somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠি

০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রিয়তমা,
জানি ভাল আছ, আমার সাথে নেই তো কি হয়েছে? তুমি যেখানেই থাকবে যার সাথে থাকবে ভালই থাকবে, আমি প্রথম থেকেই জানতাম আমি তোমাকে পাবার মত যোগ্য নই। সে যাই হোক, আমি এই চিঠিটা আমি তোমাকে পোস্ট করবনা, কারণ আমি জানি আমার চিঠি তুমি পড়ে দেখবেনা, আর তুমি নাকি তোমার বাসা পাল্টেছ, তাই তোমার বর্তমান ঠিকানাটাও আমি জানিনা!

ব্রহ্মপুত্রের পানিও নাকি একদিন পরিস্কার ছিল, তারপর নাকি অনেকদিন ধরে ময়লা জমতে জমতে, মানুষের অবহেলায় সেটা কালো,ময়লা, বিষাক্ত হয়ে গেল, আগে না এটা শুনলে আমি বিশ্বাস করতে চাইতামনা, আজ যখন নিজের দিকে তাকাই, চোখ বুজে বিশ্বাস হয়ে যায়।

তোমার কথা আমার যখন মনে পড়ে, তোমার না একদম সে প্রথম দিনটার চেহারার কথা মনে পড়ে, প্রথম যেভাবে তোমাকে দেখেছিলাম আমি, সেই লাজুক চেহারা, মোটা করে কাজল দিয়ে আসা চোখ দুটো প্রয়োজনের চাইতেও বেশি মায়াবী দেখানো, আর তোমার সেই চুল, এত কালো কি করে হয় একজন মানুষের চুল আমি ভাবতাম! আমার জগৎ এখন যতটা কাল তার চাইতেও বেশি কাল ছিল তোমার চুল। এখনও সব একই আছে জানি, বোধহয় শুধু তুমি সে একই নেই।

মাঝেমাঝে ভাবি বেঁচে থাকে কি করব আমি আর? এর চেয়ে ভাল আমি মরে যাই। পরে আবার ভাবি, মরব কি করে? বেঁচেই বা আছি কোথায় আমি? সেই প্রশ্নের উত্তর পাইনা আমি।

হ্যাঁ, তোমাকে দরকার আমার, তোমাকে দরকার! কারণ তোমার শরীরের চাইতেও বেশি কিছুর প্রয়োজন আমার, প্রয়োজন তোমার মন।

জানো? তুমি চলে যাবার পরও কিন্তু মনটা বসে ছিলনা, তোমাকে এতও ভালবাসি ভাববার কোন কারণ নেই,আমার মন অনেক জায়গায় আশ্রয় খুঁজেছে, কোথায় আশ্রয় পাইনি সেটাও বলবনা, কিন্তু সে আশ্রয়ে তার পোষায়নি।

তাই মাঝেমাঝে অবাক হই, এভাবে মরে গিয়েও কেউ বেঁচে থাকতে পারে? আয়নায় নিজেকে না দেখলে বিশ্বাস হতনা।

তাই ভাবি আমি বেঁচে আছি কেন? এভাবে মরে গিয়ে?

তুমি আবার আমার এ চিঠিকে সুইসাইড নোট ভেবে ভুল করে বসনা, বিষ খাবনা আমি, যে বিষ তুমি দিয়ে গেছ তাতেই মারা যাব জানি একদিন আমি............

তুমি আবার এ ও ভেবে বসনা যেন, তোমাকে হারিয়ে আমি মদ-গাঁজার আসর বসিয়ে বসে আছি, নেশা আমাকে দিয়ে আর হয়না। হবে কি করে? যে নেশা তুমি ধরিয়ে গেছ তার ওপরে কি আর নেশা আছে?

এ ও ভাবার কোন কারণ নেই তোমার জন্যে আমি আর্টেসেলের দুঃখ বিলাস, কিংবা নতুন ক্রেজ এশেজের কি আর হবে গান শুনে শুনে সিগারেট হাতে নিয়ে দিবারাত্রি যাপণ করছি। সুরগুলো তুমি চলে যাবার পর থেকে কেমন যেন কেটে গেছে, যে গানই শুনি আর ভাল লাগেনা............

আমি না আমার জীবনে দুবার কেঁদেছিলাম, একবার আমার দাদু মারা যাবার পর, তিনি আমাকে অনেক ভালবাসতেন জানো? তিনি যখন হসপিটালে ছিলেন কেবল নাকি আমার নাম ধরে ডাকতেন কাকে যেন, সে সময় তিনি প্রায় সময় অচেতনই থাকতেন, কাউকে নাকি চিনতে পারতেন না, অথচ কী কাণ্ড দেখ! আমি যখন উনাকে দেখতে গেলাম, উনি ঠিকই আমাকে চিনতে পারল!

আরেকবার আমি হাঁপুস নয়নে কেঁদেছিলাম তুমি চলে যাবার পর, কি নিষ্ঠুর তুমি একবার ফিরেও তাকালেনা। চলে গেলে তো গেলেই, একটা ম্যাসেজ নেই, ফোন নেই, ফেসবুকে ম্যাসেজের পর ম্যাসেজ দেই, কোন রিপ্লাই নেই! এত কি অপরাধ ছিল আমার? নিজের ওপর আজকাল ঘেন্না হয় আমার। নিশ্চই আমার কোন দোষ ছিল, নাহয় তুমি এভাবে চলে যেতেনা। আমি তোমাকে আটকাতে পারলামনা কেন? একবার চেষ্টা পর্যন্ত করলামনা।

জানি আমাকে ছেঁড়ে চলে যাবার সময় তোমার একটু কষ্ট হয়নি, কষ্ট হবে কি করে? ব্লাড ক্যান্সারে ভুগে ভুগে শেষ পর্যন্ত নিজেই তো কষ্ট করে গেল। আমার জন্যে কষ্ট হবার সুযোগটাই যে ছিলনা।

ইতি,
কেউ নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১:১৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×