পেছনের কথাঃ
জুনে ৩ মাসের গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হল। ওদিকে শাকিলাও অস্ট্রেলিয়া হতে ৬ মাসের জন্য রিসার্চের কাজে ঢাকা আসছে। মনে মনে কোথাও বেড়াবার একটা প্ল্যান করে ফেললাম।
মনের গোপন কোনে ভুটান যাবার একটা ইচ্ছা সুপ্ত অবস্থায় ছিল। আমি আগে ঢাকায় যেখানে চাকুরি করতাম, তার এক ডিরেক্টর ঈদের ছুটিতে ভুটান বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি ভুটানের অনেক গল্প করেন- এর মত শান্ত, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, নির্মল দেশ নাকি হয় না। সুযোগ পেলে আমাদেরকেও ভুটান ঘুরে আসতে বলেন। সে থেকেই মনে পুষে রেখেছি-“যাব একদিন।”
আমার ভুটান বেড়াতে যাবার কথা মিলন ও লিজাকে জানাই। তারা খুব আগ্রহ দেখায়। আমরা ঈদের ১০ দিন আগে ঢাকা পৌছলাম, শাকিলাও ঈদের ৪ দিন আগে অস্ট্রেলিয়া হতে চলে আসল। আমি খোঁজ নিতে থাকলাম কিভাবে ভালো একটা ট্যুর হয়।
আমাদের উত্তরাতেই একটি ট্যুর কোম্পানি পেয়ে যাই। শাকিলা ও আমি এক বিকালে তাদের অফিসে চলে গেলাম। তাদের সাথে কথা বলে ভালো লাগল। আমার নানা যখন জানলেন আমরা ভুটানে বেড়াতে যাচ্ছি, তিনিও আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। আমি পড়লাম উভয়সংকটে। ‘না’ বলতে পারছি না, আবার ‘হা’ বললেও বিপদ। উনার বয়স ৮০’র উপরে। যদিও শাররীকভাবে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন, কিন্তু অল্পতেই অস্থির হয়ে যান। তবে উনি ঘুরতে খুব পছন্দ করেন।
শেষ পর্যন্ত নানাকে আমাদের দলে ভিড়ালাম। মিলন ও লিজার সাথে আলাপ করে ৫দিন ৪ রাতের একটি প্যাকেজ কনফার্ম করে ফেললাম। প্যাকেজে সব খরচ অন্তর্ভূক্ত ছিল- বিমান ভাড়া, হোটেল, ৩ বেলা খাওয়া, সারাদিন মাইক্রোতে করে সাইট সিয়িং। খরচ পড়ল জনপ্রতি ৪২, ০০০ টাকা।
দ্রুক এয়ার উভয়দিকে সপ্তাহে শুধুমাত্র ৩ দিন বিমান পরিচালনা করে- সোম, বুধ এবং শুক্রবার। আমরা সোমবার রওনা হয়ে শুক্রবার ফিরে আসব। আমাদের ইচ্ছা তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে এবং উপভোগ করে ভুটান ঘুরে দেখা। আর সম্পূর্ণ একটা দিন রেখে দিয়েছি Tiger’s Nest এর জন্য।
বজ্র ড্রাগনের দেশ ভূটান-২
(চলবে)