somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

( কল্পগল্প )--- ফিউশন ট্রেকিং

১৭ ই মে, ২০০৯ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. মিশন: (বর্তমান)

মধ্য রাত, গভীর ঘুমে অচেতন রাইসা, এ্যালান চোখ খুলে ঘুমন্ত রাইসার মুখের দিকে অপলক চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ; জানালা খোলা, চাঁদের আলোয় সারা ঘর ঝলমল করছিলো, সবচেয়ে বেশি ঝলমল করছিলো রাইসার মুখ, যেন জলের বুকে চাঁদের ছায়া, ছুঁয়ে দিলেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। অপার্থিব এক ভালোবাসায় বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠে এ্যালানের, আজকের পর কি রাইসা আগের মত ভালোবাসতে পারবে তাকে, সব জেনেও কি তাকে একান্ত আপন করে নিতে পারবে? ক্ষণিকের তরে মানবীয় আবেগ গ্রাস করে এ্যালানকে, মনে মনে ভাবে, থাক না সব কিছু আগের মতই ! কি দরকার শতবছর ধরে চলে আসা এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে একা লড়াই করার ! পরমুহূর্তেই মন থেকে সব দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলে সে, পা টিপেটিপে বিছানা থেকে নামে এ্যালান। খুব সন্তর্পনে বিড়ালের মত পা ফেলে কোন রকম শব্দ না করে ঘর থেকে বের হয়ে আসে সে। পরবর্তী দশ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে যায়, কালো স্কিন টাইট ট্রাউজার, কালো ফুল হাতা স্কিন টাইট টি-সার্ট, কালো হাত মোজা পড়ে অন্ধকারে ঘর থেকে বের হয়ে আসে এ্যালান। ডান হাতে ধরা বড় একটা ব্রিফকেস, তাই ঐ দিকে একটু ঝুঁকে আছে তার দেহটা, বুঝা যাচ্ছে অনেক ভারী কিছু আছে হাতের ব্রিফকেসটায়। রাস্তায় নেমেই প্রথমে পকেট থেকে বের করে তার ফিউশন ট্রেকিং গোলকটা; এক সেন্টিমিটার ব্যাসের ছোট একটি গোলক, তার মধ্যে থেকে হাজার খানেক চুলের মতন চিকন গোল্ডেন তার বের হয়ে আছে, কিছুক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকে এ্যালান এই ফিউশন গোলকটির দিকে। কি অপরিসীম ক্ষমতা ছোট এই গোলকটির! আয়তনে মার্বেলের মতন এই গোলকটি পৃথিবীর দুইশত কোটি মানুষকে একটি অদৃশ্য কারাগারে বন্দী করে রেখেছে গত দুইশত বছর ধরে ! সবকিছু ঠিকমত ঘটলে আজই এর অবসান ঘটবে, এ্যালানের উপর নির্ভর করছে বিশ্বের সমগ্র মানুষের স্বাধীনতা, সে না পারলে জীবিত আর কারও পক্ষেই এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব না, নাহঃ তাকে কোন ভাবেই বিফল হওয়া চলবে না !

চরম আক্রোশে ফিউশন গোলকটা মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে বুট দিয়ে মাড়িয়ে গুঁড়াগুঁড়া করে দেয় এ্যালান, মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর সমস্ত সিস্টেমের কাছে অদৃশ্য হয়ে যায় সে, পৃথিবীর কোন কম্পিউটার, কোন রোবট, বায়োবট বা কোন স্ক্যানিং সিষ্টেমই আর তাকে চিহ্ণিত করতে পারবে না। চরম তৃপ্তির একটা আবেশ এ্যালানের সমগ্র শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, আহঃ ! স্বাধীনতার এত আনন্দ ! একটু আবেগ প্রবন হয়ে উঠে এ্যালান, আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠতে ইচ্ছা করে তার, মুহূর্তেই নিজেকে সংযত করে সে, এখনও আসল কাজ বাকী ।

হাত ঘড়িতে সময় দেখে নেয় এ্যালান, এখন বাজে একটা, তিনটা বাজার আগে ফিউশন সেন্টারে পৌঁছাতে হবে। প্রতিটি গাড়িতেই ট্রেকিং ডিভাইস লাগানো থাকে, গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার সাথে সাথেই ট্রেকিং এ্যাকটিভ হয়ে যাবে। তাই গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কোন উপাই নেই, হেঁটেই যেতে হবে তাকে।

টানা দুই ঘন্টার মত হেঁটে হাঁপিয়ে উঠে এ্যালান, ফিউশন সেন্টারের দেয়ালে হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় সে, তারপর ছয় ফিট উঁচু দেয়াল টপকিয়ে ঢুকে পরে পৃথিবীর ভয়ংকরতম জায়গা ফিউশন সেন্টারের সীমানায়। বিশাল এলাকা নিয়ে এই সেন্টার, সমগ্র এলাকা জুড়ে এটোমিক ব্লাস্টার হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভয়ংকর দর্শন সামরিক রোবট। এ্যালনের সাথে ফিউশন ট্রেকিং গোলকটা না থাকার কারনে এদের কেউই তাকে দেখতে বা ট্রেক করতে পারবে না, এইসব রোবটেদের কাছে আসলে এ্যালানের কোন অস্তিত্বই নেই। তারপরেও স্বাভাবিক আত্মরক্ষার তাড়নায় তার বুকটা ধুকধুক করছিলো, কাঁপা কাঁপা পদক্ষেপে সে একটা রোবটের সামনে দাড়ায়, কিন্তু রোবটটার মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখতে না পেয়ে তার ভয় আস্তে আস্তে উবে গিয়ে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। এবার মেইন রোড দিয়ে দীপ্ত পদক্ষেপে হেঁটে গিয়ে মূল ফটকের সামনে দাড়ায় এ্যালান। মূল ফটকে দাড়ানো রোবট গার্ডের পকেট থেকে টান দিয়ে পাঞ্চিং কার্ডটা বের করে আনে সে, রোবটের কোন বিকার নেই। মূল বিল্ডিং এ ঢুকে লিফটে দিকে এগিয়ে যায় এ্যালান, লিফটে ঢুকে ভূগর্ভস্হ পঞ্চাশ তলা নিচে, সেন্টারের হৃৎপিন্ড উপস্হিত হয় সে। বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে যায় সে ! আলোতে চারদিকে মধ্যাহ্ণে মত ঝলমল করছে ; প্রায় পঞ্চাশ মিটার ব্যাসের একটা গোলক, ঠিক ছোট ফিউশন ট্রেকিং গোলকের মতই দেখতে শুধু আকারে বিশাল, তরল হিলিয়ামের উপর ভাসছে, আর চারদিক থেকে লক্ষ কোটি তার এসে এই গোলকের বহিরাবরনে মিশেছে। এ এক অপার্থিব অপূর্ব দৃশ্য ! পৃথিবীর কোন জীবন্ত মানুষ গত দুইশত বছরে এই খানে আসতে পারেনি !

বিহ্বল ভাব কেটে গেলে, কালক্ষেপন না করে কাজে লেগে যায় এ্যালান। ব্রিফকেস খুলে কাঁপা কাঁপা হাতে বের করে আনে ছোট কিন্তু ভয়ংকর বিধ্বংসী টাইম বোমাটা। এই সেন্টার ধ্বংস করার জন্য এত পাওয়ারফুল বোমার কোন দরকার ছিলো না, কিন্তু এ্যালান কোন রকম ঝুঁকি নিয়ে রাজি নয় । বোমাটা জায়গা মত বসিয়ে হাত ঘড়ির সাথে মিলিয়ে ঠিক ছয়টায় সময় সেট করে সে। এখন বাজে সাড়ে চারটা, এখান থেকে বের হয়ে, সাতটার মধ্যে ব্রডকাস্টিং সেন্টারে পৌঁছাতে হবে তাকে। টিভি, রেডিও, ইন্টারনেটে বিশ্ববাসীর কাছে এক যোগে প্রচার করতে হবে তাদের মুক্তির সুসংবাদ। হাতে সময় কম, সবকিছু আবার চেক করে ঠিক পাঁচটার সময় লিফটে করে গ্রাউন্ডফ্লোরে উঠে আসে এ্যালান।

সেন্টারের দেয়াল টপকিয়ে বাইরে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় এ্যালান, অধৈর্য্য হয়ে একটু পরপর হাতের ঘড়িতে সময় দেখতে থাকে সে, শেষে এসে ঘড়ির সাথে সুর মিলিয়ে কাউন্ট ডাউন শুরু করে এ্যালান ...... ফাইভ, ফোর, থ্রী, টু, ওয়ান .... এক সেকেন্ড, দুই সেকেন্ড, তিন সেকেন্ড কোন সারা শব্দ নেই ! হঠাৎ পায়ের নিচে মাটি কেঁপে উঠে, থরথর ! পাঁচ সেকেন্ড পর বিকট শব্দের কানে তালা লাগে যায় এ্যালানের।

মুচকি হেসে পকেট থেকে আট পাতার ভাষণের পান্ডুলিপিটা বের একটু চোখ বুলিয়েই আবার পকেটে চালান করে দিয়ে ব্রডকাস্টিং সেন্টারের দিকে পা বাড়ায় এ্যালান, মিশন সফল।


২. ফিউশন গোলক:
একবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে পৃথিবীতে যখন অরাজকতা সীমা ছাড়িয়ে যাবার উপক্রম হয় তখন একদল নিবেদিত প্রাণ বিজ্ঞানী ফিউশন ট্রেকিং ডিভাইসটি আবিষ্কার করে। প্রাথমিক ভাবে আইন করে বাধ্য করা হয় যে, প্রত্যেকেই এই ডিভাইসটি সাথে রাখতে হবে। এতে সারা বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে ট্রেকিং করা সম্ভব হয়। প্রতি মুহূর্তের কে কোথায় আছে, কি করছে, কি কথা বলছে, তার সব বিস্তারিত ইনফরমেশন ফিউশন সেন্ট্রালে চলে যেত। ফলে, অবিশ্বাস্য রকম ভাবে কমে আসে অপরাধের সংখ্যা। কিন্তু এর কয়েক বছর পর, আবার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই এর হার। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, এবার অপরাধ সংগঠিত হওয়ার স্হানে কাউকে ট্রেক করা সম্ভব হচ্ছে না । পরে জানা গেলো যে, অপরাধীরা এক স্হানে ফিউশন ট্রেকিং ডিভাইসটা রেখে অন্য কোথাও অপরাধ সংগঠিত করে আবার আগের স্হানে ফিরে এসে ট্রেকিং ডিভাইস পকেটে ভরে নেয়। এতে করে ফিউশন সেন্টারে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার স্হানে কোন অপরাধীর উপস্হিত থাকার কোন ইনফরমেশন পাওয়া যায় না।

আবার আইন পরিবর্তন করা হলো, প্রতিটি শিশুর জন্মের সাথে সাথে অস্ত্রোপচার করে মস্তিষ্কের ঠিক কেন্দ্রে ফিউশন ট্রেকিং গোলক বসানো বাধ্যতামূলক করা হলো। এতে করে জীবিত অবস্হায়, মস্তিষ্ক অক্ষত রেখে কেউ এই গোলক অপসারন করতে পারবে না। ফলাফল স্বরূপ এক প্রজন্ম পরেই পৃথিবীতে অপরাধের সংখ্যা একেবারে শূণ্যের কোঠায় নেমে আসে। সমগ্র মানব জাতী এক হয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কাজ করতে থাকে, কোথাও কোন অপরাধ নেই, নেই কোন বিশৃঙ্খলা, সবাই যার যার কাজ করে যাচ্ছে সুশৃঙ্খলভাবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে মানুষের জীবন হয়ে উঠে ভয়ংকর রকম বৈচিত্রহীন, একঘেঁয়েমি পূর্ণ, আত্মহত্যার হার বেড়ে যায় ভয়ংকর রকমভাবে

ধীরে ধীরে বিশ্ববাসী অনুধাবন করতে পারে, সবাই একেকটা জৈবিক রোবটে পরিনত হয়ে গেছে; কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে, মানুষ নিজের অজান্তেই নিজের বানানো পরাধীনতার শিকলে বাঁধা পড়ে গেছে। সম্পূর্ণ ট্রেকিং সিস্টেম এমন ভাবে ডেভেলপ করা হয়েছিলো যে, সে নিজেই নিজেকে আপডেট করতে ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। এই ট্রেকিং সিসটেম এমন ভাবে পরবর্তী প্রজন্মের ফিউশন গোলক তৈরী করে যে, মস্তিষ্কে বসানো এই গোলকের মধ্যেমে একটি নির্দিষ্ট কম্পনের সিগনাল দিয়ে যে কোন মানুষকে মুহূর্তেই হত্যা করা সম্ভব।

কিছু সাহসী যুবক ছোট খাটো বোমা নিয়ে মাঝে মাঝেই সেন্টারে হামলা করে, কিন্তু সেন্টারের কাছে পৌছার আগেই অসহ্য মাথা ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়ে আর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরনে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে পরম অবহেলায় এদের দেহকে ইলেক্ট্রিক চুল্লীতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। মানুষের স্বাধীনতা স্পৃহা কল্পনাতীত, নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও কত টগবগে তরুন যে এভাবে জীবন জলাঞ্জলি দিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই।


৩.এ্যালান: (এক বছর আগের ঘটনা)
ফিউশন সেন্টার পার হয়ে এ্যালানের অফিস, প্রতিদিন সকালে এটার পাশ দিয়ে গাড়ী চালিয়ে তাকে অফিসে যেতে হয়, যাবার পথে একরাশ ঘৃণা নিয়ে ফিউশন সেন্টারের দিকে তাকিয়ে থাকে সে। শুধু ঘৃণার যদি নিজস্ব কোন শক্তি থাকতো, তাহলে পৃথিবী দুইশত কোটি মানুষের ঘৃণায় মুহূর্তেই গুঁড়াগুঁড়া হয়ে ধূলির সাথে মিশে যেতো মানুষের নিজের হাতেই তৈরী ইতিহাসের জঘন্যতম এই সেন্টারটি। আফসোস, মানুষ ঘৃনাকে শক্তিতে রুপান্তরিত করতে পারলেও ঘৃনার নিজস্ব কোন শক্তি নেই।

আজকেও মনে হয় দেরি হয়ে যাবে অফিসে, ভাবে এ্যালান। তাড়াহুড়ো করে গাড়ি পার্ক করে অফিসের দিকে দৌড়ে যায় সে। ঢুকার মুহূর্তে ডিং করে একটা শব্দ হয়ে স্পিকারে আওয়াজ ভেসে আসে, "মিস্টার এ্যালান, আপনি ১ মিনিট দেরি করে অফিসের এসেছেন, আপনার এক ঘন্টার বেতন মাস শেষে কেটে নেওয়া হবে।"

জাহান্নামের যাও তুমি, নিজের অজান্তেই গালিটা মুখদিয়ে বের হয়ে আসে এ্যালানের।

মিস্টার এ্যালান, আপনি এই মাত্র মহামন্য ফিউশন সেন্টারকে কটুক্তি করেছেন, আপনাকে একশত ইউনিট জরিমানা করা হলো।

রাগে গজগজ করতে করতে নিজের ডেস্কের গিয়ে বসে এ্যালান। একটা ঘন্টা যেহেতু বেতন থেকে কাটাই যাবে তাই এই একটা ঘন্টা একটু টিভি দেখা যাক। চ্যানেল বদলাতে বদলাতে একটা চ্যানেলের বিজ্ঞাপন তার চোখ আটকে যায়। মাথাটা একটু ঝাকি দিয়ে আবার শুনার চেষ্টার করে এ্যালান, সে কি ঠিক শুনছে ? নাহঃ ! ঠিকইতো শুনছে !

মেয়েটি একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে, "আপনি কি বিষাদগ্রস্ত? নাগরিক বিনোদনের অভাব অনুভব করছেন? আপনি কি নিজেকে বন্দী মনে করছেন ? আপনি কি আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে খুন করতে চান ? তাহলে আমরা আপনাকে খুঁজছি না, আপনিই আমাদের খুঁজছেন, চলে আসুন আমাদের এখানে, জীবনকে উপভোগ করুন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাত্রায়"

নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না এ্যালান, ফিউশন সেন্টারের অনুমোদন ব্যাতিত কোন কিছু প্রচার করা যায় না, তাহলে খুনের বিজ্ঞাপন কিভাবে প্রচার করছে এই সংস্হা ! এটা নিশ্চই নতুন কোন ব্যাবসায়ীক ধন্দাবাজী। তারপরও ওদের ঠিকানাটা টুকে রাখে এ্যালান। খুন করার স্বাধীনতা ! ওহ! নিশ্চই খুব থ্রিলিং কোন খেলা হবে; গতানুগতিক থিম পার্ক, সী বীচ, পাহাড় ট্রেকিং এইসবের আর মানুষ কোন মজা পায় না, এখন দরকার অপরাধ করার আনন্দ, তার উপর সেটা যদি হয় খুন করার মত অপরাধ তাহলেতো সে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা !


৪. সি.এন্ড.কে:
"ক্রাইম এন্ড কিলিং সেন্টার" এর বাহিরে দাড়িয়ে আশপাশটা বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে এ্যালান, বিশাল এলাকা জুড়ে এই সংস্হা, অনেকটা থিম পার্কের মত। ভিতের ঢুকে এ্যালান ইনফরমেশন কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যায়।

"হ্যালো স্যার, আমাদের সি.এন্ড.কে সেন্টারে আপনাকে স্বাগতম"

কি সুন্দর মেয়েটা ! কিন্তু হাসিতে কোন প্রাণ নেই কেন? যেন জীবন্ত মমির হাসি! একটু চমকে উঠে এ্যালান। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, আমি আজ প্রথম এসেছি এই সেন্টারে, আমাকে কি আপনাদের সার্ভিসের ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবেন ?

আপনি ঐখানে একটু অপেক্ষা করেন, আমাদের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনাকে ব্রীফ করবে।

এ্যালান আরও পনের জনের সাথে বসে অপেক্ষা করছে একটা ঘরে, কিছুক্ষণ পর একজন সুদর্শন যুবক এসে মমির হাসি দিয়ে বললো, "আমি এই কোম্পানীর মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ, আপনাদের ব্রীফ করতে এসেছি।"

"এটা হলো ডি.এন.এ. ব্যাংক; এখানে পৃথিবীর ইতিহাসে বিখ্যাত ও কুখ্যাত সব ব্যাক্তিদের ডি.এন.এ সেম্পল আছে; আলেকজেন্ডার, সক্রেটিস, প্লেটো, একেলিস, সিজার, ক্লিউপেটরা, কলোম্বাস, রাইট ব্রাদারস, নিউটন, নেপোলিয়ান, আইনস্টাইন, হিটলার, পেলে, সাদ্দাম হোসেন, বিন লাদেন, মিলেট দম্পতি, পিয়েলা কি নেই এই ব্যাংকে ! " দর্শনার্থীদেরকে বাহির থেকে একটা বড় ভবন দেখিয়ে বললো মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ।

এইটা হলো ক্লোন সেন্টার, এখানে আপনাদের পছন্দমত শিকারকে ক্লোন করা হয়। সবাই কেমন যেন একটু চমকে উঠলো। স্মিত একটা হাসি দিয়ে এক্সিকিউটিভ বললো, "জ্বী, আপনারা ডিএনএ ব্যাংক থেকে সেম্পল পছন্দ করে কাকে হত্যা করতে চান আমাদের জানাবেন, পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা তাকে ক্লোন করে ফেলবো।

সবশেষে এগুলো হলো আমাদের কিলিং জোন, দুর থেকে কতগুলো প্রাচীর ঘেরা জায়গা দেখিয়ে বললো এক্সিকিউটিভ। প্রতিটা ব্লক আয়তনে দুশত বর্গ মিটার, একেকটায় একের রকম পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে, কোনটায় পাহাড়ি এলাকা, কোনটা আবার শুধু মরুভূমি, আবার কোনটা ঘন জঙ্গল। নির্দিষ্ট দিনে ক্নোন করা প্রাণীটাকে এখানে ছেড়ে দেওয়া হবে, আর আপনি আপনার পছন্দমত যেকোন একটা অস্ত্র নিয়ে তাকে শিকারে নেমে যাবেন। সে এক ভয়ংকর রকম এডভেঞ্চার !

দর্শনার্থীদের মধ্যে থেকে একজন প্রশ্ন করলো, আচ্ছা যদি শিকারী নিজেই শিকার হয়ে যায় ?

না, এমন হবার কোন সম্ভবনা নেই। আপনাদের হাতে একটা এলার্ম বাটন থাকবে, কোন বিপদ হলে এই বাটনে চাপ দিবেন; সাথে সাথে আমাদের সার্প-শুটার স্নাইপার ক্লোনটাকে গুলি করে ভূপাতিত করে ফেলবে।

এ্যালান একে একে সবার চোখের দিকে তাকায়, সেখানে জ্বলজ্বল করছে অজানা এক আভা, মুহূর্তেই যেন সবার মধ্যে নতুন এক প্রাণের সঞ্চার হয়। হাজার হোক, খুন করার নেশা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভয়ংকর নেশা। দুইশত বছর কেন, হাজার বছরেও এই নেশা মানুষের রক্ত থেকে যাবার নয়।

আপনারা আজকে বুকিং দিয়ে গেলে আগামি সপ্তাহে এসে আমাদের এই অভূতপূর্ব খেলায় অংশগ্রহন করতে পারবেন, নির্বিকারভাবে বলে এক্সিকিউটিভ।

সবার মত এ্যালনও বুকিং দেওয়ার জন্য লাইনে দাড়ায়। বেশিভাগই হিটলার আর আলেকজেন্ডারকে বুকিং দেয়। বুকিং এর লোকটা একটু অবাক হয়ে এ্যালানের দিকে তাকায় যখন সে বুকিং দেয় সক্রেটিসকে। একটু নার্ভাস হাসি দিয়ে এ্যালান শুধু বলে, "আমি প্রাচীন গ্রীক দর্শনশাস্ত্রের ভক্ত"।

সঞ্চিত ইউনিটের প্রায় অর্ধেক খরচ করে যখন এ্যালান বাড়ি ফিরলো তখন রক্তের মধ্যে একটা আলোড়ন অনুভব করছিলো সে, এ এক অন্যরকম অনুভূতি। অনেক দিন পর আজ তার শান্তির ঘুম হয় । আহঃ ! এমন শান্তির ঘুম কত দিন হয় না !

৫. প্রথম খুন:
"স্যার, আপনাকে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রস্তুত হতে হবে, সক্রেটিসকে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই মাত্র" বললো লোকটা আর আপনি এখান থেকে যেকোন একটা হাতিয়ার বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।

এ্যালান দেখে তার সামনে তীর ধনুক, তলোয়ার, বিংশ শতাব্দির রিভলবার থেকে শুরু করে সর্বাধুনিক এটোমিক ব্লাস্টার পর্যন্ত থরে থরে সাজানো আছে। সব ঘুরে সে শেষমেষ একটা বিটক দর্শন দুইটা তলোয়ার হাতে তুলে নেয় ।

জোরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকে, তারপর ঘন জঙ্গলে ঢুকে যায় এ্যালান। দুই হাতে দুইটা তলোয়ার নিয়ে সন্তপণে এগিয়ে যাচ্ছে সে, সতর্ক দৃষ্টি, নিজের নিঃশ্বাসের শব্দ নিজেই শুনতে পাচ্ছে । হঠাৎ চোখের কোনে কি যেন নড়ে উঠতে দেখে সে, এক লাফ দিয়ে গাছে আড়ালে চলে যায় এ্যালান, তারপর ধীরে ধীরে উকি দিয়ে দেখে একটা কাঠবিড়ালী জানপ্রাণ দিয়ে দৌড়াচ্ছে । নিজের মনেই হেসে উঠে এ্যালান।

আরও এগিয়ে যায় সে, বুকের ভীতর ড্রাম বাজানোর শব্দ হচ্ছে, লাফ দিয়ে একটা বালির টিবির উপর উঠে সে, একটু ধাক্কার মত খায় এ্যালান সাথে সাথে, দেখে পনের বিশ মিটার দুরে একটা গাছের নিচে বসে আছে একটা পৌড় লোক, নির্বাক নিশ্চল। এত অল্প বয়সী কাউকে আশা করেনি এ্যালান, কত হবে লোকটার বয়স ! চল্লিশ বিয়াল্লিশ !

খোলা তরবারী নিয়ে সক্রেটিসের দিকে এগিয়ে যায় এ্যালান, সমানে দাড়িয়ে হুংকার দিয়ে উঠে, "আমি আপনাকে হত্যা করতে এসেছি"

মৃদু হেসে উঠে সক্রেটিস, কিছক্ষণ আগে হেমলক পান করিয়ে আমাকে হত্যা করা হয়েছে, তুমি এখন আবার আমাকে কিভাবে হত্যা করবে ? আর আমি এখানেই বা এলাম কিভাবে ? এটা কি মৃত্যুর পরবর্তী জীবন ?

আপনাকে আবার সৃষ্টি করা হয়েছে, আপনাকে প্রায় তিন হাজার বছর আগে প্রথমবার হত্যা করা হয়েছিলো, মানুষ এখন মানুষ তৈরী করার প্রযুক্তি আয়ত্বে নিয়ে এসেছে ।

বিন্দু মাত্র বিচলিত না হয়ে, মৃদু হেসে সক্রেটিস বললো, "ও! পুনঃপুনঃ যদি সৃষ্টিই করা যায় তাহলে মৃত্যুর কি স্বার্থকতা রইলো ? ঠিক আছে কর হত্যা আমাকে, তবে মৃত্যুর আগে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও, আমাকে কেন হত্যা করতে চাও?

একটু থমকে যায় এ্যালান তারপর বলে, এটা একটা খেলা, আপনি শিকার আমি শিকারি, আপনি দৌড়ান ।

হো হো করে হেসে উঠে সক্রেটিস, দৌড়িয়ে এমন কোন জায়গায় কি যেতে পারবো যেখানে মৃত্যু আমাকে ছোঁবে না ! তুমি যদি আমাকে হত্যা করতেই চাও তাহলে চালাও তোমার তরবারী।

রক্তের মধ্যে কম্পন অনুভব করতে থাকে এ্যালান, মৃত্যু মুখেও শিকারকে এমন নির্বাক দেখে হিতাহিত জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে সে। ডান হাতে ধরা তলোয়ারটা গায়ের জোরে ঢুকিয়ে দেয় সক্রেটিসের বুকে, আর বা হাতের তলোয়ারটা সজোয়ে বসিয়ে দেয় মাথা বরারব।

উহঃ শুব্দ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সর্বকালের অন্যতম দার্শনিক সক্রেটিস, মৃত্যুর আগে শুধু একটা কথা মুখ দিয়ে বের হয় তার, "হায়! তিন হাজার বছরেও সভ্যতা একচুলও এগোয়নি"

এ্যালানের সারা শরীর রক্তে মাখামাখি, তার পায়ের কাছে পড়ে আছে সক্রেটিসের থেঁতলানো মগজ, পৈশাচিক উল্লাসে গগন চিৎকার দিয়ে উঠে সে। অপকৃতস্হের মত হাসতে হাসতে কিলিং জোন থেকে বের হয়ে আসে এ্যালান।


৬. দ্বিতীয় খুন:
পরবর্তী কয়েকদিন ঠিকমত ঘুমাতে পারেনি এ্যালান, ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে শুধু ভেসে উঠেছে মাটিতে পড়ে থাকা সক্রেটিসের মগজ। উহঃ কি বিভৎস দৃশ্য ! তার অবচেতন মন কিছু একটা ইঙ্গিত দিচ্ছে তাকে, বারবার একই স্বপ্ন দেখিয়ে। কিন্তু ইঙ্গিতটা ধরতে না পেরে তার অস্হিরতা আরও বেড়ে যায়, মাঝে রাইসার সাথে বেশ কয়েকবার তুমুল ঝগড়া হয়ে গেছে তার।

একদিন তুমুল ঝগড়ার মধ্যে হঠাৎ রাগের মাথায় রাইসা বলে উঠে, ফিউশন গোলকের মাধ্যমে তোমার মগজে যদি তীব্র একটা ব্যাথা দিতে পারতাম তাহলে মনটা শান্ত হতো।

হঠাৎ এ্যালানের সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠে, "কি বললেন তুমি ? আবার বলো , আবার বলো।

"ফিউশন গোলকের মাধ্যমে তোমার মগজে যদি তীব্র একটা ব্যাথা দিতে পারতাম তাহলে মনটা শান্ত হতো।", কেন হুমকি দিচ্ছ নাকি ? যতবার বলতে বলবে ততবার বলবো, আমি কি তোমাকে ভয় পাই নাকি ? রাগে গজগজ করতে থাকে রাইসা।

ইউরেকা! ইউরেকা! চিৎকার দিয়ে বউকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে ধেঁই ধেঁই করে নেচে উঠে এ্যালান। তার সারা গালে, মুখে চুমু দিতে শুরু করে হঠাৎ।

একটা ঝাড়া দিয়ে এ্যালানকে সরিয়ে দিয়ে বলে "কি ব্যাপার ! পাগল হয় গেলে নাকি?"

পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যে ভয়ংকর পরিকল্পাটা ফাইনাল করে ফেলে এ্যালান। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বার বার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে সে। অবশেষে সন্তুষ্ট হয়, নাহঃ পরিকল্পনায় কোথাও কোন ফাঁক নেই; একদম ফুলপ্রুফ প্ল্যান।

অবশেষে সি.এন্ড.কে সেন্টারে হাজির হয়ে এ্যালান। এগিয়ে যায় ইনফরমেশন কাউন্টারের দিকে। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মৃদু একটা হাসি দিয়ে বলে, "আমি কি কোম্পানির টেকনিকেল ম্যানেজারের সাথে দেখা বলতে পারি ? "

ইন্টারকমে কিছুক্ষণ কথা বলে মেয়েটি বলে, "আপনি এই দিক দিয়ে পাঁচ নাম্বার রুমে যান, ওখানেই টেকনিকেল ম্যানেজার বসেন"

দরজায় নক করতেই ভিতর থেকে একটা ভরাট কন্ঠ বলে উঠে, "আসুন স্যার , আসুন"।

ভীতরে গিয়ে বসে এ্যালান।

তা এবার বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য ?

আমি আপনাদের এখানে আগে একবার ক্লোন খুন করেছি, আমি আবারও করতে চাই।

ঠিক আছে, আপনি বুকিং দেন, সমস্যা কোথায় ?

আমি আসলে আপনাদের ডি.এন.এ ব্যাংকের কাউকে খুন করতে চাই না, আমি আমার নিজের ক্লোনকে খুন করতে চাই

কিন্তু আপনিতো বিখ্যাত কেউ নন, তার উপর আপনি কেন নিজের ক্লোনকে খুন করতে চান?

দেখুন, আমি যদি নিজের ক্লোনকে খুন করতে যাই, সেই ক্লোনটাও বাঁচার জন্য লড়াই করবে । কিন্তু দুইজনের চিন্তাধারা যেহেতু একরকম সেহেতু এই লড়াইটা হবে খুবই উচ্চমার্গীয় বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই। এতে আপনাদের এই প্রজেক্টে নতুন মাত্রা যোগ হবে। আর আজ আমি বিখ্যাত কেউ নই, কিন্তু কাল যে হবো না সে গ্যারান্টিতো কে দিতে পারবে না , তাই না ?

হুমম, ভালো বলেছেন। ঠিক আছে , আমি টিকনিসিয়ানদের বলে দিচ্ছি , আপনি আজকে ডিএনএ সেম্পল আর বুকিং দিয়ে যান। আমরা আপনাদের লড়াই উপভোগ করতে চাই।

এক সপ্তাহ পর, ধীরে ধীরে চোখ খুলে এ্যালান। নিজেকে একটা ঘন জঙ্গলে আবিষ্কার করে সে । লাফিয়ে উঠে এ্যালান, সি.এন্ড.কে সেন্টারের টেকনিকেল ম্যানেজারের সাথে কথোপকথন পর্যন্ত তার মনে আছে, তারপর আর কিছুই মনে নেই তার। সে এখানে কিভাবে এলো ! দেখেতো জায়গাটা মনে হচ্ছে সি.এন্ড.কে সেন্টারের কিলিং জোন । মানে ! সে ক্লোন ! তাকে এখন হত্যা করতে আসবে সে নিজেই । ধীরে ধীরে সব স্মৃতি ফিরে আসে তার, মনে পড়ে গেলো তার ভয়ংকর সেই পরিকল্পনার কথা । মৃদু হাস্য মুখে সে অপেক্ষা করতে থাকে নিজের জন্য।

মুখোমুখী দুই এ্যালান, দুজনেই চুপ, কোন রা নেই কারো মুখে। দুজনেই জানে একটা টু শব্দ করলে আসল এ্যালনের মাথায় বসানো ফিউশন ট্রেকিং গোলকের মধ্যমে সব ইনফরমেশন চলে যাবে ফিউশন সেন্টারে। কোন কথা না বলে, হাতের তলোয়ারটা মাটিতে ফেলে দিয়ে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে আসল এ্যালান ।

প্রচন্ড বেগে মাথার উপর নেমে আসে বিকট দর্শন তলোয়ার, বিদির্ণ হয়ে যায় আসল এ্যালানের মাথা। মুহূর্তেই এ্যালানের মগজ থেকে ফিউশন ট্রেকিং গোলকটা বের করে পকেটে ভরে নেয় ক্লোন এ্যালান।

রক্ত মাখা শরীর নিয়ে কিলিং জোন থেকে বের হয় আসে দুই শত বছর পর, পৃথিবীর প্রথম স্বাধীন মানুষ


৭. পরিসংহার:
" .... বিশ্ববাসি, আজ আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তা টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আপনাদের । আমাদের সামনে অনেক কাজ , আমাদের প্রিয় এই পৃথিবীকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সবাই ভালো থাকুন সুস্হ থাকুন।" একদম শেষে এসে এ্যালান বলে, "আসল এ্যালানের পক্ষ থেকে আমি ক্লোন এ্যালান "। এই বলে দীর্ঘ বক্তৃতা শেষ করে ব্রডকাস্টিং সেন্টার থেকে বের হয়ে আসে এ্যালান।

চারদিকে উৎফুল্ল মানুষের ঢল ! মানুষ আজ মুক্তির আনন্দে পাগল প্রায়। রাস্তায় বের হয়েই এ্যালান দেখে রাইসা দুহাত প্রসারিত করে দাড়িয়ে আছে, তার চোখে বেয়ে ঝরছে জল।

এ্যালান এগিয়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, "তুমি কি আমাকে কখনো আগের মত ভালোবাসতে পারবে?"

কেন ?

আমি তো আসল এ্যালান নই, এ্যালানের ক্লোন।

কৈ নাতো ! কোন পার্থক্য তো নেই ! তুমিই আমার এ্যালান, শুধু আসল এ্যালান থেকে এক সপ্তাহের ছোট।

দুইজনেই হো হো করে হেসে উঠে, রাইসার এই কৌতুকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০০৯ সকাল ৮:৩৪
৭০টি মন্তব্য ৭১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×