Global Positioning System বা GPS একটা প্রযুক্তি যা কিনা তৈরি বা সম্ভাব হয়েছে পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণরত এক গুচ্ছ উপগ্রহের (satellites) continuous precise signals পাঠানো এবং GPS receivers সেই signals কে রিসিভ ও প্রসেস করে ইউসারকে তার নিখুঁত অবস্থান, গতিবেগ এবং সময় সম্পর্কে অবহিত করার মাধ্যামে।
তিন বা ততোধিক উপগ্রহের (মোট ২৪টি উপগ্রহের মধ্যে) ডাটাকে GPS receiver রিসিভ করে triangulation এর মাধ্যমে তার সঠিক এবং নিখুঁত অবস্থান নির্ণয় করে। এই উপগ্রহগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২৬৬০ মাইল উপর দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ৭০০০ মাইল গতিতে প্রতি ১২ ঘণ্টায় ১বার করে মোট ২৪ ঘণ্টায় ২ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এবং ক্রমাগত সিগন্যাল পাঠাইতেছে। এই সিগন্যালের মধ্যে ৩ রকম তথ্য বা ডাটা থাকে।
pseudorandom code, ephemeris data and almanac data
pseudorandom code এইটি একটি সাধারন ID code যা কিনা কোণ উপগ্রহটি ডাটা পাঠাইতেছে তা নির্দেশ করে।
ephemeris data যা কিনা প্রতিটি উপগ্রহ দ্বারা ক্রমাগত তার অবস্থা, অবস্থান, দিন ও সময়ের ডাটা পাঠাইতেছে। এই ডাটার উপর নির্ভর করে GPS receivers তার নিজস্ব অবস্থান নির্ণয় করে। এই ডাটা GPS receivers এর নিখুঁত অবস্থান, গতিবেগ এবং সময় নির্ণয়ে খুব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালান করে।
almanac data এই ডাটাতে সকল উপগ্রহগুলোর বিভিন্ন কক্ষপথে তাদের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য পাঠায়, যাহার কারনে GPS receivers অতি সহজে ও দ্রুত অন্যান্য উপগ্রাহের সিগন্যাল ধরতে সক্ষম হয়।
United States এর Department of Defense (DOD) ১৯৭০ দশকে এই GPS এর সুচনা করে মুলত মিলিটারিতে ব্যাবহারের জন্যে এবং ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝিতে এই টেকনোলজিকে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যাহার কারনে বর্তমান বিশ্বে ইহা একটি বহুল প্রচলিত Locational এবং Navigational technology হিসাবে পরিচিত। missile launching, air traffic, aviation, ship, vehicle, GIS এর কাজে এর প্রচুর ব্যাবহার দেখা যায়। বর্তমানে আধুনিক cell phone, PDA এমনকি হাত ঘরিতে ও এই GPS technology ব্যাবহার দেখা যায়।
কমপিউটিং ক্ষমতা এবং মেমোরিতে বিভিন্ন তথ্য যেমন city maps, road maps, topographic information ইত্যাদি তথ্যগুলাকে ধারন করতে পারার কারনে, GPS receiver এর সঠিক এবং নিখুঁত অবস্থান, গতিবেগ এবং সময়কে খুব সহজবোধ্য ভাবে ব্যাবহারকারির নিকট উপস্তাপন করতে পারে।
GPS পৃথিবীর যেকোন স্থানে, রাত দিন যেকোন সময় ও সারা বছর, যেকোনো আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে। সাধারনত GPS এর কার্যকারিতা ১৫ মিটারের মধ্যে হয় তবে আধুনিক GPS গুলোতে WAAS, DGPS technology এর কারনে এই কার্যকারিতা ৩ মিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। অর্থাৎ একটি GPS যে স্থানে তার অবস্থান দেখায় কার্যত সেটা তার ৩ মিটার বা ১০ ফিট পরিধির মধ্যে কার্যকর।
মুলত বলা যায় যে আমাদের হাতে ব্যাবহৃত GPS set টি একটি satellites receiver যা কিনা উপগ্রহের সিগনালকে রেসিভ ও প্রসেস করে তার মধ্যে থাকা ডিজিটাল ম্যাপ, ইলেক্ট্রনিক্স কম্পাস ও আলটিমিটারের মধ্যমে ইউজারের কাছে অতি সহজবোধ্য ভাবে উপস্থাপন করে।
ভ্রমন প্রেমিদের ঘুরাঘুরির স্বার্থে আমরা মূল আলোচনা GPS ব্যাবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখি। ভ্রমন স্বার্থে GPS দিয়ে কি কি করা যেতে পারে, সেজন্য GPS এর basic function গুলো নিয়ে একটু আলচনা করা হলোঃ
Way point কোন একটি জায়গা বা স্থান,পার্ক, পিকনিক স্পট, এয়েরপোর্ট, বাস টারমিনাল, অফিস, বাসা, মার্কেট, স্কুল, কলেজ, যে কোনকিছুকে GPS এ point বা location হিসাবে চিহ্নিত বা save করাকে বুজানো হয়। বিভিন্ন GPS এ ইহাকে বিভিন্ন নামে বলা হয় যেমন- point, way point, mark point, বা location. GPS ভেদে এই Way point ধারন ক্ষমতা বিভিন্ন হতে পারে। পুরানো GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা ছিল ৫০০ থেকে ১০০০, কিন্তু নুতন মডেলের GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা ২০০০ ও হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে আপনি আপনার বর্তমান আবস্থান থেকে যেকোনো একটি Way point select করে GPS এর “GoTo” function টি activate করলে GPS তাঁর Compass এর সাহায্যে আপনাকে navigate করে সেই গন্তবে নিয়ে যাবে।
ধরা যাক আমরা map থেকে কতগুলো স্থানের location point বা coordinates বের করব। বর্তমানে google map বা google earth এর সাহায্যে অতি সহজে এই coordinates বের করা যায়। বোজার সুবিধারতে আমরা কিছু স্থানের coordinates বের করে সেগুলকে GPS এ মার্ক করলাম পরে ব্যাবহারের জন্য। যেমন-
ফার্মগেট - N23°45’28.5” E90°23’24.6”
বাংলামটর - N23°44’45.2” E90°23’40.9”
সাহাবাগ - N23°44’17.3” E90°23’45.3”
মৎস্য ভবন মোর - N23°44’01.3” E90°24’13.4”
হাইকোর্ট মোর - N23°43’47.8” E90°24’18.5”
প্রেস ক্লাব - N23°43’48.0” E90°24’25.8”
তোপখানার মোর - N23°43’48.5” E90°24’36.6”
জিপিওর মোর - N23°43’39.5” E90°24’37.9”
গুলিস্তান - N23°43’29.7” E90°24’43.2”
মতিঝিল - N23°43’36.0” E90°25’17.9”
Route হচ্ছে কতগুলো way point এর সংযুক্ত একটি রেখা বা লাইন। যেমন উপরের সব way point গুলোকে একের পর এক যোগ করলে সেটা হবে একটা Route. যদি বলা হয় যে ফার্মগেট থেকে মতিঝিল যেতে, তাহলে যা দারায় প্রথমে ফার্মগেট থেকে বাংলামটর, তারপর বাংলামটর থেকে সাহাবাঘ, সাহাবাঘ থেকে মৎস্য ভবন মোর, মৎস্য ভবন মোর থেকে হাইকোর্ট, হাইকোর্ট থেকে প্রেস ক্লাব, প্রেস ক্লাব থেকে তোপখানার মোর, তোপখানার মোর থেকে জিপিওর মোর, জিপিওর মোর থেকে গুলিস্তান, এবং গুলিস্তান থেকে মতিঝিল। এই পুরা প্রণালিটাকে একটা Route বলা যায়। GPS receiver এ এই সম্পূর্ণ প্রণালিটি সেট করে দিলে যে কেউ তা ধরে ফার্মগেট থেকে মতিঝিল চলে যেতে পাড়বে। GPS ভেদে এই Route ধারন ক্ষমতা বিভিন্ন হতে পারে। পুরানো GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা ছিল ১০ থেকে ২০, কিন্তু নুতন মডেলের GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা প্রায় ২০০ হয়ে থাকে।
Track log যখন আমরা GPS নিয়ে কোথাও যেতে থাকি তখন GPS টি automatically সেই ভ্রমণটি “Active Track log” হিসাবে save করতে থাকে। আমরা ডানে, বায়ে যে দিকে যাই না কেন GPS আমাদের প্রতিটি movement ই GPS এ save করতে থাকে। এখন যদি আমরা একই রাস্তায় পূর্বের স্থানে ফেরত আসতে চাই তাহলে GPS এর “TracBack” function টি activate করলে GPS আমাদের navigate করে পূর্বের স্থানে ফেরত নিয়ে আসবে। এই ক্ষেত্রে GPS সম্পুরন Track এর একটি reverse route তৈরি করে আমাদের গাইড করে পূর্বের স্থানে ফেরত নিয়ে আসে। ভবিষ্যতে ব্যাবহারের জন্য আমরা এই Active Track log কে save করে রাখতে পারি। GPS ভেদে এই Track log ধারন ক্ষমতা বিভিন্ন হতে পারে। পুরানো GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা ছিল ১০ থেকে ২০, কিন্তু নুতন মডেলের GPS গুলাতে এই ধারন ক্ষমতা প্রায় ২০০ হয়ে থাকে।
এখানে উল্লেখ্য যে GPS এর জন্য Map ও Compass ব্যাবহারের ধারনা থাকলে ভাল হয়। উপরের আলোচনাতে সাধারনভাবে GPS সম্মন্দে একটি ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হলো। GPS সম্মন্দে যাহারা উৎসাহী তাদের Feedback এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত লিখার আশা রইল। এখানে ব্যাবহৃত ছবিগুলা Internet থেকে সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২৯