সাহস নিয়ে করা পোস্ট
(লেখাটি কোন অশ্লীলতা বা কোন যৌন সুড়সুড়ি মূলক লেখা নয়। ¯্রফে একটা ভ্রমন কাহিনী। এই লেখার দায়ে আমাকে জেনারেল বা ওয়াচে রাখা হলে বুঝব সামু লেখকের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয় না)
ইন্টারনেট ঘেটে ঘুটে দেশের দুটি সর্ববৃহত পতিতালয়ের কথা পড়েছিলাম অনেক আগেই। এদের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে আছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট পতিতালয়টি ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে টাঙ্গাইল কান্দাপাড়া যৌনপ্লী।আমার অনেক দিনের সখ এখানটাতে ঘুরে আসার। কিন্তু সময় হচ্ছিল না। রমজানের আগে প্রায় ফাইনাল করেছিলাম টাঙ্গাইলের কান্দাপাড়াতে যাব। কারণ চেনা জানা পথ ঘাট। খুব বেশী সমস্যা হবার কথা নয়। কিন্তু বিধি বাম। যাওয়া হয়নি। ঈদের পরে যাবার কথা চিন্তা করছিলাম। মাঝপথে বাধা হয়ে দাঁড়াল আরেকটি সমস্যা। অনলাইন পত্রিকায় বড় বড় লাল অক্ষরের লিড নিউজ “প্রভাবশালীদের প্রভাবে নীরবে উচ্ছেদ টাঙ্গাইলের যৌনপল্লী” দেখে থমকে গেলাম। সেখানে আর যাওয়া হলো না। যদিও ঢাকার অলিতে গলিতে অনেক পতিতা ঘুরে বেড়ায় কিন্তু আমার টার্গেট ছিল প তি তা ল য়। ইটস ফাইনাল। সেকেন্ড টাইম দৌলতদিয়াতে যাবার কথাই মনে করি। তবু নেই চেনা জানা পথঘাট। নেই লোক জন্য। কিভাবে কি? অবশেষে মনে পড়ল মহা জ্ঞানী স্যার গুগলের কথা। স্যারকে সমস্যার কথা বললাম স্যার ভার্চুয়াল সব রকমের তথ্য দিয়ে দিলেন। কত টাকা সঙ্গে নিতে হবে। কি গাড়ীতে যেতে হবে? কত কিলোমিটার যেতে হবে। কাদের সাথে কিরকম আচরন করতে হবে। বিস্তারিত এই লিংক হতে জেনে নিতে পারেন। এর পর শুরু করলাম গুগল আর্থ। সার্চ করলাম গাবতলী টু দৌলতদিয়া। দেখাইয়া দিল পথ।
গত ০৭/০৮/২০১৪ইং। রোজ বৃহস্পতিবার। রাত ১১.০০টা। প্ল্যান ফাইনাল। সকল রকমের তথ্য ঘেটে ঘুটে দেখে শেষমেষ ঠিক করলাম কি কি সংগে নিব। মোবাইল নেয়ার ব্যাপারে স্যার আগেই সম্পূর্ণ রুপে না বলে দিয়েছিলেন। পরদিন সকাল ১০.০০টায় বাসা থেকে বের হলাম মোবাইল ফোন ছাড়াই। চলে গেলাম আমার এক ফ্রেন্ডস এর কাছে। গিয়ে দেখি সে নাই। তার বড়ভাইয়ের কাছ থেকে ফোন নিয়ে বল্লাম বিকেলে দিকে যদি আমি কোন বিপদে পড়ি তাকে আপনি আমাকে কিছু টাকা দেবেন বিকাশে। আর যদি না বিপদে পড়ি তাহলে লাগবে না। এরপর রওনা হলাম টার্গেটের দিকে ধামরাই-গুলিস্তানের গাড়িতে করে সোজা গাবতলী গিয়ে নামলাম। একটু ভালো গাড়ীর খোজঁ করতে লাগলাম যাতে একটু আরামে যাওয়া যায়। যথারীতি পেয়েও গেলাম। গাড়ী নাম মনে করতে পারছি না তবে দিগন্ত বা এইরকম কিছু একটা হবে। হেলপার আমাকে ধরেই বলল ঘাটে নাকি মামা। আমি বললাম হ্যাঁ। যেহেতু পাটুরিয়া লেখা আছে সেহেতু আর জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন দেখলাম না। ভাড়ার কথাও হেলপারই বলল। আমি মনে করেছিলাম ভাড়া ২০০/- টাকা বা এরকম হবে। কিন্তু আমার সব ধারনা ভেঙ্গে দিয়ে হেলপার বলল ভাড়া ৮০/- টাকা। সাথে সাথে রাজি। আর ঠেকায় কে। টিকিট নিয়ে সুন্দর একটা সিট দেখে বসে পড়লাম। গড়িতে দেখি টিভিও আছে। টিভিতে কলকাতার মুভি “বস” নায়ক জিৎ এর ছবি চলছিল। দেখা ছবি তবুও আজ দেখার ফিলিংসটা অন্যরকম হল। বাসায় বসে কমপক্ষে ৩-৪ বার এই মুভি দেখেছি। তবুও পাশে বসা এক ভদ্রলোকের সাথে বাংলাদেশে ভারতীয় মুভি, হিন্দি মুভি, ভারতীয় নাটক, সিরয়াল শে না হওয়ার কথা, পাখি জামা ইত্যাদি নিয়ে অনেক ভাবগম্ভীর কথা বললাম। ভদ্রলোক আমার জ্ঞান!!! গরীমা দেখে মুগ্ধ! আমার দেখাদেখি উনি সহ আরো কয়েক লোক বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর সমালোচনায় মেতে উঠল। ইতি মধ্যে বাস ছেড়েছে। জীবনের প্রথম একটি নতুন রাস্তায় আবিস্কার করলাম নিজেকে। যেটা পাটুরিয়া টু ঢাকা সড়ক। বেলা ১.০০ টায় নামলাম পাটুরিয়া ঘাটে। যে রাস্তায় যাওয়ার কথা সেখানে না গিয়ে পশ্চিম দিকের একটি রাস্তায় আমাকে নামিয়ে দিল বাস। দেখি লোকজন নাই। ঘাটে শুধু লঞ্চগুলোতে বাসগুলোই উঠছে। সিঙ্গেল মানুষ। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি ঘাট দেখিয়ে দিলেন যেখানে মাত্র ত্রিশ টাকা নিল পতিতালয়ে যাবার ভাড়া।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৫২