ফিরে আসা আবার ইকো পার্ক ট্রেইলে- ২য় পর্ব
পরদিন সকালে ঘুম ভাঙল বাহিরে দাঁড়ানো কয়েকটা কৌতূহলী শিশু ছাত্র ছাত্রীদের কথাবার্তা ও ফিসফাস শুনে। এটা কি মশারী না অন্য কিছু, এটার ভিতরে কয়জন থাকতে পারে, কয়জন মানুষ আছে... ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের কৌতূহল কিছুটা নিবারণ হোল যখন আমরা তিনজন তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলাম। স্কুলের টিউবওয়েলের পানিতে গোসল সেরে নিয়ে, তাঁবু ও ব্যাগপত্র সবই গুছিয়ে নিলাম। সাথে থাকা গতদিনের বাকি কমলাগুলো শিশুদের মধ্যে বিলিয়ে দিলাম। গতদিন তাঁবুটাকে বয়ে নিতে বেশ কষ্ট ও ঝামেলা হয়েছে, তাই আজকে এইটাকে বহনের সুবিধার জন্য সুই সুতা নিয়ে ব্যাকপেকের উপরের দিকে কিছু বেল্টের ব্যাবস্থা করে নিতে নিতে প্রায় ঘণ্টা খানেক পার হয়ে গেল। সব গুছিয়ে নিয়ে চায়ের দোকানে যেয়ে বানরুটি ও চা দিয়ে নাস্তা করে রওনা দিতে প্রায় ১০ টা বেজে গেল।
কিছুক্ষণ হেঁটে আমরা সন্ধ্যাকুরা পৌঁছলাম। এরই মধ্যে মোটর সাইকেলে করে তিনজন আমাদের সামনে এসে দাঁড়াল। মোটর সাইকেল থেকে নেমে আমাদের পরিচয় জানতে চাইল, আলাপ পরিচয়ে জানলাম মামুন ও আরিফ, তাঁরাও ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন তিনদিনের ছুটিতে। আমাদের দেখে কৌতূহলী হয়ে আমাদের সাথে পরিচিত হতে এগিয়ে এসেছেন। তবে আমাদের মতো হেঁটে নয়, শেরপুর থেকে মোটর সাইকেলে করে। উল্লেখ্য যে শেরপুর শহরে মোটর সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য, মোটর সাইকেলের চালক নিজেই গাইড হয়ে আপনাকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে দেখাবে। তাঁরাও সেইদিন সন্ধ্যাকুরা রাবার বাগান হয়ে মধুটিলা ইকো পার্কে বেড়াতে এসেছেন। আলাপ পরিচয়ে কিছুটা সময় পার করে আবার সামনের পথে পা বাড়ালাম।
গতদিনের তুলনায় আজকে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর হাঁটা আরম্ভ করেছি, তার উপর প্রচণ্ড রোদ। বেশ গরম লাগচ্ছে, বার বার কাহিল হয়ে পরছি, একটু বিশ্রাম নিতেই তনময়ের তাড়া খেয়ে আবার দৌড়ের উপর এগুতে হচ্ছে। এইদিকে বনবাদর খুব কম, প্রায় নেই বললেই চলে। যাও আছে তা বেশ দূরে দূরে, প্রায় কয়েক কিলো মিটার উত্তরে একদম বর্ডারের কাছে। পথের উপরে ছায়া বৃক্ষের সংখ্যাও অনেক কম, প্রায় নেই। কিছুদূর পর পর দু একটা ঘর বাড়ি বা লোকালয়, আর পথের দুপাশে সবুজ ধানের বিস্তৃতি। দক্ষিণে দৃষ্টিসীমায় শুধু সবুজ ধানের জমি আর জমি তারপরে শিল্পীর আঁকা তুলির আচরের মতো গ্রামগুলো চোখে পরে। আর উত্তরে দৃষ্টিসীমায়ও শুধু সবুজ ধানের জমি আর তারপর দূরে বনাঞ্চল ও মেঘালয়ের পাহাড়সারি চোখে পরে। গতবারের ট্রেইলে রংটিয়া থেকে সমাসচুরা বাজারে পর্যন্ত এই জায়গাটুকু রাতের অন্ধকারে অতিক্রম করেছিলাম তাই কিছুই চোখে পরেনি আর গরমটাও অনুভব করিনি। এইবার দিনের আলোতে সবকিছুই দৃশ্যমান, সাথে গরমটাও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে হেঁটে আমরা হলদীগ্রাম এসে পৌঁছলাম।
হলদীগ্রামের এক দোকানে চা বিস্কুট খেয়ে কিছুক্ষণের বিরতি নিয়ে আবার রওনা হলাম। হলদীগ্রাম পার হতেই মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা মারিশি নদীর ব্রিজে এসে পৌঁছলাম। খুব সুন্দর নদীটি এক পলক দেখার জন্য ব্রিজের উপর কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি করে আবার রওনা হলাম সমাসচুরার উদ্দেশ্যে। ব্রিজের গোঁড়ায় একটা জলপাই গাছ চোখে পরতেই আরিফ জলপাই গাছে উঠে কয়েকটা জলপাই নিয়ে আরিফ ও তনময় বেশ আয়েশ করে খেতে খেতে আবার রওনা হল। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক হেঁটে পৌঁছলাম সমাসচুরা বাজারে। মনে মনে ভাবতেছিলাম যে বাজারে এসে গতবার পরিচয় হওয়া সামাসচুরার মেম্বার মুসলিম সাহেবের সাথে দেখা করব। আমরাও একদিক দিয়ে বাজারে প্রবেশ করলাম আর অন্য দিক দিয়ে তিনিও মোটর সাইকেলে করে বাজারে এসে হাজির। সৌভাগ্যক্রমে তাঁর সাথে দেখা হয়ে গেল। প্রায় এক বৎসর আগে পরিচয় আমাকে চিনতে তাঁর খুব একটা কষ্ট হয়নি। চা খেতে খেতে তাঁর সাথে কিছুক্ষণ আলাপ করে আবার রওনা হলাম মধুটিলার উদ্দেশ্যে।
তখন প্রায় আড়াইটা বাজে, আস্তে আস্তে আকাশ কাল মেঘে ছেয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি নামবে। আবহাওয়া কিছুটা শীতল হয়ে এসেছে, ভালই লাগছে হাঁটতে। আধঘণ্টা হেঁটে আমরা মধুটিলা ইকো পার্কে চলে আসলাম। পার্কের ভিতরে প্রবেশ করে কিছুটা এগুতেই আবার মামুন ও আরিফের সাথে দেখা হয়ে গেল। তাদের সাথে কিছুক্ষণ আলাপ করে ছবি তুলে আমরা ইকো পার্কের ওয়াচ টাওয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হতেই জুম বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল। অনেকটা কাকভেজা হয়ে দৌড়িয়ে ওয়াচ টাওয়ারের কাছাকাছি একটা দোকানির ছাউনিতে আশ্রয় নিলাম। দোকানি বাচ্চাদের বিভিন্ন রকম খেলনা, মহিলাদের কিছু প্রশাদনি সামগ্রি ইত্যাদি সাজিয়ে বসে ছিল। খুব বৃষ্টির কারনে তাঁর দোকানও অনেকটা গুঁটিয়ে ফেলেছে, আধঘণ্টা অপেক্ষা করেও বৃষ্টি কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, বরং বৃষ্টির জাপটায় আমরা আরও বেশী ভিজে যাচ্ছি। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ওয়াচ টাওয়ারে দৌড়ে গেলাম। ওয়াচ টাওয়ারের নীচেই সেই পুরন ঝালমুড়ি বিক্রেতার সাথে দেখা হয়ে গেল। দেখে চিনতে তাঁর খুব একটা কষ্ট হল না। গতবারের পরিচয় হওয়া ওয়াচ টাওয়ারের টিকেটারকে খোঁজ করে জানতে পারলাম, সে অন্যদিকে চাকুরী নিয়ে চলে গেছে। নূতন টিকেটারের কাছে টিকেট কাটতে যেতেই সে টিকেট দিতে রাজি হল না, পিছন থেকে ঝালমুড়ি বিক্রেতা ইশারায় টিকেট দিতে নিশেদ করে আমাদের সম্মান দেখিয়ে বলল, স্যার আপনারা এমনি উঠেন টিকেট লাগবে না। অতএব টিকেট ছাড়াই টাওয়ারে উঠলাম।
তখনও অনেক বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টির কারনে দূরে ভারতের পাহাড়গুলো দেখা যাচ্ছে না চতুর্দিক সম্পূর্ণ ঘোলা দেখা যাচ্ছে। শেরপুর থেকে আসা পুলিশের একজন এস আই এর সাথে পরিচয় হল, তিনি পাবনা থেকে আগত তাঁর পরিবার ও আপনজনদের ইকো পার্কে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন। বেশ কিছুক্ষণ পার করে দিলাম তাঁর সাথে আলাপ করে, এর মধ্যে বৃষ্টিও অনেকটা কমে এসেছে। গুরি গুরি বৃষ্টিতে আমরা নেমে এলাম ওয়াচ টাওয়ার থেকে, নীচে ঝালমুড়ি বিক্রেতাকে বিদায় জানিয়ে ইকো পার্ক থেকে বের হওয়ার জন্য রওনা হলাম। ততক্ষণে ঘড়িতে প্রায় সাড়ে ৪ টা। ইকো পার্ক থেকে বের হয়ে পাশের হোটেলে যেয়ে দিনের খাবার সেরে নিয়ে আবার সামনের পথে পা বাড়ালাম।
প্রায় সাড়ে ৫ টা বাজে, বিকেল প্রায় শেষ আকাশও মেঘলা, চতুর্দিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ, বৃষ্টির পানিতে রাস্তা কাদায় একাকার তার উপর ছোট বড় গর্ত। টর্চের আলোতে পিচ্ছিল পথে খুব সাবধানে এগুতে হচ্ছে, যদিও তারাতারি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের এবারের গন্তব্য বারোমারী হয়ে নাকুগাও এর হাতিপাগার, তাও প্রায় ১০/ ১২ কিলো মিটার পথ। কামালপুর থেকে মধুটিলা পর্যন্ত বর্ডার রোডে এসেছি, তাই বর্ডার রোডে উঠার জন্য মধুটিলার ভিতরের পথে অনেকটুকু এগিয়েছি। স্থানীয় গ্রামবাসীদের জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা বর্ডার রোডে না যাওয়ার পরামর্শ দিল। ঐ পথের অবস্থা আরও বেশী খারাপ, তাছাড়া কিছু কিছু জায়গাতে চুরি ডাকাতির ভয় আছে। ভাতকুচি হয়ে বারমারী বাজার দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। অতএব সেই পথেই আরও অনেকটুকু এগিয়ে প্রায় ৭ টার দিকে ভাতকুচি বাজারে এসে পৌঁছলাম। চা খেয়ে কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিয়ে আবার রওনা হলাম।
আধঘণ্টা হেঁটে একটা ছোট বাজারে এসে পৌঁছলাম, বাজারের নামটা মনে নাই। ঠিক পথে যাচ্ছি কিনা তা নিশ্চিত হতে একটা দোকানে জিজ্ঞেস করলাম। বারমারী বাজারে যাব শুনে দোকানে বসে থাকা দুইজন জানালো তাঁরাও বারমারী বাজার যাবে। দেরী না করে তাদের সঙ্গে নিয়ে এগুতে আরম্ভ করলাম। সাথে আসা লোকদের সঙ্গে আলাপে জেনেছি যে বারমারী বাজারের যেতে নদী পার হতে হবে। নদীর নাম চেলাখালি। নদীতে কোন ব্রিজ নেই, এই সময় পানিও খুব বেশী না, কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি, আবার কোথাও কোথাও বুক পানি সর্ব উচ্চ। পায়ে হেঁটেই পার হতে হবে, তবে হাঁটু পানি পেরিয়ে।
১৫/২০ মিনিট হাঁটার পর আমরা একটা ঝোপের ভিতরে প্রবেশ করলাম। কিছুক্ষণ হেঁটে বুজতে পারলাম যে আমরা কাশবনের ভিতর দিয়ে হাঁটছি। ঝোপের ভিতর থেকে বেরুতেই থমকে দাঁড়ালাম, প্রচুর জোনাকি ঝোপের পাশেই নদীর কাছ দিয়ে অবস্থান করছিল। নদীর পানিতে জোনাকির রিফ্লেক্সনের দৃশ্যটাই অন্যরকম একটা ঘোরের সৃষ্টি করল। কয়েক মুহূর্তের জন্য ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম। সাথে আসা একজন এগিয়ে নদীর পানিতে পা রাখতেই মুহূর্তের মধ্যে সব মিলিয়ে গিয়ে ঘোর ভাঙ্গিয়ে দিল। নদীতে নেমে টর্চের আলোতে বুজতে পারলাম যে পানি খুব পরিস্কার ও স্বচ্ছ, নদীর তলা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আফসোস হচ্ছিলো দিনের আলোতে নদীটাকে না দেখতে পেরে। সামনে থাকা লোককে অনুসরণ করে নদীর ঠিক মাঝে যেতেই দেখলাম পানি হাঁটুর অনেকটা উপরে। প্যান্টের পকেটে থাকা জিনিষপত্র সব হাতে নিয়ে এগুতে আরম্ভ করলাম। কোমর পানি না হলেও হাঁটুর অনেকটা উপরের পানি ডিঙ্গিয়ে নদী পার হলাম। সাথের একজন জানালো অন্য সময় এই দিকে হাঁটু পানি থাকে, আজকে সম্ভবত বৃষ্টির কারনে পানি কিছুটা বেশী। সাথের দুইজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে কিছুক্ষণ হেঁটে আমরা বারমারী বাজারে এসে পৌঁছলাম। বাজারের টিউব ওয়েলে কাঁদা পরিস্কার করে ফ্রেশ হয়ে চা খেয়ে কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে আবার রওনা হলাম।
প্রায় আধঘণ্টা হেঁটে বারমারী বিজিবি ক্যাম্প পার হয়ে আরও কিছুক্ষণ হেঁটে বর্ডার রোডে উঠতে প্রায় সাড়ে ৮ টা বেজে গেল। জিপিএস অনুসারে নাকুগাও পৌঁছাতে বাকি পথটুকু এই একই পথে হেঁটে যেতে হবে, তাও প্রায় ৬/৭ কিলো মিটার পথ। চাঁদ ও মেঘের মধ্যে লুকোচুরির খেলায় চাঁদের আলো খুব একটা দেখা যাচ্ছে না, অন্ধকারে টর্চের আলোকে ভরসা করে হেঁটে চললাম। প্রায় ঘণ্টাখানেক হেঁটে ডালুকোনা পার হয়ে আমরা একটা ছোট বাজারে এসে পৌঁছলাম, বাজারটির নাম মনে নেই। বাজারে ডুকতেই মাঝ বয়সী একজন আমাদের সমন্ধে জানতে চাইল। তাকে পরিচয় দিয়ে সেই রাতটা নাকুগাও এর হাতিপাগারে থাকার কথা জানাতেই সে কার কাছে থাকব বা কোথায় থাকব নানা প্রশ্ন করতে আরম্ভ করল। জানালাম যে এখানে কেউ পরিচিত নেই, কোন খোলা স্থানে বা মাঠে তাবুতে থাকব। কিন্তু তাতেও অসুবিধা আছে, অপরিচিত কাউকে এইভাবে এই এলাকায় থাকতে দেয়া যাবে না। আবার হাতিপাগারের পরেও যাওয়া নিরাপদ না, সেই দিকে রাতে চুরি ডাকাতির ভয় আছে। নাকুগাওয়ে একটা ল্যান্ড পোর্ট আছে, হাতিপাগার এলাকা ল্যান্ড পোর্টের খুব কাছে বলে এইদিকে বিধি নিশেদ একটু বেশী বলে মনে হল। আলাপে তাঁর পরিচয় জানতে চাইলাম, কিন্তু সে এরিয়ে গেল। পরে পাশের একজন জানাল যে সে বিজিবির ডিবি ব্রাঞ্চের লোক। হাতিপাগার মুক্তিযোদ্ধা স্কুলে হয়ত আমাদের থাকার ব্যাবস্থা হতে পারে কিন্তু তার জন্য আমাদের আরও বিস্তারিত পরিচয় বা কোন স্থানীয় রেফারেন্স দরকার। বোজা গেল যে আমাদের পরিচয় তাঁর কাছে সন্তোষজনক মনে হচ্ছে না। এরই মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা স্কুলের দপ্তরি মোটর সাইকেলে করে আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সব জানাতেই দপ্তরি সাফ না করে দিল। আরও বলল যে অপরিচিত কাউকে স্কুলে জায়গা দেয়া যাবে না হেডমাস্টারেরও নিশেদ আছে, জানিয়ে সে বিদায় নিল। ১০/১৫ মিনিট আলাপ করেও কোন সুরাহা হোল না, তাই কথা না বাড়িয়ে তাঁদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সামনের পথে পা বাড়ালাম। ২০/২৫ মিনিট হেঁটে আমরা নাকুগাও এর হাতিপাগার এলাকার চর আলী বাজারে এসে পৌঁছলাম।
চলবে...