সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ এবং এর আয়তন হচ্ছে ১৭ বর্গ কিলোমিটার। দ্বীপটিতে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল গাছ বিদ্যমান রয়েছে। তাই দ্বীপটি স্থানীয়ভাবে নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত। প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ পর্যটক দ্বীপটিতে ভ্রমণ করতে আসে।
যাতায়াত
সেন্টমার্টিন যেতে হলে আপনাকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফে আসতে হবে। আর বাংলাদেশের কমবেশি সব জেলা থেকেই কক্সবাজারে বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুর, শ্যামলী, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ সহ বেশ কিছু জায়গা থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বাস কক্সবাজার চলাচল করে থাকে। অথবা ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি টেকনাফে আসতে পারেন। বাসগুলোর প্রতি সিটের ভাড়া মান বেধে সাধারণত ৯০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। পরে টেকনাফ থেকে সরাসরি জাহাজে করে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে পারেন। জাহাজ ভাড়া জনপ্রতি যাওয়া ও আসা সহ ৬০০-৮০০ টাকা (নন এসি)এবং ১০০০-১৬০০ টাকা (এসি)।
ভ্রমণ পরিকল্পনা
সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে চাইলে দুই থেকে তিন দিনের পরিকল্পনা করবেন। যাতে সবকিছু ভাল ভাসে উপভোগ করতে পারেন। টেকনাফ থেকে জাহাজ গুলো সেন্টমার্টিন দ্বীপে দুপুর ১২ থেকে ১২.৩০ মিনিটের দিকে পৌছে থাকে। তারপর জাহাজ থেকে নেমে প্রথমে হোটেল ঠিক করবেন। তারপর খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম নিবেন। কারণ দীর্ঘ সময় যাত্রা করলে শরীর কান্ত থাকে। তারপর বিকেলের দিকে বিচে হেঁটে, আড্ডায় উপভোগ করুন। সন্ধায় হোটেলগুলোতে চলে বার-বি-কিউ। এতে সামুদ্রিক মাছগুলো সুস্বাধু রেসিপি খেতে পারেন।
দ্বিতীয় দিন সকালে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ুন বিচ উপভোগ করতে। তারপর দুপুরে খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়ুন ছেঁড়া দ্বীপ ঘুরার জন্য। দ্বীপের চারপাশ হেঁটে-হেঁটে ঘুরে দেখতে চাইলে ৩-৪ চার ঘন্টা সময় লাগবে। সাইকেল ভাড়া করে নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন।
কিছু কেনা-কাটা করতে চাইলে সন্ধায় সেন্টমার্টিন বাজার থেকে তা-সেরে ফেলুন। রাতে বার-বি-কিউ অথবা ক্যাম্পিং খাবার আয়োজনে অংশ গ্রহণ করুন।
তৃতীয় দিন ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা শেষ করে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। বিকাল ৩ টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে জাহাজ টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। তারপর সেখান থেকে বাসে সরাসরি ঢাকা অথবা কক্সবাজার আসতে পারেন। তারপর আপনার নিজ গন্তব্য স্থানে যান।
হোটেল পর্যটকদের সেন্টমার্টিন দ্বীপে রাত্রি যাপনের জন্য কিছু উন্নতমানের কয়েকটি হোটেল ও কটেজ রয়েছে। এছাড়া আবার অনেক বাড়িতে পর্যটকদের জন্য থাকার সুব্যবস্থা আছে।
খরচ
মোটামুটি মানে হোটেলগুলোতে প্রতি কক্ষে খরচ পড়বে ৮০০-১২০০ টাকা। আবার ডাবল বেড়ের কক্ষগুলোতে খরচ পড়বে ১২০০-২০০০ টাকা। পিক সিজনে সরকারী ছুটির দিনগুলোতে খরচ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। জনপ্রিয় হোটেল গুলো হচ্ছে- প্রিন্স হেভেন রিসো, ব্ল–মেরিন রিসোর্টঃ, সমুদ্রবিলাসঃ, ফ্যান্টাসি ফান, ড্রিম নাইট রিসোর্ট, প্রসাদ প্যারাডাইস, সমুদ্র কুটির, নীল দিগন্ত রিসোর্ট, কোরাল ভিউ, কোরল ব্লু, মারমেইড, সি প্রবাল, সায়রী, সি ইন, হোটেল সাগর পাড় ইত্যাদি।
সেন্টমার্টিনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি সতর্কীকরণ নির্দেশনাঃ
* সমুদ্র স্নানের পূর্বে জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিন।
* এক হাঁটু পানির নিচে না নামাই শ্রেয়।
* পানিতে নেমে উত্তেজনার বসে তীর হতে দূরে যাবেন না।
* সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না।
* প্রাপ্ত বয়স্কদের অনুপস্থিতিতে ছোট ছোট বাচ্চা পানিতে নামা নিষেধ।
* একা একা কখনই পানিতে নামবেন না।
* নৌ যান চলাচল কালে লাইফ জাকেট পরিধান করুন।
Source: Webpedia Online