১ম পর্ব
২য় পর্ব
কাকডাকা ভোরেরও আগে ঘুম থেকে উঠলাম। আলী চোখ কচলাতে কচলাতে গাড়ী স্টার্ট দিল। ভোর সাড়ে ৪ টায় জাহাজ অফিসে হাজির হলাম। এখান থেকে ফারাসান যাওয়া আসার টিকেট কাটতে হবে। ভেবেছিলাম আমরাই বুঝি সবার আগে এসেছি। কিন্তু ভুল, ২০ জনেরও বেশী লোক অফিস গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আরো অনেকেই গাড়ীতে বসে আছে। আমার পিঠ দিয়ে শীতল শিহরণ বয়ে গেল- আমাদের জন্য টিকেট পাওয়া যাবে তো?
ছয়টার সময় গেট খুলল। আলীকে সব কাগজপত্র দিয়ে লাইনে দাঁড় করালাম। প্রচন্ড ভীড়। একেকজনের হাতে পুরো ফ্যামিলির কাগজপত্র। ফলে সময় লাগছিল বেশী। ৭ টার সময় জানা গেল সকাল ৮টার টিকেট শেষ। আমরা হতাশ হয়ে পরলাম, পরের জাহাজ বিকাল ৩টায়। এতদূর আসাটা কি বৃথায় যাবে? বিকালের জাহাজে টিকেট পাব তারওতো নিশ্চয়তা নেই। তখনি জানতে পারলাম জাহাজের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বেলা ২টা পর্যন্ত প্রতি ঘন্টাতেই জাহাজ আছে। সবাই কি যে খুশী হয়েছিলাম বলার মতো নয়।
এবার আমাদের স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করলাম। শাকিলা ও দীবাকে সবার কাগজপত্র দিয়ে মেয়েদের লাইনে পাঠালাম। আধা ঘন্টার মাঝেই সবার টিকেট পেয়ে গেল। আমরা দৌড়ে গাড়ীতে উঠলাম। ৯টায় জাহাজ ছাড়বে, জাহাজে আগেই গাড়ী তুলতে হবে।
জাহাজ পোর্টের ভেতরে চেকিং এর জন্য আমরা গাড়ী থেকে নেমে গেলাম, আলী গাড়ী নিয়ে অন্য দিকে চলে গেল জাহাজে গাড়ী উঠানোর জন্য। এয়ারপোর্টে যেভাবে চেকিং হয়, ঠিক সেভাবে তল্লাশি নেয়া হল। জাহাজটি দেখে ভালো লাগল। আমি এই প্রথম এ ধরনের জাহাজে উঠছি। এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল। সবাই মিলে জাহাজে উঠলাম, ভেতরের ব্যবস্থাপনা বেশ আরামদায়ক ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।
জাহাজ ছেড়ে দেয় দেয় অবস্থা। এদিকে আলীর কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। মোশতাক ভাই কয়েকবার ফোন করলেন, কিন্তু আলী ধরছেনা। কিছুক্ষণ পর আলী’র সাথে মোশতাক ভাইয়ের কথা হল। শান্ত স্বরে তিনি যে কথাটি শোনালেন তাতে আরেকবার পিঠে শীতলতা অনুভব করলাম –“আলী গাড়ী নিয়ে জাহাজে উঠতে পারেনি।”
তখনি জাহাজটি আমদেরকে নিয়ে ফারাসানের উদ্দেশ্যে রওনা হল।
ছবিঃ ইন্টারনেট
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮