সে মনে করল আমি তার সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছি। তাই সে আমাকে অতিক্রমের চেষ্টা শুরু করল। বিষয়টা বুঝতে পেরে আমি আরো জোরে হাটা শুরু করেছিলাম, যদিও একেবারে শেষে পিচ্চিটাকে এগিয়ে যেতে দিয়েছিলাম। আমার তো এরকম ছোট মজার ঘটনা মিস করার কথা না।
টিউশনি থেকে ফেরার পথে রিক্সা নিলাম। উঠেই পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরাবার জন্য মাথাটা একটু নীচু করতেই পাদুখানি ভেসে উঠল চোখের কোনায়। পাদুটি মৃদু নড়ছিল।
দুই।।
যুবকটি ভাবছে ছোট্টগল্প হিসেবে বোধহয় খারাপ না। যুবকের হাতটা এগিয়ে যাচ্ছে কীবোর্ডের দিকে...........
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০০