১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব
৪র্থ পর্ব
অনেক দূর হতেই বুদ্ধের মূর্তিটি দেখতে পাচ্ছিলাম। সবুজ পাহাড়ের মাথায় স্থাপিত সোনালী মূর্তিটি থিম্পু ভ্যালির দিকে অপালক তাকিয়ে আছে। আমরা রাস্তার পাশে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। বুদ্ধা পয়েন্ট পৌছে বুঝতে পারলাম – কত বিশাল একটা মূর্তি এটা।
১৬৯ ফিট উঁচু ব্রোঞ্জের মূর্তিটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বুদ্ধ মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও এখনও সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি, তবে পর্যটকরা চারপাশে ঘুরে দেখতে পারে। অষ্টম শতাব্দীতে একজন ভবিষ্যৎ বানী করেছিল যে এমন বড় একটি মূর্তি একসময় এই এলাকায় হবে।
নানাকে তার নিজের মত ছেড়ে দিয়ে আমরা চারপাশ ঘুরে দেখতে থাকি। মূর্তিটির ভিত্তিকে ঘিরে আরো অনেক ছোট ছোট মূর্তি আছে। চারপাশ বিভিন্ন অলংকরণে সজ্জিত করা হয়েছে। একটি দড়জা দেখে আমরা ভেতরে প্রবেশ করি। কাজ চলছিল, আমাদেরকে সেখনে থাকতে নিষেধ করল। ভিত্তির ভেতরে মন্দির হবে। আরো ১ লাখ ২৫ হাজার ছোট মূর্তি স্থাপন করা হবে।
আমরা মূর্তিটির সামনে বিস্তৃত খোলা জায়গায় এলাম। সেখান হতে থিম্পু ভ্যালি দেখা যাচ্ছে। অনেক ইউরোপিয়ান বেড়াতে এসেছে, সাথে গাইড। সার্কের দেশগুলো ছাড়া বাকী দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে গাইড নিতে হয়। আমরা অনেক অনেক ছবি তুলে নানাকে খুঁজতে গেলাম। নানা ছায়ায় বসে ছিলেন। নানা জানালেন-বুদ্ধ মূর্তি দেখেই তার ভূটান বেড়াতে আসা স্বার্থক হয়ে গেছে। ভূটানের বাকী দিনগুলোতে আর তেমন কিছু না দেখলেও আফসোস থাকবে না। আমরা হাসি, এখনোতো অনেক কিছু বাকী।
কর্মা এরপর আমাদেরকে চাংগাখা মনাস্ট্রিতে নিয়ে যায়। ১২ শতকের এই মনাস্ট্রি পুরনো ধর্মীয় স্ক্রিপ্ট, বড় বড় প্রেয়ার হুইল ও হাজার হাত বিশিষ্ট একটি মূর্তির জন্য বিখ্যাত। এই মন্দিরে “গড অব চিলড্রেন” অবস্থিত। ভূটানিরা তাদের সন্তানদের নাম রাখতে এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য এখানে নিয়ে আসে।
মন্দিরটিতে চিকন পাহাড়ী সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়। মন্দিরটির সৌন্দর্য্য আমাদের মুগ্ধ করল। সেই মূহুর্তে আমরা জানতাম না যে এখানে হাজার হাত বিশিষ্ট একটি মূর্তি আছে, তাই তা দেখে আসতে পারিনি। ফেরার পথে আমাদের সাথে এক ভূটানি দম্পতির দেখা হয়। তারা তাদের বাচ্চাকে সাথে করে নিয়ে এসেছে আশীর্বাদের আশায়। আমরা তার সাথে ছবি তুলতে ভুল করলাম না।
ভূটানের জাতীয় পশু টাকিন। কর্মাকে বললাম আমাকে সেটা দেখাতেই হবে। কর্মা সেদিকে চলল।
(চলবে)
নোটঃ হাজার হাত বিশিষ্ট মূর্তি'র ছবি ইন্টারনেট হতে সংগ্রহ।