গতকাল প্রতিদিনের মত ফেসবুক আর ব্লগে সার্ফিং করছিলাম।সবগুলো জায়গায় বেশির ভাগ আলোচনাই দেখলাম রাজনৈতিক। তেমনি ঘুরতে ঘুরতে ফেসবুকের একটা পোস্ট চোখে পড়ল যেখানে একজন কমেন্ট করেছেন "সবাই সব কিছু নিয়ে ব্যস্ত। বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে, হেফাজতে ইসলাম নাস্তিকদের নিয়ে, নাস্তিকরা আস্তিকদের নিয়ে। মাঝে সরকার রামপালের বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের চুক্তি আজ চূড়ান্ত করছে তা নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই।" কমেন্ট টা পড়ার পর অনেকটা অনিচ্ছাকৃত ভাবেই গুগল করলাম "Rampal Power Plant"। দেখলাম Recent News এ Financial Express এর একটা প্রতিবেদন (Last Column)। পড়তে শুরু করলাম। আস্তে আস্তে নিজের ভেতর একটা তীব্র আতঙ্ক তৈরি হল। প্রথমে শুরু করি রামপাল এর অবস্থান।
রামপাল খুলনায় অবস্থিত। সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলো দূরে। অনেকে বলেন আরও কাছে। সরকার ২০১২ সালে ভারতের এনটিসিপি'র সাথে সরকার ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান জ্বালানী হবে কয়লা। তখন থেকেই রামপালের বাসিন্দারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু তথাকথিত Main Stream সংবাদ মাধ্যমে খবরটি গুরুত্তের সাথে প্রকাশ না করায় আমার মত অনেক অধম প্রায় একবছর পর এটা সম্পর্কে জানল। জাতীয় তেল,গ্যাস,বন্দর রক্ষা কমিটির হিসাব অনুযায়ী ৪ ৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশ উৎপাদিত হবে। এটা যে সুন্দরবন তথা বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয় কতটা তরান্বিত করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আজকে The Daily Star এর একটা প্রতিবেদন দেখলাম। সেখানে একটা মতামত লেখা আছে " Questions have been raised in the media about whether the issues of supply of coal and the actual cost of producing per kilowatt electricity were, in fact, thoroughly studied beforehand. As things stand now, it would appear the decision to go for the project was based on political considerations and not on economic realities. "। এই মতামতটার ব্যাপারে যদি বলতে হয় তাহলে আমাদের দৃষ্টি ফেরাতে হবে ২০১০ সালের The Hindu পত্রিকার একটা প্রতিবেদনের দিকে(প্রতিবেদন - দ্যা হিন্দু) ।
যেখানে ভারত নিজেদের দেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা ভেবে কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্টের অনুমোদন দেয়নি,সেখানে আমরা নিজদের এত বড় ক্ষতি কেন করতে যাচ্ছি?
সুন্দরবনের এত কাছের একটা জায়গায় এইরকম পাওয়ার প্ল্যান্ট করার মত বুদ্ধি সরকারের মাথায় আস্ল কিভাবে বুঝিনা। যেখানে বাংলাদেশ বলতেই বিশ্বের মানুষ চেনে সুন্দরবন আর কক্সবাজার সেখানে এরকম অমূল্য সম্পদ কে মৃত্যুর মুখে কিভাবে ঠেলে দেয় তারা? ১৩২০ মেগাওয়াট অনেক শক্তি। কিন্তু আমাদের গর্ব রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সুন্দরবন, চিত্রা হরিনের মত অমূল্য সম্পদের কাছে এটি ঠুনকো।
সবাই কে একটা কথাই বলতে চাই দেশের স্বার্থে অন্তত নিজেদের স্বার্থে এই ব্যাপারটা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হন।
Be a Bangladeshi,Save Sundarban. Save our pride. So that we can call our cricket team The Tigers, So that we can stand up keeping our head high, So that we can be proud thinking of owning a tremendous natural beauty. Save the largest mangrove forest of the world.
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২৪