ইদানিং জংগী গোষ্টি ইসলাম নিয়ে একটা মিথ্যা প্রচার করতে নেমেছে মাঠে। আসলে তারা কারো ব্যাপারে মিথ্যা প্রচার করছে যাতে পরবর্তিতে তাকে কোপানোটা পাবলিকের চোখে নরমাল হয়।
তারা মাঝে মাঝেই প্রচার করছে অমুক প্রতিষ্ঠানে অমুক শিক্ষক বোরখা পরে ক্লাস করতে দিচ্ছে না। তারা কিন্তু মুখ ঢাকা বোরখার কথাটা ইচ্ছা করে এখানে বলছে না, কারন ইসলামে মুখ ঢেকে একে বারে চেনার অনউপযুক্ত বা অপরিচিত হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয় নি।
আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন কোন শিক্ষক ছাত্রীদেরকে মুখ না ঢেকে ক্লাসে আসতে বলে থাকেন। আমি নিজে ছাত্র-ছাত্রী পড়িয়ে বুঝেছি মুখ ঢাকা স্টুডেন্টদের পড়ানোর সময় কতটা সমস্যা হয়। কাওকে যখন ক্লাসে বলা হয় 'তুমি কী এই ব্যাপারটা ঠিক মত বুঝলা?' এমনিতে অধিকাংশ ছাত্রীরা ছাত্রদের সামনে জড়তার কারনে হ্যাঁ বা না কিছুই বলতে চায় না। সেই ক্ষেত্রে স্টুডেন্টের ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন দেখে বোঝার চেষ্টা করতে হয় বিষয়টা তার সামনে আবার এক্সপ্লেন করার দরকার আছে কি না। যেটা মুখ ঢাকা থাকলে কিছুতেই সম্ভব হয় না।
গতকাল দেখলাম কয়েকজন ব্লগার ঢাকা ইউনিভার্সিটির একজন সিনিয়র শিক্ষেকের নামে এই ব্যাপারটা নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচারে নেমেছে। তারা বলছে খবরে এসেছে আজিজুর রহমান নামে এই শিক্ষক শুধু বোরখা পরার কারনে ছাত্রীদেরকে অপমান করে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে।
আমি সেই ডিপার্টমন্টের ফ্যাকাল্টি লিস্ট থেকে দেখলাম ঐ ডিপার্টমেন্টে অলরেডি দুইজন জুনিয়র ফিমেল প্রফেসর বোরখা পরেন এবং তারা সেই সিনিয়র প্রফেসরের ছাত্রী ছিলেন। যদিও এটাও কোন বড় যুক্তি না ঐ শিক্ষকের মনভাব জানার জন্য।
তবে আজ সেই সিনিয়র প্রফেসরের ফেসবুক পেজ থেকে দেখলাম কিছু ব্যাঙ্গের ছাতা টাইপ অনলাইন পোর্টাল তার বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত মিথ্যা খবর প্রচার করছে। তিনি তার পেজে সেই ব্যাপারে একটা প্রতিবাদ লিখেছেন। তিনি সেখানে বলেছেন "তুমি যেই ছবি দিয়ে ঢাকা ইউনিভার্টিটিতে ভর্তি হয়েছো সেই চেহারা নিয়ে পারলে ক্লাসে আসো না পারলে ক্লাসে আসার দরকার নাই। কারন আমি চিনতে চাই তুমিই এই ক্লাসের ছাত্র বা ছাত্রী।"
ব্লগে কিছু মানুষ কে বলতে সুনছি 'একজন শিক্ষকের কাজ নাকি শুধুই শিক্ষা দেয়া সে ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাকের ব্যাপারে কিছু বলার অধিকার রাখে না'। পোশাক নাকি সম্পূর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। সুনে আমি অবাক। এত দিন সুনেছি একজন শিক্ষক পিতারমত, একজন অভিভাবক। যদি সেটা সত্যি হয় তাহলে একজন শিক্ষক কোনটা পরিবেশের জন্য উপযুক্ত পোশাক সেটা নিয়ে কেন নির্দেশনা দিতে পারবেন না?
যদি মুখ ঢাকা বোরখা পরাই ইসলামের বিধান হয় আর সেটা পরে ছাত্রীরা ক্লাসে আসতে চায় তাহলে একজন ছাত্র কেন লুঙ্গী পরে ক্লাসে আসতে পারবে না? লুঙ্গী প্যান্টের চেয়ে অনেক বেশি শরিয়ত সম্মত পোশাক। কারন শরিয়তে এমন পোশাক পরতে বলা হয়েছে যাতে শরীরের গঠন বোঝা না যায় যেটা প্যান্ট পরলে হয় না, এবং সেটা নারী পুরুষ উভয়ের জন্য। জাস্ট লাইক এ্যারাবদের ড্রেস। ইভেন শরিয়তে তুলনা মুলক মোটা কাপড় পরতেও বলা হয়েছে। (কেও যদি হাদিস কোরআনের রেফারেন্স চায়। আমি হয়তো পরে তা দিতে পারব।)
তাছাড়াও লুঙ্গী পরে অজু করা, নামাজ আদায় করা অন্য যে কোন পোশাকের চেয়ে কর্ম্ফটেবল।
সো, একজন ছাত্র কি যেমন খুসি তেমন সাজ মতবাদ নিয়ে লুঙ্গী বা শর্ট পরে ক্লাসে আসতে পারবে?