somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শান্তশিষ্ট লেজ বিশিষ্ট

১১ ই মে, ২০১১ রাত ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মাথায় অগনিত চিন্তা ঘুরপাক খায়, তারমধ্যে একটা নিয়ে আজ কথা বলতে মন চাইছে। চিন্তা টা হল, আচ্ছা আসলেই কি আমাদের চান্দি ঠাটানো আদর্শের অনুসারী হওয়া দরকার নাকি ঝাজা কাজের লোক হওয়া দরকার? ভয় নেই উত্তর দিতে হবে না।
কত যে চেতনা আমাদের! একুশের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ঊনসত্তুরের গণঅভুৎত্থানের চেতনা, নূর হোসেনের গণতন্ত্রের চেতনা, আরও কত কি! এত চেতনা থাকা সত্বেও আমাদের একটাও কর্ম চেতনা, দেশ গড়ার শপথের চেতনা, ন্যায় আর সত্যের পথে চলার চেতনা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংশ না করার চেতনা ইত্যাদি অতীব জরুরী চেতনার একটাও নেই। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের ঝাজা আলোয় আমি দেখলাম দেশের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবি আর প্রগতিবাদিরা যেসব ঠাটানো চেতনার কথা বলেন বেশিরভাগ জনগণই তার আগা মাথা কোন অংশ নিয়েই ভাবে না। তারা ভাবে কিভাবে দুমুঠো ভাতের আর মাথা গোজবার ঠাই কিভেয়াবে অর্জন করা যায়। আজ আমরা শিক্ষিত মানুষরা খুব গর্ব করি আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তীব্র বিশ্বাসী, আমি অসাম্প্রদায়িক, আমি গণতন্ত্রের একনিষ্ট অনুসারী। আহা, কি কথা। অন্তরটা জুড়িয়ে যায়! ক'টা দেশের মানুষ এমন চেতনার ভাগ্য নিয়ে জন্মায়? নার্সারি থেকে শুরু, গুরু, ভার্সিটিতে এসে উড়ুঊড়ু। কি শিখলাম? চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যের ব্যাবসা শুরু হইছে তা পীর বাবা, ন্যাংটা বাবা আর টাইগার বাবাদের ব্যাবসার চেয়ে কম ভয়ঙ্কর নয়। মহান এই চেতনা নিয়ে ইতিমধ্যে বিশাল ব্যাবসা হয়ে গেছে আরও হবে। এটিএন গ্রুপের কার্যক্রম ইহার ঝাজা প্রমাণ। এই মিডিয়া গ্রুপটির কত্তা জনাব ঠাকুর মাহফুজুর মুখে মুক্তিযুদ্ধ-একুশ-জাতির পিতা আর মহাজটের প্রশংসার তুব্রি ছুটিয়ে একটা নিউজ চ্যানেল বাগিয়ে নিয়েছেন সাথে আরও কত কি। তাহার পত্নি ইভা রহমান আবার একজন গায়িকা, ভাবে সুশীল, কিভাবে? আমি তার একটা নোংরা পর্ন ভিডু দেখেছি!!
বামপন্থার বরপুত্ররা আজ ক্ষমতায়, তাদের আজ রমরমা অবস্থা। অতীতে জোট সরকার কত দুর্নীতি করলো। তার বিচারও হইল। তারা আর্থিক দুর্নীতিতে শ্রেষ্টত্বের দাবীদার, চুপেচুপে অনেক দূর পানি গড়িয়ে দিয়েছিল। কেউ কিচ্ছুটি টের পায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকারের কত্তা রা আরও তিন কাঠি বাড়া। জাতির পিতা শুধু তাদের আর সেই পিতার সন্তান হিসেবে দেশটাকে নিজেদের জমিদারীর মত ব্যাবহার করছে তারা নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়াবার কাজে। ভাবখানা এমন কি বলবি তুই, এখন আমরা ক্ষমতায় তাই সব কিছুতেই আমরা থাকবো। যেখানে আগে পাতি নেতারা মিছিল মিটিংএর পারিশ্রমিকেই সন্তুষ্ট থাকতো তাদের চোখ খুলে দিয়েছে বিএনপি। টাকা কিভাবে কামাইতে হয় তা এখন তারা জানে। কিন্তু কথা হল যে সিস্টেমটা এখন আরও উন্নত। কোন একটা চেতনার বুলি ঝার ব্যাস, কেল্লাফতে। আর সাথে তো চাপাতি, দেশি-বিদেশি ঠুসঠাস আছেই!!
জনসংখ্যার চাপে ভেঙ্গে পরবার উপক্রম দেশের, প্রায় প্রতিটি সমস্যার সাথে এই অতিরিক্ত জনচাপ সরাসরি জড়িত। এখন কি দরকার? দরকার বিদ্যমান জনসংখ্যার কর্মপোযুক্ত মানুষগুলোকে ভিবিন কাজে দক্ষ করে তোলা। দেশে আজ নানবিধ শিল্পের প্রসার ঘটাবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্কলার আছেন যারা এই মুহূর্তে দেশের ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুত। গার্মেন্ট শিল্প থেকে শুরু করে জাহজ নির্মাণ পর্যন্ত অসংখ্য সেক্টর। যার মধ্যে প্রচুর শ্রমঘন শিল্প আছে। শিক্ষানীতি পরিবর্তন করে মাধ্যমিক পর্যন্ত যেকোন একটা ক্ষেত্রে কারিগরি জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক করার কোন বিকল্প নেই। তা না করে শিক্ষাবিদরা আছেন কোন শ্রেণীর বইয়ে অসাম্প্রদায়িকতার কথা নাই, কোথায় ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া হলো, কি হবে শিক্ষার মূলনীতি, ইত্যাদি ইত্যাদি ফালতু প্যাচাল। আমার দাবি বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে কর্মনিষ্ঠা কে মূলনীতি করা হোক, জাপানের মত। আরে ভাই হাতদুটো যখন কর্মনিষ্ঠায় পেশিবহুল হয়ে উঠবে তখন আদর্শ তো আপনা আপনিই প্রতিষ্ঠিত। পেটে খিদে নিয়ে আপনার আদর্শ আর চেতনার নিরস গাজন তো ৭০% জনগণের নেই!!
এই দেশের কি দরকার? একটা কর্ম নিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠি নাকি আদর্শের জুলফিওয়ালা?? বার্ষিক জিডিপি কি উৎপাদন দিয়ে হিসাব হয় নাকি দেশে কয়টা লোক ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক হলো তা দিয়ে হয়?
আজ যদি আমি জিঞ্জিরা আর ধোলাই খালের দক্ষ কারিগরদের ঐ ক্ষুদ্র দুনিয়া থেকে বের করে এনে বলি এই নাও পুজি, দিলাম জায়গা, তোমার অনন্য বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে প্রতিটি পণ্য বানাও যা আমাদের দেশের বাইরে থেকে উচ্চমূলের ডলার দিয়ে আমদানি করতে হয়। সে পারবে, তার সবটুকু ক্ষমতা সে কাজে লাগাবে। জাপান-চীন-মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর-তাইওয়ানও একসময় এই ভাবেই ভাবতো। তাদের কাছেও প্রথমে এই জিঞ্জিরা-ধোলাইখালের মেকানিকদের মত কিছু মানুষ ছাড়া আর কিছু ছিল না।
এখন সেইসব মেকানিককে যদি আপনি বলেন রাখো তোমার কাজ। আগে এদিকে এসে জেনে নাও কি হবে তোমার নীতি, কোন আদর্শের বড়াই তুমি করবে, কি চেতনা তোমার বুকে গণতন্ত্রের হুংকার তুলবে। সে কি মাথা ঠিক রাখতে পারবে? বুঝবে পেটের খিদে আর বউ-বাচ্চার প্রয়োজন ছাড়া আপনার বুদ্ধিবৃত্তিক বাণী? না।
তাহলে কেনো আদর্শ আর চেতনা নিয়ে এত ফালাফালি করছেন? আপনাদের ভাব দেখে মনে হচ্ছে বাঙালি ভাত খায় না, যুদ্ধাপরাধের চেতনা খায়, গণতন্ত্রের উপলব্দি গায়ে মাখে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ গায়ে জড়িয়ে শীতের রাতে ঘুমায়!!! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অতিশীঘ্র করা প্রয়োজন, যার রাস্তা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারই বন্ধ করে গেছে। তা করুন, ঝিমঝামে। এত লাফাচ্ছেন কেনো? অনেকের ভাবে কথায় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে তারা যেনো ব্যাক্তিগত রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছেন। এটা সমগ্র জাতির দাবী। আপনাদের ক্ষোভের তৃপ্তি নয়। সত্যিই যদি দেশ আপনাদের কাছে আগে হতো তাহলে আগে জাতির উন্নয়নের কথা ভাবতেন। কার্যকর পদক্ষেপ থাকতো দেশের প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজে। খুন রাহাজানি, ছিনতাই, সামাজিক নৈতিক অবক্ষয় কি আগের চে কমেছে? না, বেড়েছে আশংকাজনক হারে। তাহলে কি নৈতিকতা আপনারা ছড়াচ্ছেন?
চাপাতি দিয়ে রাজনৈতিক সহকর্মিকে কুপিয়ে খুন করা? পাতি নেতাদের ক্ষমতার তাপ গায়ে মেখে গার্লস স্কুলের মেয়েদের উত্তক্ত করন? ঐ কামডা আমার লাগবই, নাইলে টেন্ডার বাক্স খুইল্লা লয়া যামু টাইপ মানসিকতা? ইডেন কলেজের মত মহিলা কলেজের মেয়েদের উপরের লেভেলের নেতাদের গোপন ফ্লাটে মৌজ-মাস্তি করার জন্য পাঠানোর আদর্শ?

একদিকে মিডিয়াতে তুবরি ছোটাচ্ছেন চেতনার আদর্শ আর মানবতার, অন্যদিকে দেশ-সমাজ একমাত্র সম্বল নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে হচ্ছে দেউলিয়া। পশ্চিমারা (দাতাগোষ্টী) তো আমাদের শেষ বর্ম নৈতিক মূল্যবোধ খসিয়ে নিচ্ছে আপনাদের মত ক্ষমতালোভী আর ভন্ড বুদ্ধিবাজদের হাতধরে।

যে যেই ধর্ম, আদর্শ, নৈতিকতা, মূল্যবোধ আর চেতনা নিয়ে আছে থাকনা সে সেখানে। আপনার সবাইকে এই বলে ধমক দেন যে তোমরা সক্ষম হলে যার যে কাজে দক্ষতা সে তা পুরোধমে করে যাও। আপনি সরকার, আপনার কাজ দেশের প্রতিটি সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধির পথে জাতিকে এগিয়ে নেয়া। আদর্শ শিক্ষা দেবে তো সমৃদ্ধিই।

কি লিখলাম নিজেই বুঝতে পারছি না। অতৃপ্ত একটা লেখা। যাহোক একদিন আমি অবশ্যই আমার মনের কথা সাবলীলভাবে অর্থবহ করে লিখতে পারবো আশা করি।

যাহোক, আমার কথা হলো "অকর্মণ্য মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডাখানা"।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×