"Perchance you who pronounce my
sentence are in greater fear than I who
receive it."
দ্বীপ্ত কন্ঠে বলল লোকটি।বিচারকরা কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকল।তারপর শুরু হল বিচারকার্য। লোকটার শাস্তি নির্ধারিত হল।তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হবে।এমন নিষ্ঠুর শাস্তি লোকটার মুখে বিষাদের ছায়া ফেলল না।
এটি ছিল ১৬০০ সালের ১৬ই জানুয়ারির ঘটনা।এরপরের কিছুদিনের মধ্যেই লোকটার শাস্তি কার্যকার করা হয়।
লোকটার নাম জিওর্দানো ব্রুনো।তার অপরাধ কোপার্নিকাসের তত্ব সমর্থন করা।পৃথিবী যে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এই বক্তব্যের সমর্থনে লেখা।মহাবিশ্বকে অসীম বলে দাবি করা।তৎকালীন ধর্ম বেনিয়াদের আঁতে ক্রমাগত ঘা লাগাচ্ছিল ব্রুনো।
এমন কর্মকান্ড সে সসময়কার ধর্মীয় যাজকরা সহ্য করতে পারেনি।তাকে ধর্মবিরোধী মতবাদের জন্য দন্ডিত করা হয়।সত্য কথা বলার দায়ে এরকম নির্মম পরিণত হয় ব্রুনোর।
পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণের কথা বলেছিল এক গণিতের অধ্যাপক। নিজে একটা টেলিস্কোপ বানিয়ে সারা দিন-রাত আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকত।ক্রমেই বুঝতে পারে সৌরজগতের কেন্দ্র পৃথিবী নয়,সূর্য।প্রচার করতে থাকে এই তথ্য। কোপার্নিকাসের তত্ব সমর্থন করে।
তাকেও ছাড়েনি ধর্ম যাজকরা।বৃদ্ধ বয়সে তাকে রোমে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।হাটু মুড়ে হাত জোর করে মাফ চাওয়ানো হয়।স্বীকার করানো হয় যে তার মতবাদ ভুল।কিন্তু আজ পর্যন্ত পৃথিবীর তার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করা থামায় নাই।
এভাবে যুগে যুগে যুক্তিবাদীদের কম হেনস্তা করা হয়নি।ধর্ম,সমাজের রাজনীতিতে কম নাকাল করা হয়নি।হুমায়ুন আজাদ,ব্লগার রাজীব কে হত্যা করা হয়েছে।হয়েছে হাসান আজিজুল হকের উপর হামলা হয়েছিল।তাতে তো চিন্তা থেমে যায়নি,কলম থেমে যায়নি,যুক্তি মরে যায়নি।এবারও থামবে না।
কিন্তু সেসব মানুষের কথা মনে হল বিস্মিত হই,যাদের চিন্তা আজ পর্যন্ত স্বাধীনতা পায়নি।বাংলাদেশ স্বাধীন ৪৩ বছর ধরে।আর বাংলা স্বাধীন আরও আগে থেকে।কোনো রাজা,মহারাজা বাংলাকে পুরোপুরি বশে আনতে পারেনি।সেই বাংলার স্বাধীন মানুষ আজ কই?নাকি সবাই শুধু খোলসে স্বাধীন।তাদের চিন্তা আজও শেকল বাধা।
আসলে মানুষের চেয়ে মানুষের চামড়া ক্ষতিকারক।
ঐ পরাধীন মনের মানুষদের শুধু এটুকু বলতে চাই,কলম কখনো থামে নাই,থামবেও না।
কত চাপাতি চালাতে পার দেখি।চাপাতি জোর একসময় ক্ষীণ হয়ে যায়,কিন্তু কলম কখনও হাঁপায় না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১:২৭