সেমিস্টার ব্রেকে ১ সপ্তাহের ছুটি। আগে হতেই আবু সাঈদ ভাইয়ের সাথে আলাপ চলছিল, ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যায় কিনা। আলাপ আলোচনায় সিদ্ধান্ত হলো, মক্কায় ওমরাহ করে মদীনা যেতে পারি। সেখান হতে সময় হলে আল-উলার মাদায়েন সালেহ যাওয়া যাবে। সাঈদ ভাইয়ের খুব আগ্রহ সামুদ জাতির পরিত্যাক্ত এলাকাটি দেখবেন। আমার মাথায় তখন অন্য চিন্তা খেলা করছে। যদি আমার প্ল্যান কাজে লাগে, তাহলে এটা হবে আমার ভ্রমণের অন্যতম পাওয়া।
আমাদের ভ্রমণে আমরা ৪ জন। আমি, আবু সাঈদ ভাই, হানিফ ভাই ও ফিরোজ ভাই। আমরা সবাই আবু সাঈদ ভাইয়ের ৯০ সালের টয়োটা ক্রেসিডা নিয়ে অভিযানে বের হব। এই গাড়ী নিয়ে মক্কা, মদীনা যাওয়াটাই অনেক সাহসের কাজ। সেখানে আমি বিশাল এক প্ল্যান ছক করে বসে আছি।
মতিউর রহমান মাদানী খামিস মোশায়েতে ইসলামিক অনুষ্ঠানে এসেছেন। ৩০ মার্চ, বৃহঃবার সারাদিন ওনার সাথে ছিলাম। আমাদের আবহা টিমের দায়িত্ব ছিল অনুষ্ঠানটি সূচারোভাবে দাঁড় করানো। আমরা প্ল্যান করে রেখেছি শুক্রবার সকালে আমাদের যাত্রা শুরু করব। কিন্তু মতিউর রহমান মাদানী’র বক্তব্য শেষ হতে না হতেই আবু সাঈদ ভাই জানালেন, আজ রাতেই আমরা রওনা হব। আজ রাতে রওনা দিলে আগামীকালের জুম্মার নামাজ মক্কার হারাম শরীফে পড়া যাবে। এদিকে আমার কোন কিছুই গোছানো নেই। বাসায় এসে কোনমতে ব্যাগ গুছিয়ে রাত ১২টায় আমাদের যাত্রা শুরু করলাম।
যেকোন ভ্রমণ উপভোগ্য হয়ে উঠে যদি সাথের সঙ্গীরা মনমানসিকতায় একই রকম হয়। তবে বেশীরভাগ ভ্রমণেই সেই সৌভাগ্য আসে না। গাড়ী ছাড়ার সাথে সাথে আমি বুঝে গেলাম- আমরা সবাই প্রায় একই রকম। আমাদের মাঝে আন্তরিকতা ও ছাড় দেয়ার মনোভাবে ঘাটতি নেই।
আবু সাঈদ ভাই ড্রাইভ করছেন। বাকীরাও পালাক্রমে ড্রাইভ করবেন। ম্যানুয়াল গাড়ী বলে আমি ড্রাইভ করব না। আমাদের গাড়ী জিজানের পথ ধরে মক্কার দিকে ছুটে চলছে ১৫০ কি.মি. গতিতে। তখনও জানতাম না এ ভ্রমণে কত চমক বাকী আছে।
(চলবে)