১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব
৪র্থ পর্ব
দ্বীপে নেমেই প্রথম চিন্তা হলো যেভাবেই হোক থাকার একটা ভালো ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বীপে হাতে গোনা ৪/৫টি হোটেল আছে। কিন্তু যেভাবে লোক আসছে, রুম পাওয়া যাবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে একটা ভরসা ছিল যে, সৌদিরা দ্বীপে আসার সময় তাবু, চুলাসহ যাবতীয় ক্যাম্পিং সামগ্রী নিয়ে আসে। নিরিবিলি বিচে রাতটা কাটিয়ে দেয়। কেউ তাদের বিরক্ত করে না। সৌদিদের জন্য রাতের বিচ নিরাপদ হলেও, আমাদের জন্য তা নাও হতে পারে। আমিও আসার সময় আমার তাবুখানা নিয়ে এসেছিলাম। একান্তই যদি কোন ব্যবস্থা না হয়, তাবুই ভারসা।
যেকোন ভ্রমণের আগেই প্ল্যান করতে হয়। দেখা গেল মোশতাক ভাইয়ের কোন ভ্রমণ প্ল্যানই নেই। কোথায় থাকতে হবে, কি কি দেখতে হবে- কিছুই ওনার জানা নেই। প্ল্যান শুধু একটাই- ফারাসান যেতে হবে। ফারাসানের মূল শহরটি এত ছোট যে, ১০ মিনিটে শহরের এমাথা ওমাথা ঘুরে ফেলা যায়। আমি দ্বীপের ম্যাপ প্রিন্ট করে নিয়ে এসেছিলাম। খুঁজে খুঁজে “ফারাসান হোটেল” গেলাম। প্রথম দেখাতে হোটেলটিকে বেশ ভালো লাগল। কিন্তু ১টি মাত্র ডাবল বেডরুম ৪০০ রিয়াল। সুযোগ সুবিধার তুলনায় ভাড়াটা অনেক বেশী । আমরা অন্য হোটলের খোঁজ করলাম।
আগেই বলেছি ফারাসানের ঘুরতে যাবার প্ল্যান আমার সেই প্রথম বছর থেকেই। তাই সব সময় খোঁজ করেছি- কেউ ওখানে ঘুরতে গেল কিনা, পরিচিত কেউ সেখানে থাকে কিনা। এমনি করেই নাজমুল ভাইয়ের খোঁজ পেয়ে যাই। কয়েকজন ইন্ডিয়ান টিচার ফারাসান ঘুরতে গিয়েছিল। নাজমুল ভাই তাদের খুব হেল্প করেন। ফিমেল টিচাররা ফিরে এসে আমার ওয়াইফের কাছে নাজমুল ভাইয়ের খুব সুনাম করে। তাদের কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে এক বিকালে নাজমুল ভাইকে কল করলাম। ওনার বাড়ী চট্টগ্রামে। ফারাসানে একটি হোটেলের ম্যনেজার হিসাবে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন। আমাদেরকে ফারাসান ঘুরে যেতে বললেন। যতটুকু সাহায্য দরকার উনি করবেন।
আলী যখন অন্য হোটেলের খোঁজ করছে- আমি নাজমুল ভাইকে ফোন দিলাম। প্রথমেই নাজমুল ভাইয়ের কাছ না যাবার কারন ছিল- প্রায় অপিরিচিত একজনকে বিরক্ত করতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করতেই হল। নাজমুল ভাই আলীকে ওনার হোটেলের ডিরেকশন জানিয়ে দিলেন। আমরা মূল রাস্তা থেকে বামে বাঁক নিলাম। শান্ত নিরিবিলি রাস্তা ধরে কিছুদূর যেতেই বিচের পাশে “কোরাল রিসোর্ট” এর দেখা পেলাম। হোটেলে নাজমুল ভাইয়ের খোঁজ করতেই এক সৌদি পরিস্কার বাংলায় বলল, ‘আপনারা ফোন করেছিলেন?’
(চলবে)